শুক্রবার, ৮ মে, ২০১৫ ০০:০০ টা

ইসলামের দাওয়াত

মাওলানা সেলিম হোসাইন আজাদী

ইসলামের দাওয়াত

মহাগ্রন্থ আল-কোরআনে আল্লাহতায়ালা বলেন, তুমি মানুষকে তোমার প্রতিপালকের দিকে আহ্বান কর হেকমত ও সদুপদেশ দ্বারা এবং তাদের সঙ্গে সর্বোত্তম যুক্তি পেশের মাধ্যমে তর্ক কর, (সূরা নাহল আয়াত-১২৫) অন্যত্র বলেন, তোমাদের মধ্যে এমন দল হবে যারা কল্যাণের দিকে মানুষকে আহ্বান করবে, সৎ কাজের আদেশ করবে, আর অসৎ কাজের নিষেধ করবে। আর এরাই মূলত সফলকাম। (সূরা আল-ইমরান আয়াত-১০৪) আল্লাহতায়ালা দাওয়াতের ব্যাপারে কোরআনুল করিমের বহু আয়াতে আলোকপাত করেছেন। সূরা আল ইমরানের ১১০ নম্বর আয়াতে বলেছেন, তোমরাই শ্রেষ্ঠ জাতি, তোমাদের বের করা হয়েছে মানবকল্যাণের জন্যই। তোমরা মানুষকে সৎ কাজের নির্দেশ দেবে আর অসৎ কাজে নিষেধ করবে। আর রসুল (সা.) বিদায় হজের ভাষণে বলেছেন, একটি আয়াত হলেও তা আমার পক্ষ থেকে অন্যের কাছে পৌঁছে দাও। (তিরমিযি) আর রসুল (সা.) যেভাবে সে যুগের সর্বোচ্চ প্রচার মাধ্যম ব্যবহার করেছিলেন, তেমনি বর্তমানে আমাদের এ যুগের সর্বোচ্চ প্রচার মাধ্যমের মাধ্যমে ইসলামের সুমহান আদর্শ মানুষের কাছে তুলে ধরতে পারি। বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রায় পৃথিবী আজ গ্লোবাল ভিলেজে পরিণত হয়েছে। বিশ্ব আজ মানুষের হাতের মুঠোয়। অনায়াসে এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত পর্যন্ত যে কোনো খবর নেওয়া যাচ্ছে। বিজ্ঞানের অগ্রগতির কারণে মানুষের কর্মব্যস্ততা বেড়েছে, মানুষ এখন অল্প সময়ে অনেক কাজ করতে পারছে। মানুষ এখন সবকিছু সুন্দর ও গোছালোভাবে কাছে পেতে চায়। যে কাজটি এক ঘণ্টায় করা যায় তা নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করার মানসিকতা বর্তমান প্রজন্মের নেই। এ অবস্থায় প্রযুক্তির ব্যবহার করে ইসলামকে তরুণ প্রজন্মের সামনে কী করে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা যায় তা নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। আজ যেখানে ঘরে বসে পৃথিবীর সবকিছুর খবর নেওয়া সম্ভব, সেখানে ইচ্ছা করলেও ইসলাম সম্পর্কে বিশদভাবে জানা যাচ্ছে না। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য ইসলামের বহুমুখী দাওয়াত ও তাবলিগের ব্যবস্থা একান্তভাবেই জরুরি। তাছাড়া আজকের প্রযুক্তির সবকিছুই যেমন গ্রহণীয় নয়, তেমনি সবকিছুই বর্জনীয়ও নয়। রসুলে করিম (সা.) যে যুগে, যে পরিবেশে বড় হয়েছিলেন, সে যুগে যত প্রকার প্রচার পদ্ধতি ছিল তার সর্বোচ্চ প্রয়োগ তিনি করেছিলেন তাঁর নবুওয়তি দাওয়াত প্রদানের ক্ষেত্রে। সে যুগের সর্বোচ্চ প্রচার ছিল কোনো বিষয়ে মানুষকে সতর্ক করতে হলে পাহাড়ে আরোহণ করে দাওয়াত দেওয়া। আর রসুলে করিম (সা.) সাফা পাহাড়ে উঠে সেই দায়িত্বই পালন করেছিলেন। বর্তমানে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির কল্যাণে পাশ্চত্যের অনেকেই ইসলাম সম্পর্কে জানতে সক্ষম হচ্ছে এবং অনেকেই ইসলাম গ্রহণ করছে। এর মাধ্যমে আরও ব্যাপক দাওয়াতি কাজের বিপুল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তাই এসব মাধ্যমে ইসলামী ব্যক্তিত্ব জগতের উজ্জ্বল নক্ষত্রদের আরও বেশি বেশি অংশগ্রহণ থাকতে হবে।

লেখক : বিশিষ্ট মোফাচ্ছেরে কোরআন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব

ই-মেইল : selimazadi.com

সর্বশেষ খবর