শনিবার, ১৫ আগস্ট, ২০১৫ ০০:০০ টা

কেউ কথা রাখেনি

বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবসার চালচিত্র

শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বলেছেন, বেশির ভাগ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় তাদের ওয়াদা রাখেনি। বিভিন্ন শর্তে সর্বশেষ যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল তাদের মধ্যে দু-একটি ছাড়া কেউই শর্ত পূরণ করেনি। এমনকি কেউ কেউ শর্ত পূরণের আগ্রহও দেখায়নি। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে কিছুতেই যে শৃঙ্খলার লাগাম পরানো যাচ্ছে না শিক্ষামন্ত্রীর কথায় তা আবারও প্রমাণিত হলো। স্থায়ী ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠার শর্তে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম সাময়িকভাবে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে চালানোর সুযোগ দেওয়া হলেও বেশির ভাগ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কথা রাখেনি। দেশের মোট ৮৩টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে এযাবৎ মাত্র ১৭টি ক্যাম্পাস স্থাপনে সক্ষম হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় নিজস্ব ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার জন্য কয়েক দফা সময় নির্ধারণ করে দিলেও তা মানার গরজ অনুভব করছে না 'বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়' নামের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো। বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার নিয়মনীতি, প্রশাসনিক কাঠামো, পড়াশোনার মান কোনো কিছুই মানা হচ্ছে না এমন অভিযোগও প্রবল। দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দেখভাল করার দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের। কিন্তু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষমতা না থাকায় আইনি লড়াইয়েও তারা অসহায় অবস্থায় পড়েছেন। বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে ইউজিসি কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে মামলা করলেও তাতে কোনো কাজ হচ্ছে না। ইউজিসিকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে হাইকোর্ট থেকে স্থগিতাদেশ নিয়ে অভিযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। দেশের শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণে বেসরকারি পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। এর ফলে লাখ লাখ শিক্ষার্থীর জন্য উচ্চতর ডিগ্রির সার্টিফিকেট নিশ্চিত হলেও তারা প্রকৃত অর্থে কতটা উচ্চশিক্ষিত হচ্ছেন তা নিশ্চিত নয়। টাকার বিনিময়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সার্টিফিকেট বিতরণের কারখানায় পরিণত হয়েছে এমন অভিযোগও ওপেন সিক্রেট। এ অকাম্য অবস্থার অবসানে সরকার কার্যকর ব্যবস্থা নেবে এমনটিই কাম্য।

সর্বশেষ খবর