সোমবার, ২৪ আগস্ট, ২০১৫ ০০:০০ টা
ধর্ম

সরল জীবনযাপনের শিক্ষা দেয় ইসলাম

মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুল খালেক

সরল জীবনযাপনের শিক্ষা দেয় ইসলাম

মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর সরলতাকে ইমানের অংশ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি অনুসারীদের সহজ-সরল জীবনযাপনের শিক্ষা দিয়েছেন। আবু উমামা (রা.) বর্ণিত হাদিসে মহানবী এরশাদ করেছেন- 'নিঃসন্দেহে সরলতা ইমানের অংশ।'

ইসলামী শরিয়ত অনুযায়ী আদম ও হাওয়া থেকে সব মানুষের সৃষ্টি। যে কারণে এক মানুষের সঙ্গে অপর মানুষের ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ককে ইসলাম গুরুত্ব দিয়েছে। ইসলাম মনে করে, প্রতিটি মানুষেরই উচিত অপর মানুষের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া। এমনকি যারা খাদেম তাদের সঙ্গেও ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা। নবী (সা.) নিজেও তার খাদেমদের সঙ্গে দরদি আচরণ করতেন। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (সা.) বলেছেন- যে ব্যক্তি নিজের খাদেমকে সঙ্গে নিয়ে আহার করেন, গাধার পিঠে আরোহণ করে বাজারে যান এবং বাঁধে ও তার দুধ দোহন করে সে অহঙ্কারী নয়। ইসলাম প্রতিটি মানুষকে স্বাবলম্বী হওয়ার তাগিদ দিয়েছে। নিজের কাজ নিজে করা যে উত্তম এ শিক্ষা দিয়েছেন তিনি এবং তার সাহাবিরা। এমনকি রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রিয় জামাতা এবং ইসলামের চতুর্থ খলিফা হজরত আলী (রা.) নিজের সাংসারিক কাজের এক বড় অংশ নিজে করতেন। সালেহ (রা.)-এর দাদি থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, আমি দেখলাম আলী (রা.) এক দিরহামের বিনিময়ে কিছু খেজুর কিনলেন এবং তা চাদরে পেঁচিয়ে নিজেই বহন করে নিয়ে যাচ্ছেন। সালেহর দাদি তাকে বললেন অথবা অন্য কেউ তাকে বলল, হে আমীরুল মুমিনীন! বোঝাটি আমাকে বহন করতে দিন। তিনি বলেন, না, সন্তানদের পিতাই বোঝা বহনের অধিক উপযুক্ত। (আদাবুল মুফরাদ) নিজের কাজ নিজে করার মধ্যে কোনো গ্লানি নেই। বরং প্রতিটি মানুষের উচিত সবক্ষেত্রে স্বাবলম্বী হওয়ার দৃষ্টান্ত রাখা। প্রিয় নবী (সা.) শত ব্যস্ততার মধ্যেও সাংসারিক বিভিন্ন কাজে পরিবারের সদস্যদের সহায়তা করতেন। তিনি নিজে ব্যবসা করতেন। সামাজিক কাজেও কায়িক শ্রম দিয়েছেন। মহিলা তাবিঈ আমরাহ (রা.) থেকে বর্ণিত- আয়েশা (রা.)-কে জিজ্ঞাসা করা হলো, নবী (সা.) তার বাড়িতে কী কী কাজ করতেন? তিনি বললেন, তিনিও একজন মানুষ ছিলেন। তিনি তার কাপড়ে আটকে যাওয়া চোরাকাঁটা বাছতেন এবং বকরির দুধ দোহন করতেন। (আদাবুল মুফরাদ)

লেখক : ইসলামী গবেষক।

 

 

সর্বশেষ খবর