রবিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

তরুণ জনগোষ্ঠী এবং উৎপাদনশীলতা

কালাম আজাদ

তরুণ জনগোষ্ঠী এবং উৎপাদনশীলতা

বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশ তরুণ জনগোষ্ঠী। আগামী ২৫ থেকে ৩০ বছর তরুণরাই জনসংখ্যার বড় অংশ হিসেবে উৎপাদনশীলতায় ভূমিকা পালন করবে। তারপর দেখা দেবে বয়স্কদের সংখ্যাধিক্য।  বাংলাদেশকে সামনের দিকে জোর কদমে এগোতে হলে তরুণ জনগোষ্ঠীকে পরিকল্পিতভাবে ব্যবহার করতে হবে। জনসংখ্যা ও উন্নয়ন বিশেষজ্ঞদের মতে, চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া তরুণ জনগোষ্ঠীর ওপর ভর করে উন্নয়নের ক্ষেত্রে দ্রুত এগিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে। তাদের মতে, কোনো দেশের জনসংখ্যার মধ্যে তরুণদের সংখ্যাধিক্যকে ‘জনসংখ্যা সুবিধা’ হিসেবে দেখা হয়। এ সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে জাতি দ্রুত এগিয়ে যেতে সক্ষম হয়। বাংলাদেশ জনসংখ্যার ক্ষেত্রে যে সোনালি অধ্যায়ে পা দিয়েছে তা যে কোনো জাতির জন্য কাক্সিক্ষত। দেশের জনসংখ্যার ৬৫ ভাগ উপার্জনক্ষম অর্থাৎ ১৫ থেকে ৬০ বছর বয়সী। ভোক্তার চেয়ে উৎপাদক শ্রেণির সংখ্যাধিক্য একটি জাতিকে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সহায়তা করে। স্মর্তব্য, গত বছরের ১৮ নভেম্বর প্রকাশিত ইউএনএফপিএ’র জনসংখ্যা প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা ১৫ কোটি ৮৫ লাখ। এর মধ্যে ১০ থেকে ২৪ বছর বয়সী তরুণদের সংখ্যা ৪ কোটি ৭৬ লাখ। মোট প্রজনন হার ২ দশমিক ২। একই সঙ্গে জন্মহার ও মৃত্যুহার কমছে। জন্ম নিয়ন্ত্রণ পরিস্থিতি মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে আসায় জনসংখ্যা বিস্ফোরণের শঙ্কা কমেছে। ফলে মানুষের গড় আয়ু বাড়ছে। বর্তমানে দেশবাসীর গড় আয়ু ৭০ বছরের কাছাকাছি। এটি ২০২১ সালে ৭০ বছর ৯ মাস, ২০৪১ সালে ৭৪ বছর ৯ মাস এবং ২০৫১ সালে ৭৬ দশমিক ৯ মাস হবে। বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা ২০২১ সালে ১৭ কোটি ৩০ লাখ, ২০৪১ সালে ১৮  কোটি ৯০ লাখ এবং ২০৫১ সালে ১৯ কোটি ৮০ লাখে পরিণত হবে। সরকার ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশে পরিণত করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। জনসংখ্যার এ সুবিধাকে কাজে লাগাতে পারলে সে লক্ষ্য পূরণ করা সম্ভব হবে। অন্যদিকে ব্যর্থ হলে বাংলাদেশকে শক্তিশালী অর্থনৈতিক ভিত্তির ওপর দাঁড় করানো অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে। তাই উপার্জনক্ষম তরুণ জনগোষ্ঠীকে ভালো উপার্জনকারীতে পরিণত করা সরকারের লক্ষ্য বলে বিবেচিত হওয়া উচিত।  এ উদ্দেশ্যে সব জাতীয় পরিকল্পনাকে সাজাতে হবে।

সর্বশেষ খবর