শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ৪ জুন, ২০১৫ ০০:০০ টা

ওষুধ চোরাচালান

জনস্বাস্থ্য ও অর্থনীতির জন্য হুমকি

বিদেশ থেকে আসা ওষুধের চোরাচালান দেশের জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে। অর্থনীতির জন্য বয়ে আনছে বিসংবাদ। বিমানবন্দরে কর্মরত দুর্নীতি বিশারদ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশে প্রতি বছর কয়েকশ' কোটি টাকার বিদেশি ওষুধ দেশে চোরাচালানের মাধ্যমে আসছে। এর একটি ক্ষুদ্র অংশ কখনো কখনো ধরা পড়লেও তার পরিমাণ কোনোভাবেই এক-শতাংশের বেশি নয়। স্থলভাগের চোরাচালানিদের মাধ্যমে আসছে হরেক রকমের বিদেশি ওষুধ। বিশেষত ভারত, পাকিস্তান, মিয়ানমার, দুবাই, সৌদি আরব ও থাইল্যান্ড থেকে নিষিদ্ধ ওষুধ দেশে আসছে। রাজধানীর মিটফোর্ডের ওষুধের পাইকারি বাজারসহ দেশের ওষুধের বাজারগুলোতে তা বিক্রি হচ্ছে। ওষুধ নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ অনুযায়ী, ওষুধ প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া কোনো প্রকার ওষুধ আমদানি, মজুদ ও বিক্রি সম্পূর্ণ নিষেধ। বিষয়টি উপেক্ষা করেই সংঘবদ্ধ চক্র নিয়ে আসে আমদানি নিষিদ্ধ কিংবা দুষ্প্রাপ্য দামি ওষুধ। জনবল সংকটের অজুহাতে ওষুধ প্রশাসন এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারছে না। বৈধ অনুমতি নিয়ে যে পরিমাণ বিদেশি ওষুধ আমদানি হয় তার চেয়ে বেশি আসে চোরাচালান হয়ে। চোরাইপথে আসা ওষুধের মধ্যে আমদানি নিষিদ্ধ ওষুধই বেশি। ওষুধ বাজারের সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে তা গোপনে বিক্রি হয় সারা দেশে। বিমানবন্দরসহ বিভিন্ন পথে চোরাই হয়ে আসা ওষুধের মান ও কার্যকারিতা নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন। বিমানবন্দরে এ পর্যন্ত যেসব ওষুধ আটক হয়েছে সেগুলোর মধ্যে বেশির ভাগই দুষ্প্রাপ্য ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ও যৌন উত্তেজক উচ্চমূল্যের ওষুধ। গত এক মাসে শুধু হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে আসা প্রায় ৩৫ কোটি টাকার অবৈধ ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী আটক করেছে কাস্টমস ও শুল্ক গোয়েন্দা কর্মীরা। চোরাচালান ঠেকাতে সরকার নিষ্ক্রিয় কেন তা জানতে চেয়ে গত ১৮ মে হাইকোর্ট একটি রুলও জারি করেছেন। রুলে ওষুধ চোরাচালান, ব্যবহৃত সুচ-সিরিঞ্জ ও অপারেশনে ব্যবহৃত সরঞ্জাম পুনঃব্যবহার বন্ধে সরকারের নিষ্ক্রিয়তাকে কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে। এ রুল ওষুধ চোরাচালান বন্ধে যে তাগিদ সৃষ্টি করেছে, তা সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে সক্রিয় করবে আমরা এমনটিই দেখতে চাই।

সর্বশেষ খবর