বৃহস্পতিবার, ২৯ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

গৃহবধূর ওপর নির্যাতন

নওগাঁ থানার পুলিশের আচরণও নিন্দনীয়

স্বামীর পৈশাচিক নির্যাতনে ক্ষতবিক্ষত এক গৃহবধূ কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাসনুবা রেজা নামের ওই কলেজছাত্রীর সঙ্গে দেড় বছর আগে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের লাহরি খানের বিয়ে হয়। লাহরি খান বর্তমানে নওগাঁ পিডিবির উপ-সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত। তাসনুবার দাবি, বিয়ের সময় তার বাবা প্রকৌশলী জামাতাকে ৫ লাখ টাকা দেন। পরে নওগাঁয় তিন কাঠা জমি কিনতে লাহরি টাকার জন্য স্ত্রীর ওপর চাপ সৃষ্টি করেন। এ টাকার জন্য তাকে প্রায়ই অত্যাচার করা হতো। সর্বশেষ গত ২৩ অক্টোবর রাতে নওগাঁ শহরের দয়ালের মোড় এলাকার ভাড়া বাসায় স্বামী লাহরি খান ও তার বাড়ির মালিক বিদ্যুৎ হোসেন মিলে লোহার পাইপ, মোটরসাইকেলে ব্যবহৃত লম্বা লগ তালা ও টেস্টার দিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় তার ওপর নির্যাতন চালান। তাসনুবার মায়ের অভিযোগ, ঘটনার দিন রাতে জামাতাকে মোবাইলে কল করলে তাকে বলেন, আপনারা এসে মেয়েকে নিয়ে যান। পরে রাতে স্বজনদের সঙ্গে নিয়ে তিনি নওগাঁ যান এবং থানায় গিয়ে দেখেন তাসনুবা ক্ষতবিক্ষত শরীরে মেঝেতে পড়ে আছে। একপর‌্যায়ে পুলিশ সাদা কাগজ ও তালাকনামায় স্বাক্ষর নিয়ে তাদের থানা থেকে বের করে দেয়। হাসপাতালে নিতে চাইলে স্থানীয় যুবকরা তাদের বাধা দেয়। পরে ভোররাতে একটি মাইক্রো ভাড়া করে কুষ্টিয়া এসে জেনারেল হাসপাতালে মেয়েকে ভর্তি করান। গৃহবধূ তাসনুবার ওপর প্রকৌশলী স্বামীর পৈশাচিক নির্যাতনের ঘটনাই শুধু নয়, নওগাঁ থানার পুলিশের আচরণও স্তম্ভিত হওয়ার মতো। বাংলাদেশ প্রতিদিনে প্রকাশিত প্রতিবেদনে নির্যাতিত গৃহবধূর কাছ থেকে থানায় তালাকনামায় ও সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেওয়ার যে অভিযোগ উঠেছে তা কোনো সভ্য দেশের পুলিশের কাছ থেকে আশা করা যায় না। কুষ্টিয়া হাসপাতালের চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চিকিৎসাধীন গৃহবধূর সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ভোঁতা অস্ত্র দিয়ে তাকে মারপিট করা হয়েছে। আমরা আশা করব, গৃহবধূ তাসনুবার ওপর নির্যাতনের অভিযোগটি যথাযথভাবে তদন্ত করে দেখা হবে। যে কারণেই তার ওপর নির‌্যাতন চালানো হোক কেন তা নিন্দনীয় এবং আইনের দিক থেকে অপরাধ। নির্যাতনকারীদের পক্ষে নওগাঁ থানা পুলিশের ভূমিকাও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ খতিয়ে দেখবে আমরা এমনটিই দেখতে চাই।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর