বুধবার, ২৮ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা
ইতিহাস

অটমান সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা

এভারসলে বলেন, ‘একটি নতুন রাষ্ট্রের এবং একটি স্বতন্ত্র জাতির অভ্যুত্থানের জন্য ওসমানই দায়ী ছিলেন।’ আটত্রিশ বছর সগৌরবে রাজত্ব করলেও তিনি ‘আমির’ উপাধিতেই সন্তুষ্ট ছিলেন, ‘সুলতান’ নামে আখ্যায়িত হননি। তার রাজধানী ছিল ব্রুসা এবং অটমান সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা ওসমান সামরিক অভিযান দ্বারা স্বীয় ক্ষমতা ও প্রতিপত্তি বিস্তার করেন। তিনি ছিলেন তেজস্বী যোদ্ধা, দক্ষ রণকুশলী, বিচক্ষণ ও প্রজাবৎসল শাসক। তার শ্বশুর ইদিব আলী ছিলেন তার প্রধান উজির এবং জাতি-ধর্ম-নির্বিশেষে তিনি প্রজাদের পালন করতেন। তিনি অতি সরল ও অনাড়ম্বর জীবনযাপন করতেন। এইচএ গীবন বলেন, ‘ওসমান পৃথিবীর মধ্যে অন্যতম বৃহত্তম রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন।’ তিনি এশিয়া মাইনরে এরূপ একটি সাম্রাজ্যের পত্তন করেন, যা পরবর্তীকালে ইউরোপে ত্রাসের সঞ্চার করে; ইসলামের ধর্মীয় রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অনুশাসনগুলো সংরক্ষণে সহায়তা করে। প্রাইস যথার্থই বলেন, ‘বিভিন্ন জাতির সমন্বয়ে তিনি এরূপ একটি রাষ্ট্র কায়েম করেন যা চেঙ্গিস খান ও তৈমুর ধ্বংস করেন।’ সহনশীলতা দ্বারা তিনি শত্রুদের জয় করেন এবং তার সময়ে বহু বিধর্মী ইসলামের ছায়াতলে আসে। সভ্যতার লীলাভূমি এশিয়া মাইনর মুসলিম আধিপত্য বিস্তারের সর্বশেষ ফ্রন্টিয়ারে পরিণত হয় এবং এইচ জি ওয়েলসের ভাষায়, ক্রমশ অটমান তুর্কিরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে থাকে এবং সেলজুক রুমে সর্বাপেক্ষা শক্তিশালী রাজ্যে পরিণত হয়। অটমান সাম্রাজ্য প্রাচ্য ও প্রতীচ্যের মধ্যে সেতুবন্ধনের কাজ করে এবং গ্রিক স্থাপত্যের প্রভাবে তুর্কি ইমারত নির্মিত হতে থাকে। যখন আরব সভ্যতা মোঙ্গল অভিযানে এবং বায়জানটাইন সভ্যতা ক্রুসেডার ও ল্যাটিনদের দ্বারা ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় তখনই অটমান তুর্কির এ অঞ্চলে একটি নতুন রাষ্ট্র নতুন সভ্যতার সঞ্চার করে। ওসমানের চরিত্রে কঠোরতার ও কোমলতা অপূর্ব সমাবেশ দেখা যায়; কিন্তু তাকে নিষ্ঠুর বলা যাবে না। তিনি ইস্কি শহরে একটি মসজিদ নির্মাণ করেন। জনহিতকর কার্যকলাপ দ্বারা তিনি প্রজাদের সার্বিক উন্নতির পথ প্রশস্ত করেন। লেনপুল বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে আরবের প্রথম খলিফাদের মতো তিনি রুচি ও অভ্যাসে সরল ও অনাড়ম্বর ছিলেন। তিনি সোনা-রুপা রেখে যাননি; কেবল একটি লবণ আধার, যা আতিথেয়তার প্রতীক, একটি চামচ, একটি কোট ও পাগড়ি, তার পতাকা ও কিছু ঘোড়া রেখে যান।

সর্বশেষ খবর