৩০ বছর বয়সে ওসমান তুর্কি সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে রাজত্ব শুরু করেন। দীর্ঘ ৩৮ বছর তিনি দৃঢ়তা ও বিচক্ষণতার সঙ্গে শাসনকার্য পরিচালনা করেন। তাকেই বিশাল অটমান সাম্রাজ্যের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা ও প্রথম সুলতানরূপে অভিহিত করা হয়। অটমান সাম্রাজ্যের সীমানা বৃদ্ধিকল্পে ১২৮৯ খ্রিস্টাব্দে ওসমান সেলজুক সুলতানের কাছ থেকে কারয-ই-হিসার অধিকার করেন। ১২৯০ খ্রিস্টাব্দে সুগুত থেকে রাজধানী ইয়েনি শহরে স্থানান্তর করা হয়। ইয়েনি শহর ব্রুসা ও নাইসিয়ার মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত ছিল এবং রাজধানী পরিবর্তনের ফলে অটমানরা পূর্বদিক অপেক্ষা পশ্চিম দিকে দৃষ্টিপাত করে। বলাবাহুল্য, তারা এ শহরে গ্রিক ও পাশ্চাত্য প্রভাবের আওতায় আসে। তিনি ১৩০০ খ্রিস্টাব্দে পাইজিয়া ও বিথাইনিয়ার অংশবিশেষ অধিকার করেন। ১২৪৬ খ্রিস্টাব্দে সেলজুক সুলতান দ্বিতীয় খসরুর মৃত্যুর পর এশিয়া মাইনরে সেলজুকদের ক্ষমতা লোপ পেতে থাকে এবং সেই সঙ্গে বায়জানটাইন শক্তিও হ্রাস পায়। এই দুটি পরাশক্তির অবসানে আনাতো-লিয়ায় অটমান তুর্কিদের প্রতিপত্তি বৃদ্ধি পায় এবং সর্বশেষ সেলজুক সুলতানের মৃত্যুতে ১১৯৯ খ্রিস্টাব্দে ওসমান ‘আমির’ উপাধি ধারণ করেন। ওসমানের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে যে ক্ষুদ্র অটমান রাজ্য সুগুত ও ইয়েনি শহরে সীমাবদ্ধ ছিল এর সীমানা উত্তরে বসফোরাস এবং কৃষ্ণসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। এর ফলে ওসমানের রাজ্য পূর্ব-পশ্চিমে ১২০ মাইল এবং উত্তর-দক্ষিণে ষাট মাইল, অর্থাৎ ৭ হাজার বর্গমাইলের মধ্যে সীমিত হয়। আমির ওসমান এই রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে স্বাধীন ও সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী হন। তার নামে জুমার নামাজের খুতবা পড়া হয় এবং মুদ্রা প্রবর্তিত হয়। তিনি কারামানলিয়ার প্রখ্যাত দরবেশ শেখ ইদির হালীর বিদূষী কন্যা মাল খাতুনকে বিয়ে করেন। তার শ্বশুরকে প্রধান কাজির পদে নিযুক্ত করেন এবং পরে তাকে উজিরের পদে উন্নীত করেন।