দেশে বেকারত্বের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টিতে অবদান রাখছে বেকারত্ব বৃদ্ধির ঘটনা। এটি বাস্তবতার যেমন এক পিঠ তেমন অন্য পিঠে আছে দক্ষ জনশক্তির ভয়াবহ অভাব। যে সর্বনাশা অভাবের কারণে বাংলাদেশ উন্নয়নের কাঙ্ক্ষিত পথে চলতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। দক্ষ জনবলের অভাবে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিকূলতায় ভুগছেন ব্যবসায়ী-শিল্পপতিরা। দেশের ৬৫ শতাংশ মানুষের বয়স ৩৫ বছরের নিচে হলেও চাহিদা অনুযায়ী যোগ্য মানবসম্পদ খুঁজে পাচ্ছেন না তারা। ফলে প্রচুর বিদেশি নাগরিক বাংলাদেশের শ্রমবাজারে চাকরি করার সুযোগ পাচ্ছেন। এই বিদেশি শ্রমিকরা তাদের বেতন-ভাতা হিসেবে প্রতিবছর প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা বা ছয় বিলিয়ন মার্কিন ডলার বাংলাদেশ থেকে নিয়ে যাচ্ছেন। ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি এবং যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক লিডারশিপ ইন মোশন গ্লোবাল যৌথভাবে আয়োজিত 'ব্যবসায় সংকটকালীন সুযোগ' শীর্ষক কর্মশালায় এ তথ্য উঠে এসেছে। কর্মশালায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ৬৫ শতাংশ মানুষের বয়স ৩৫ বছর হলেও দেশের শিল্পোদ্যোক্তারা দক্ষ মানবসম্পদের অভাবে ভুগছেন। এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য দেশের জনগণকে দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত করতে আরও বেশি প্রশিক্ষণ কর্মসূচির ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন তারা। বলেছেন, বাংলাদেশের শিক্ষা কার্যক্রম শেষ করা শিক্ষার্থীদের শিক্ষানবিস হিসেবে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে কাজ করার সুযোগ দেওয়া উচিত। এতে দক্ষ জনবলের অভাব কিছুটা হলেও কমবে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, দেশে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার উদ্যোগ সত্যিকার অর্থে কম। শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো তাদের প্রতিষ্ঠানে শিক্ষানবিস হিসেবে তরুণদের কাজ দিলে দক্ষ জনশক্তি গড়ে ওঠার সুযোগ সৃষ্টি হতো। কিন্তু আমাদের দেশে চাকরির বাজারে উদ্যোক্তারা দক্ষদেরই বেশি খোঁজেন। ফলে অদক্ষদের দক্ষ হওয়ার সুযোগ কম ঘটে। দেশকেও পরনির্ভরশীল থাকতে হয়। এ প্রবণতার অবসান হওয়া উচিত।