রবিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

শ্রমবাজারে বিসংবাদ

নতুন শ্রমবাজার সৃষ্টিতে উদ্যোগী হতে হবে

দেশের অর্থনীতিতে বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি কর্মজীবীদের পাঠানো রেমিট্যান্স প্রাণভোমরা হিসেবে কাজ করে। গত দুই যুগে বেশ কয়েকবার বিশ্বমন্দা আঘাত হানলেও তা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব রাখতে পারেনি রেমিট্যান্স আয়ের রমরমা অবস্থার কারণে। বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দক্ষিণ এশিয়ার অন্য সব দেশকে পেছনে ফেলে ভারতের পরেই স্থান করে নিতে সক্ষম হয়েছে বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশিদের পাঠানো অর্থের কল্যাণে। সাধারণ চোখে রেমিট্যান্স আয়ের ক্ষেত্রে প্রতিক্রিয়া দেখা না গেলেও এক্ষেত্রে নানা আশঙ্কা কয়েক বছর ধরে দেশের অর্থনীতির ওপর নিঃশ্বাস ফেলছে। বিদেশে দেশের শ্রমবাজার সংকুচিত হয়ে পড়ায় রেমিট্যান্স খাতে বাংলাদেশের ঈর্ষণীয় আয় আগামীতে বজায় থাকবে কিনা সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। দেশের সাধারণ মানুষের কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের শ্রমবাজারগুলো উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করছে। দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এ খাতের অবদান অনস্বীকার্য। বিদেশে কর্মসংস্থান ক্রমাগত হ্রাস পাওয়ায় স্বভাবতই ঝুঁকির মুখে পড়ছে দেশের অর্থনীতি। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার সৌদি আরবে ২০০৮ সাল থেকে জনশক্তি রপ্তানি প্রায় বন্ধ। চলতি মাসের ফেব্রুয়ারিতে এ গুরুত্বপূর্ণ শ্রমবাজার আবার উন্মোচিত হওয়ার কথা থাকলেও এ যাবৎ কোনো সুখবরই সৃষ্টি হয়নি। সৌদি আরব ৪০ হাজার নারী গৃহকর্মী নেওয়ার জন্য চাহিদাপত্র দিলেও মাত্র ১০ হাজার কর্মীকে সে দেশে পাঠানো সম্ভব হয়েছে। পুরুষ কর্মীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ এখনো বন্ধ রয়েছেই বলা চলে। অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার মালয়েশিয়ার অবস্থাও প্রায় অভিন্ন। নতুন শ্রমবাজার সৃষ্টিতেও গত ছয় বছরে দৃষ্টিগ্রাহ্য সাফল্য অর্জিত হয়নি।  এক্ষেত্রে সরকারের আন্তরিকতা ও কর্মতৎপরতার অভাব না থাকলেও বিশ্বমন্দাসহ অন্যান্য কারণে সাফল্য ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে।  দেশের অর্থনীতির স্বার্থে এ খাতের বন্ধ্যা অবস্থার মোচনে সরকারকে আরও সংকল্পবদ্ধ হতে হবে।

 

সর্বশেষ খবর