শনিবার, ২৪ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

চেকপোস্টে পুলিশ হত্যা

জননিরাপত্তার জন্য অশনি সংকেত

দুই বিদেশির হত্যাকাণ্ডের পর সারা দেশে যখন কড়া নিরাপত্তাজনিত সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে তখন রাজধানীর গাবতলীতে পুলিশ চেকপোস্টে কর্তব্যরত অবস্থায় এক এএসআই খুনের ঘটনা উদ্বেগজনক। সন্দেহভাজন এক যুবককে তল্লাশির সময় সে হঠাৎ ইব্রাহিম মোল্লা নামের এক পুলিশ কর্মকর্তাকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। আগ্নেয়াস্ত্রধারী অন্য পুলিশ সদস্যদের সামনে এ হত্যাকাণ্ড হলেও তারা তা প্রতিরোধ কিংবা দুর্বৃত্তকে পাকড়াওয়ের কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি। অপরাধী পালিয়ে যাওয়ার পর পুলিশ অবশ্য অন্য এক যুবককে আটক করে। আটককৃত যুবক পলাতক দুর্বৃত্তের সঙ্গের কেউ হতে পারে এ সন্দেহে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। রাজধানীতে পুলিশ চেকপোস্টে তল্লাশির সময় সশস্ত্র পুলিশের সামনে একজন কর্মকর্তাকে ছুরিকাঘাত করে দুর্বৃত্তের পালিয়ে যাওয়া জননিরাপত্তার জন্য অশনি সংকেত বললেও অত্যুক্তি হবে না। রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে পুলিশি চেকপোস্ট বসানো হয়েছে নাগরিক নিরাপত্তা নিশ্ছিদ্র করার জন্য। প্রতিটি চেকপোস্টে পর্যাপ্ত সংখ্যক সশস্ত্র পুলিশ সদস্যও দায়িত্ব পালন করছে। তাদের সামনে একজন দুর্বৃত্ত কীভাবে তল্লাশির সময় সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়, তা একটি উদ্বেগের বিষয়। পুলিশের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র থাকা সত্ত্বেও একজন দুর্বৃত্ত এক পুলিশ কর্মকর্তাকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে গেল আর তারা চেয়ে চেয়ে দেখলেন এটি দুর্ভাগ্যজনক বৈকি। যারা জননিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন, তারা যদি নিজেদের রক্ষা করার মতো সামর্থ্যরে অধিকারী না হন, তাতে দেশবাসীর উৎকণ্ঠিত হওয়ারই কথা। দুই বিদেশি হত্যার পর নিরাপত্তাহীনতার অজুহাতে বিভিন্ন দেশ তাদের নাগরিকদের বাংলাদেশে আসার ব্যাপারে যখন নিরুৎসাহিত করছে তখন এ ঘটনা নিরাপত্তাজনিত সংশয়কে বাড়িয়ে তুলবে। এ হত্যাকাণ্ড পুলিশ চেকপোস্টগুলোর ওপর কর্তৃপক্ষীয় নজরদারির প্রয়োজনীয়তাও স্পষ্ট করেছে। রাজধানীর বিভিন্ন চেকপোস্টে দায়িত্বরতদের অনেকেই জননিরাপত্তার বদলে যানবাহন চালকদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়ে ব্যস্ত থাকেন, এমন অভিযোগ ওপেন সিক্রেট।  তল্লাশির সময় সতর্কতা অবলম্বনে ঘাটতি ছিল বলেই একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে যে প্রাণ দিতে হলো তা সহজেই অনুমেয়। আমরা আশা করব পুলিশ তাদের সহকর্মীর ঘাতককে খুঁজে বের করতে সম্ভাব্য সবকিছু করবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর