বুধবার, ২৭ মে, ২০১৫ ০০:০০ টা
ইতিহাস

শাসনতান্ত্রিক সংস্কার

'অন্য যে কোনো গুণ অপেক্ষা শাসনকার্যে যোগ্যতাই আলাউদ্দীন খলজিকে পূর্ববর্তী শাসকদের অপেক্ষা অধিকতর উচ্চ মর্যাদার অধিকার দান করেছিল। আলাউদ্দীন খলজি একজন বিচক্ষণ ও দূরদর্শী রাজনীতিক ছিলেন। তিনি সাম্রাজ্যকে সুদৃঢ় করতে সুষ্ঠু ও কার্যকর শাসনব্যবস্থা প্রবর্তনের প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করতে পেরেছিলেন। সিংহাসনে আরোহণের পরেই আলাউদ্দীন খলজিকে কয়েকটি বিদ্রোহের মোকাবিলা করতে হয়, যেমন- হাজী মওলার বিদ্রোহ, নও-মুসলমানদের বিরোধিতা, আকত খানের দেশদ্রোহিতা এবং ভ্রাতুষ্পুত্র ওমর খান ও মংগু খানের বিদ্রোহ। প্রশাসনিক দুর্বলতাই এসব বিদ্রোহের কারণ বলে তিনি মনে করেন। তাই প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে সুদৃঢ় করার জন্য আলাউদ্দীন খলজি বিদ্রোহের মূলোৎপাটনের প্রতি গুরুত্বারোপ করেন। তিনি পরামর্শ ও অনুসন্ধানের দ্বারা বিদ্রোহের চারটি কারণ নির্ণয় করেন : (১) রাষ্ট্রীয় ব্যাপারে সুলতানের অমনোযোগিতা; (২) মদ্যপান; (৩) ওমরাহদের পারস্পরিক ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক, মৈত্রী ও ঘন ঘন ঘরোয়া বৈঠক, যা সুলতানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের সংঘবদ্ধ করে; (৪) সম্পদের প্রাচুর্য, যা চক্রান্ত ও বিদ্রোহে ইন্ধন জোগায়। বিদ্রোহের কারণ নির্ণয় করেই তিনি ক্ষান্ত ছিলেন না; বিদ্রোহের সম্ভাবনা প্রতিরোধের জন্য তিনি অত্যন্ত কঠোরতার সঙ্গে নতুন শাসননীতি বলবৎ করেন। বিত্তবানদের প্রতি সুলতান সর্বাগ্রে দৃষ্টি দেন। বিত্তই বিরোধ ও বিদ্রোহের প্ররোচনা জোগায়। তাই সুলতান বিত্তশালীদের কাছ থেকে অর্থসম্পদ অপসারণের জন্য কতিপয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। তিনি তাদের ব্যক্তিগত মালিকানার উচ্ছেদ সাধন করেন।

সর্বশেষ খবর