সোমবার, ১৯ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

তৈরি পোশাকশিল্পের ঝুঁকি

বিদেশিদের আস্থা অর্জনের উদ্যোগ নিন

বাংলাদেশ বিশ্ব পরিসরে নেতৃস্থানীয় পোশাক রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে পরিচিত। দেশের প্রায় ৪০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে জাতীয় অর্থনীতির এই পয়মন্ত খাতটি। দেশের অর্থনীতির প্রাণভোমরা হিসেবে অভিহিত তৈরি পোশাকশিল্প এখন ঝুঁকির মুখে। দুই বিদেশি নাগরিক হত্যার ঘটনায় বিভিন্ন বিদেশি ক্রেতাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশে তাদের পূর্বনির্ধারিত সফর বাতিল করে দিয়েছেন। অনেক ক্রেতাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি কারখানা সফরও বন্ধ রেখেছেন। এমনকি ক্রেতাপ্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকে তাদের প্রতিনিধিদের খুব প্রয়োজন না থাকলে বাংলাদেশে সফর স্থগিত করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বছরের যে সময়টি ক্রয় আদেশ দেওয়ার ‘পিক আওয়ার’ হিসেবে বিবেচিত, সে সময় ক্রেতাদের সফর স্থগিত হওয়া এ খাতে বিপুল ক্ষতির আশঙ্কা সৃষ্টি করেছে। আর দুই মাস বাদেই বড়দিন, এমন গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ক্রেতাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি অশনি সংকেতের নামান্তর। সাম্প্রতিক ঘটনায় কম করে হলেও অর্ধশতাধিক ক্রেতাপ্রতিষ্ঠান উদ্বেগ জানিয়েছে। এর মধ্যে সুইডিশ ক্রেতাপ্রতিষ্ঠান এইচঅ্যান্ডএমও রয়েছে, যাদের কর্মীসংখ্যা প্রায় ৬০০। এর উলে­খযোগ্য সংখ্যকই বিদেশি। সম্প্রতি এইচঅ্যান্ডএমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর বাংলাদেশ সফর করে গেলেও অনিশ্চয়তা কাটেনি। দুই বিদেশি হত্যার ঘটনা বিদেশি ক্রেতাদের কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবস্থায় ফেলেছে। বাংলাদেশকে বহির্বিশ্বে উদার মুসলিম দেশ হিসেবে ভাবা হয়, এমন দেশে পরপর দুজন বিদেশি হত্যার ঘটনায় মাত্রাতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যে সরকারের নিয়ন্ত্রণে তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই। যে পশ্চিমা দেশগুলোর ক্রেতারা নেতিবাচক প্রচারণার শিকার হয়ে বাংলাদেশ সফর বাতিল করছেন তাদের দেশেও সন্ত্রাসী ঘটনার উপদ্রব বাংলাদেশের চেয়ে বেশি।  তবে দুই বিদেশি হত্যার ঘটনা যেহেতু ক্রেতাদের মধ্যে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া ফেলেছে সেহেতু তাদের মধ্যে আস্থা সৃষ্টিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরও যত্নবান হতে হবে। তৈরি পোশাক খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিদেশিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সর্বাত্নক সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।  পাশাপাশি দুই হত্যাকাণ্ডের গ্রন্থি উম্নোচন করে এর সঙ্গে জড়িতদের যথোপযুক্ত সাজা নিশ্চিত করা দরকার।

 

সর্বশেষ খবর