দুই বিদেশি হত্যাকাণ্ড, চেকপোস্টে পুলিশ কর্মকর্তাকে হত্যা এবং তাজিয়া মিছিলে গ্রেনেড হামলার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্কাবস্থায় রাখা হয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে সতর্কাবস্থা জারি না করা হলেও এ ধরনের সন্ত্রাসী ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে বাড়তি নজর দেওয়া হচ্ছে। দেশের সব বিমানবন্দর ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। স্পর্শকাতর স্থানগুলোতে নেওয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা। শাহজালাল বিমানবন্দরের ভিতর ও বাইরে যাত্রীদের কঠোর তল্লাশিসহ দর্শনার্থী প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। বহির্গমন যাত্রীদেরও তল্লাশি চালানো হচ্ছে। বিমানবন্দরকেন্দ্রিক নাশকতার পরিকল্পনা করছে একটি গোষ্ঠী- এমন গোয়েন্দা তথ্যের প্রতিক্রিয়ায় নিরাপত্তা জোরদারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নাশকতার ঘটনা ঘটতে পারে এবং দুর্বৃত্তরা বিস্ফোরক কোনো কিছু নিয়ে বিমানবন্দরে আসতে পারে, যা মেটাল ডিটেক্টরে ধরা পড়বে না, এমন আশঙ্কা মাথায় রেখে বিশেষ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। দর্শনার্থীদের বিমানবন্দরে প্রবেশের জন্য থাকা পাঁচটি কাউন্টার বন্ধ রেখে ভিতর-বাইরে তল্লাশি করা হচ্ছে। রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ‘কি পয়েন্ট ইন্সটলেশন’ বা কেপিআই জোন এবং আশপাশ এলাকায় বেশকিছু চেকপোস্ট বসিয়ে চলাচলকারীদের ব্যাগেজ ও দেহ তল্লাশি করা হচ্ছে। সরকারি ব্যবস্থাপনার রেডিও-টেলিভিশন কেন্দ্র, আণবিক শক্তি কমিশন, বিমানবন্দর, বিদ্যুৎ, ওয়াসা, গ্যাস সরবরাহের স্টেশনসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে পুলিশি পাহারার পাশাপাশি গোয়েন্দা তৎপরতাও বাড়ানো হয়েছে। কূটনৈতিকপাড়ার নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে। সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ এখন একটি বিশ্বজনীন সমস্যা। নাইন-ইলেভেনের পর থেকে এ বিপদ দুনিয়ার দেশে দেশে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। মনে করা হয় বিশ্ব পুঁজির কায়েমি স্বার্থের প্রতিভূরা সাপ হয়ে কামড়ানো এবং ওঝা হয়ে ঝাড়ানোর দ্বৈত ভূমিকা পালনের মাধ্যমে বিশ্ব ব্যবস্থায় নিজেদের মোড়লগিরি টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছে। বাংলাদেশের দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নতি, স্বাধীন পথে চলার অভিলাসকে বিশ্ব মোড়লরা ভালো চোখে দেখছে না তা ভাবার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। আর এ কারণেই পশ্চিমা দুনিয়ার চেয়েও বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ সম্পর্কে অযথা সংশয় সৃষ্টির চেষ্টা চালানো হচ্ছে। আশা করা যায় সতর্কাবস্থা অদৃশ্য ষড়যন্ত্র রোখার ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালনে সমর্থ হবে।