শুক্রবার, ৩০ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

হাদিসের দৃষ্টিতে মেহেদি

হাদিসের দৃষ্টিতে মেহেদি

হাদিসে মেহেদি সম্পর্কে বলা হয়েছে, রসুলপাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মেহেদি পাতাকে বিভিন্ন রোগের ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করতেন। ১. ফোঁড়া পাকানোর জন্য ২. শরীরে কাঁটা ফুটলে, ৩. মাথাব্যথায়। হজরত সালামা বিনতে উম্মে রাফে (রা.) হতে বর্ণিত আছে- ‘যখনই রসুলপাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কোনো ফোঁড়া-পাচড়া বের হতো অথবা কাঁটা বা এই প্রকারের কিছু ঢুকে যেত, তখনই রসুলপাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বলতেন এর ওপর মেহেদি লাগিয়ে দাও।’ অন্যত্র এক হাদিসে ইবনে মাজার বরাত দিয়ে আল্লামা ইবনে কাইয়্যুম (রহ.) বলেন- ‘যখন রসুলপাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মাথাব্যথা দেখা দিত তখনই তিনি মাথায় মেহেদি লাগাতেন এবং ইরশাদ ফরমাতেন, ‘আল্লাহর হুকুমে এটা মাথাব্যথার শেফাদানকারী।’

মুফরাদাতের উদ্ধৃতি

মেহেদি রক্ত পরিষ্কারকারী এবং চর্মরোগের জন্য উপকারী। কুষ্ঠরোগী, আগুনে পোড়া এবং পাণ্ডব রোগের জন্যও মেহেদির ব্যবহার খুব উপকারী। মেহেদির প্রলেপ ফোলা, ফোসকা, আগুনে চামড়া পুড়ে যাওয়া রোগীর জন্য খুবই উত্তম প্রতিষেধক। মেহেদির ঠাণ্ডা বৈশিষ্ট্যের কারণে এটা হয়ে থাকে। -কিতাবুল মুফরাদাত, খাওয়াসুল আদভিয়া, পৃষ্ঠা : ৩৫২

এ ছাড়া মেহেদির অন্যান্য গুণাগুণ

শ্বেতপ্রদরে ২৫ গ্রাম মেহেদি পাতা সিদ্ধ করে সেই পানিতে উত্তর বস্তি (ডুস দেওয়া) দিলে সাদাস্রাব ও অভ্যন্তরের চুলকানি প্রশমিত হয়। স্থানভ্রষ্ট জরায়ুর ক্ষেত্রেও উপরোল্লিখিত পদ্ধতি প্রয়োগ করলে অসুবিধা কমে যায়। শুক্রমেহ রোগে পাতার রস এক চা চামচ দিনে দুবার পানি বা দুধের সঙ্গে একটু চিনি মিশিয়ে খেলে এক সপ্তাহের মধ্যে উপকার পাওয়া যায়। চুল উঠে যাওয়া ও পাকায় ইউনানী চিকিৎসকদের মতে, চুল উঠে যাওয়া বা পাকায় ১টি হরতকী ও ১০-১২ গ্রাম মেহেদি পাতা একটু থেঁতো করে ২৫০ মি.লি পানিতে সিদ্ধ করে ৬০-৭০ মি. লি. থাকতে নামিয়ে ছেঁকে ঠাণ্ডা হলে মাথায় লাগালে উপকার পাওয়া যায়। এ ছাড়া খুশকি দূর করতেও এটা কার্যকর ভূমিকা পালন করে।

চর্মরোগে : ত্বকের বিভিন্ন রোগ যেমন- একজিমা, খোস-পাচড়া, ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়া ইনফেকশন, ঘা, কুষ্ঠ, শ্বেতী ইত্যাদি রোগে মেহেদি পাতার রস উপকারী। পাতার রস দিনে দুবার আক্রান্ত স্থানে লাগাতে হবে। এ ছাড়া যাদের গায়ের বা মুখের চামড়া কুঁচকে ঢিলে হয়ে বা ঝুলে গেছে, তারা এই পাতার রস দিয়ে তৈরি তেল গায়ে মাখলে অনেকটা স্বাভাবিক হবে।

-ডা. আলমগীর মতি

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর