সোমবার, ২৭ জুলাই, ২০১৫ ০০:০০ টা

হলমার্ক আত্মসাৎ

জনগণের টাকা রক্ষার দায় যেন কারোরই নেই

জালিয়াতির মাধ্যমে সোনালী ব্যাংক থেকে হলমার্ক গ্রুপের আত্মসাৎ করা প্রায় ২৭শ' কোটি টাকা ফেরত পাওয়া অনিশ্চিত হয়ে উঠেছে। ২০১০ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত মাত্র তিন বছরে আরব্য রজনীর থিপ অব বাগদাদের যোগ্য উত্তরসূরি সোনালী ব্যাংকের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের যোগসাজশে হলমার্ক এ টাকা আত্মসাৎ করে। ব্যাংক থেকে মাত্র ৫ হাজার টাকা ঋণ পেতে সব কিছু বন্ধক রেখেও যেখানে দিনের পর দিন ঘুরতে হয় সেখানে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা জালিয়াতদের হাতে ঋণ হিসেবে দেওয়া হয়েছে কোনো বন্ধক ছাড়াই। অভিযোগ রয়েছে, এই জালিয়াতির এক বড় অংশ গেছে সোনালী ব্যাংকের কর্মচারী, কর্মকর্তা, ট্রেড ইউনিয়ন ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পকেটে। বিভীষণ চরিত্রের রাজনৈতিক নেতারাও পেয়েছে তার হিস্যা। সংবাদ মাধ্যমে বিষয়টি ফাঁস হয়ে পড়ায় ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চালায় এ জালিয়াতির সঙ্গে যুক্ত সোনালী ব্যাংকের সংশ্লিষ্টরা। টাকা ফেরত পেতে মামলাসহ অন্যান্য উদ্যোগ নেওয়া হলেও তার বেশির ভাগই অন্তঃসারশূন্য। হলমার্কের কর্ণধার তানভীর মাহমুদকে গ্রেফতার করে জেলে আটকে রাখা ছাড়া আর কোনো সাফল্য নেই বললেই চলে। প্রাথমিক পর্যায়ে হলমার্কের কাছ থেকে ৪১০ কোটি টাকা ফেরত পাওয়া গেলেও এ জালিয়াত গ্রুপের চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলাম জামিনে মুক্তি পেয়ে টাকা ফেরত দেওয়ার বদলে আত্মসাৎ পাকাপোক্ত করতেই যেন উঠেপড়ে লেগেছেন। এ কাজে তাদের সহায়তা করছে সোনালী ব্যাংকসহ বিভিন্ন সংস্থার সহযোগীরা। হলমার্কের বিরুদ্ধে দুই ডজনের বেশি মামলা করা হলেও তার প্রায় সবই অন্তঃসারশূন্য। সোনালী ব্যাংকের চোরদের মাত্র একজন ছাড়া অন্য কাউকে গ্রেফতারের উদ্যোগ নেই। জালিয়াতির মূল হোতা তানভীর মাহমুদের স্ত্রী হলমার্ক গ্রুপের চেয়ারম্যান জামিনে মুক্তি পেয়ে কীভাবে জালিয়াতির দায় এড়ানো যায় সে তদ্বিরে উঠেপড়ে লেগেছেন। জালিয়াতদের কাছে দেশের আইনকানুন, বিচার ব্যবস্থা সব কিছুই যেন অকার্যকর হয়ে পড়েছে। ব্যাংকের টাকা মানেই জনগণের টাকা। সে টাকা রক্ষার দায় যেন কারোর নেই।

এ অবস্থা কাম্য কিনা সবাইকেই ভাবতে হবে।

 

সর্বশেষ খবর