শুক্রবার, ৩০ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

আল্লাহ অপচয়কারীদের পছন্দ করেন না

মাওলানা মুহাম্মদ আশরাফ আলী

ইসলামী শরিয়তে অপচয় ও অপব্যয় একটি নিন্দনীয় কাজ। অপচয়, অপব্যয় এবং অমিতাচার ব্যক্তি, পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে দুর্ভোগ ডেকে আনে। পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন সূরায় অপচয়, অপব্যয় এবং অমিতাচার থেকে বান্দাদের দূরে থাকার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সূরা নিসার ৩৮ নম্বর আয়াতে অপচয়কারীকে শয়তানের সঙ্গী হিসেবে অভিহিত করে ইরশাদ করা হয়েছে, ‘যারা মানুষকে দেখাবার জন্য তাদের ধনসম্পদ ব্যয় করে এবং আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস করে না, আল্লাহ তাদের ভালোবাসেন না আর শয়তান কারও সঙ্গী হলে সে সঙ্গী কত মন্দ।’ অপচয়কারীরা যে মহান স্রষ্টা আল্লাহর কাছে অপছন্দীয় সে সত্যটি তুলে ধরা হয়েছে সূরা আল আনামের ১৪১ নম্বর আয়াতে। ইরশাদ করা হয়েছে, অপচয় করবে না কারণ নিশ্চয় আল্লাহ অপচয়কারীদের পছন্দ করেন না।

ইসলাম আত্মনিগ্রহ এবং কৃচ্ছ্রতাকে সমর্থন করে না। অপচয়ের বিরুদ্ধে পবিত্র কোরআনে ধিক্কার দেওয়া হলেও মানুষের জীবনধারণ ও মানসিক চাহিদাকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সূরা আরাফের ৩১ নম্বর আয়াতে ইরশাদ করা হয়েছে, ‘হে বনি আদম। প্রত্যেক নামাজের সময় সুন্দর পোশাক-পরিচ্ছদ পরিধান করবে। আহার ও পান করবে কিন্তু অমিতাচার করবে না। নিশ্চয়ই তিনি অমিতাচারীকে পছন্দ করেন না।’ যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু পানাহার করাই ঐশী নির্দেশ। এটি যে স্বাস্থ্যসম্মত ও সে অর্থে কল্যাণকর তা চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের দ্বারাও স্বীকৃত। পবিত্র কোরআনের সূরা বনি ইসরাইলের ২৬ ও ২৭ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ আত্মীয়স্বজন, সমাজের অভাবগ্রস্ত মানুষ এবং মুসাফিরদের প্রতি সহায়তার হাত বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন। ইরশাদ করা হয়েছে, ‘আত্মীয়স্বজনকে তার প্রাপ্য দেবে এবং অভাবগ্রস্ত ও মুসাফিরকেও এবং কিছুতেই অপব্যয় কর না। যারা অপব্যয় করে তারা শয়তানের ভাই এবং শয়তান তার প্রতিপালকের প্রতি অতিশয় অকৃতজ্ঞ।’ কোরআনের নির্দেশনা অনুযায়ী মুমিনদের অপচয়, অপব্যয় ও অমিতাচার থেকে দূরে থাকতে হবে।  মুমিনদের কেমন হওয়া উচিত তা তুলে ধরা হয়েছে সূরা ফুরকানের ৬৭ নম্বর আয়াতে। ইরশাদ করা হয়েছে, ‘এবং যখন তারা ব্যয় করে তখন তারা অপব্যয় করে না, কার্পণ্যও করে না ববং তারা আছে এ দুইয়ের মাঝে মধ্যপন্থায়।’ অর্থাৎ অপচয় এবং দেহ মনকে কষ্ট দেওয়া কৃচ্ছ্রতা দুটি থেকেই মুমিনদের দূরে থাকতে হবে।

লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর