রবিবার, ১ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

ওরা স্বঘোষিত ভিআইপি

ক্ষমতার অপচর্চা কাম্য হওয়া উচিত নয়

স্বঘোষিত ভিআইপিরা দেশের প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তথা সরকারের ভাবমূর্তিতে কলঙ্ক লেপন করছে। তাদের আচরণ জনমনে সৃষ্টি করছে সীমাহীন ক্ষোভ। সাধারণ মানুষের কাছে সরকারের গ্রহণযোগ্যতায়ও বিসংবাদ সৃষ্টি করছে এসব স্বঘোষিত ভিআইপি। রাজধানীসহ সারা দেশে যানজটের মধ্যেও দামি গাড়িতে চড়ে সাইরেন বাজিয়ে উল্টোপথে তারা গাড়ি হাঁকিয়ে চলেন নির্বিবাদে। তাদের কারও কারও গাড়িতে শোভা পাচ্ছে পতাকা। নিয়ম অনুযায়ী ঢাকা শহরে শুধু পূর্ণ মন্ত্রীরা গাড়িতে পতাকা ব্যবহার করতে পারেন। আর প্রতিমন্ত্রীরা ঢাকার বাইরে ব্যবহারের ক্ষমতা রাখেন। পুলিশ, অ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ছাড়া কারোরই সাইরেনযুক্ত হর্ন ব্যবহার করার কথা নয়। মন্ত্রীর সঙ্গে পুলিশের যে প্রটেকশন গাড়ি থাকে শুধু সেই গাড়িতে এ হর্ন ব্যবহার করার অনুমতি রয়েছে। কিন্তু স্বঘোষিত ভিআইপিরা দাপট দেখানোর জন্য নিজেদের গাড়ির হর্নের সঙ্গে সাইরেন যুক্ত করছে নির্বিচারে। মন্ত্রীদের গাড়িতে যে ধরনের হর্ন থাকে তথাকথিত ভিআইপি নামধারীরা সে ধরনের সাইরেনযুক্ত গাড়ি ব্যবহার করলেও তা দেখার যেন কেউ নেই। ঢাকার ট্রাফিক পুলিশও এই নবাগত ভিআইপিদের নিয়ে বিব্রত। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদন মতে, সরকারের এই মেয়াদে এ ধরনের ব্যক্তিদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। তারা শুধু সড়কে গাড়ি চালাচ্ছেন না, সরকারি অফিস-আদালতেও পতাকাওয়ালা গাড়ি নিয়ে চলাফেরা করছেন। এসব গাড়ির মালিকদের কেউ হয়তো কেরানির চাকরি করেন, কিন্তু অদৃশ্য ক্ষমতাবলে নিজেদের আইনের ঊর্ধ্বে তথা ধরাছোঁয়ার বাইরে মনে করেন। বিস্ময়কর হলেও সত্যি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অনেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাও অজ্ঞাত কারণে এদের তোয়াজ করেন। আর এই গাড়ির মালিকদের কারও বাড়ি গোপালগঞ্জ হলে তো কথাই নেই। সম্প্রতি বেশ কয়েকজন মন্ত্রী-এমপির ছেলেকে ফ্ল্যাগ স্ট্যান্ড বহনকারী গাড়িসহ চলাচল করতে দেখা গেছে।  গাড়িতে পতাকা ব্যবহার কিংবা সাইরেন ব্যবহারের সুনির্দিষ্ট বিধিবিধান থাকা সত্তে¡ও তা ভঙ্গ এবং আইন ভঙ্গকারীদের ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নীরবতা জনমনে ক্ষোভ সৃষ্টি করছে। আইনের শাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছে অবৈধ ক্ষমতা চর্চাকারীদের অপতৎপরতা।  নিজেদের সুনামের স্বার্থে এ ব্যাপারে সরকারকে কঠোর হতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর