শুক্রবার, ৬ মার্চ, ২০১৫ ০০:০০ টা

দূষণের কবলে রাজধানী

মেগা সিটি ঢাকা পরিবেশ দূষণের নির্দয় শিকারে পরিণত হয়েছে। রাজধানীর বায়ু দূষণের মাত্রা সহনীয় পর্যায়ের চেয়ে পাঁচগুণ বেশি। নদ-নদীতে দূষণের মাত্রা এতটাই বেশি যে, তাতে মাছসহ জলজ প্রাণীর টিকে থাকাই দায় হয়ে পড়েছে। অপরিচ্ছন্ন নগরী হিসেবে নেতিবাচক ভাবমূর্তির অধিকারী হতে চলেছে দেড় কোটি মানুষের এই মহানগরী। অভিজাত এলাকা এমনকি কূটনৈতিক পাড়ার সনি্নকটেও রাস্তার পাশে দেখা যায় ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়। দূষণের ক্ষেত্রে সবকিছুকে টেক্কা দিতে চলেছে বায়ুদূষণের বিষয়টি। গবেষণা সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, ঢাকায় অন্য যে কোনো দূষণের চেয়ে বায়ুদূষণের মাত্রা বেশি। গ্লোবাল এনভায়রনমেন্ট ইনডেক্স-২০১৪ অনুযায়ী, বায়ুদূষণের দিক দিয়ে সবচেয়ে নিকৃষ্ট বাংলাদেশ। রাজধানী ঢাকা নিকৃষ্টতার দিক থেকে এগিয়ে। বাতাসে কার্বনের গ্রহণযোগ্য সর্বোচ্চ পরিমাণ যেখানে ২৯০-৩০০ পিপিএম মাত্রা হওয়ার কথা, সেখানে ঢাকার মাত্রা ৩৫০ পিপিএম। ঢাকার চারপাশের ইটভাটা, পুরনো মোটরগাড়ি থেকে নির্গত বিষাক্ত কালো ধোঁয়া, শিল্প-কারখানার ধোঁয়ায় বায়ুদূষণের মাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। বায়ুদূষণের কারণে মানুষ প্রতিনিয়ত শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি, ফুসফুস ক্যান্সার ইত্যাদি রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। নগরীর বিভিন্ন ব্যস্ত সড়কে ফ্লাইওভার নির্মাণের কাজ দীর্ঘদিন ধরে চলায় আশপাশের এলাকা সবসময় ধূলিধূসর থাকছে। পরিবেশবাদীদের মতে, রাজধানীর বায়ুদূষণের প্রধান কারণ ধুলাবালি। পৃথিবীর অন্য দেশগুলোতে উন্নয়ন কাজের সময় দূষণ রোধের উদ্যোগ নেওয়া হলেও, আমাদের দেশে সেটি উপেক্ষিত হয়। এসব বিষয়ে সিটি করপোরেশন ও সংশ্লিষ্টদের কোনো উদ্যোগ নিতেও দেখা যায় না। সভ্য সমাজে পরিবেশ দূষণকে সভ্যতা পরিপন্থী বলে মনে করা হয়। পরিবেশ দূষণের বিরুদ্ধে সচেতন হওয়ার তাগিদ দেয় প্রতিটি ধর্ম। ইসলামে পবিত্র-পরিচ্ছন্নতাকে ইমানের অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু শতকরা ৯০ শতাংশেরও বেশি মুসলমানের বসবাস যে ঢাকা মহানগরীতে, এখানকার অপরিচ্ছন্ন অবস্থা যে কোনো বিবেচনায় দুর্ভাগ্যজনক। মসজিদের নগরী হিসেবে অভিহিত ঢাকা মহানগরীর ভাবমূর্তিতে তা নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। অস্তিত্বের স্বার্থে দূষণ রোধে সরকার, সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে সচেতন হতে হবে এমনটিই প্রত্যাশিত।

 

সর্বশেষ খবর