রাজধানীতে ডেঙ্গুর প্রকোপ এ বছর অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। চলতি বছর এ যাবৎ রাজধানীতে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়েছে ২ হাজার ৩০০ জনেরও বেশি। ভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা ১০ জন। গত ২০ বছরে রাজধানীতে কখনো ১ হাজার ৭শ’র বেশি রোগী ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়নি। চলতি বছর এ জ্বরে আরও লোকের আক্রান্ত হওয়া এবং মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। রাজধানীতে সরকারিভাবে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত এবং মৃত্যুর যে তথ্য দেওয়া হচ্ছে বাস্তবের সঙ্গে তার ব্যাপক পার্থক্য থাকতে পারে বলে ধারণা করা হয়। কারণ অধিকাংশ হাসপাতালে ডেঙ্গুর জীবাণু শনাক্তের কার্যকর ব্যবস্থা নেই। ফলে টাইফয়েড ও ডেঙ্গুর পার্থক্য নির্ণয়ে প্রায়ই চিকিৎসকদের হিমশিম খেতে হয়। চিকিৎসকরা বলছেন, বৃষ্টি ও তাপমাত্রা বৃদ্ধি ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়াতে ভূমিকা রাখে। থেমে থেমে বৃষ্টির কারণে রাজধানীর যেখানে সেখানে পানি জমছে। স্বচ্ছ পানিতে ডিম পাড়ছে ডেঙ্গুর ভাইরাস বহনকারী এডিস মশা। রাজধানীতে ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি এবং এ রোগে আক্রান্তের সংখ্যা গত ২০ বছরের সব রেকর্ড ভঙ্গের ঘটনা নির্বাচিত দুই সিটি করপোরেশনের জন্য কলঙ্কের তিলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। অনির্বাচিত সিটি করপোরেশনের আমলে অভিযোগ ছিল মশা নিধনে রাজধানীর দুটি স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান গাফিলতির পরিচয় দিচ্ছে। এ বছর নির্বাচিত সিটি করপোরেশনের আমলে এডিস মশাবাহী রোগ ডেঙ্গুজ্বরের প্রকোপ অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করায় প্রমাণিত হয়েছে নির্বাচিত সিটি করপোরেশনও এ ব্যাপারে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে পারেনি। মশা নিধনে বরাদ্দ বাড়লেও তা যে জনদুর্ভোগ কমাতে পারেনি ডেঙ্গুর প্রকোপ সে বাস্তবতাই তুলে ধরেছে। ডেঙ্গু একটি ভাইরাসজনিত জ্বর। অন্য ভাইরাসজনিত জ্বরের মতো ডেঙ্গুর সরাসরি প্রতিষেধক নেই, টিকাও নেই। লক্ষণ অনুযায়ী এর চিকিৎসা করা হয়। মশা নিধন এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধি পেলে ডেঙ্গুর প্রকোপ শূন্যের পর্যায়ে নিয়ে আসা সম্ভব। বর্ষা মৌসুমে কোথাও যাতে স্বচ্ছ পানি না জমে সেদিকে নজর রাখতে হবে। কেউ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে যথাদ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।