সোমবার, ২ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

লেখকের পর প্রকাশক

ঘাতকরা ধরাছোঁয়ার বাইরে যেন না থাকে

রাজধানীতে একই দিনে দুর্বৃত্তদের দুটি সুপরিকল্পিত হামলায় বিজ্ঞানমনস্ক লেখক অভিজিৎ রায়ের দুই প্রকাশক আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে শাহবাগে আজিজ সুপার মার্কেটের জাগৃতি প্রকাশনীর কর্ণধার ফয়সল আরেফিন দীপনকে গলা কেটে হত্যা করে তার অফিস রুমে তালাবদ্ধ করে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা। প্রায়  একই সময় লালমাটিয়ার সি-ব্লকে প্রকাশনী সংস্থা শুদ্ধস্বরের কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে দুর্বৃত্তরা এ প্রকাশনীর কর্ণধার আহমেদুর রশীদ চৌধুরী ও তার সঙ্গে থাকা তরুণ কবি তারেক রহিম ও ব্লগার রণদীপন বসুকে গুলি করে ও কুপিয়ে গুরুতর আহত করে পালিয়ে যায়। জাগৃতি প্রকাশনীর কর্ণধার দীপন খ্যাতনামা শিক্ষাবিদ ও লেখক আবুল কাসেম ফজলুল হকের একমাত্র পুত্র। স্মর্তব্য, লেখক অভিজিৎ রায়কে গত ফেব্রুয়ারিতে বইমেলার সন্নিকটে কড়া পুলিশি নিরাপত্তা গণ্ডির মধ্যে হত্যা করে। অভিজিৎ রায়ের ‘বিশ্বাসের ভাইরাস’ নামের বইটি প্রকাশ করেছিল জাগৃতি প্রকাশনী, ‘অবিশ্বাসের দর্শন’সহ আরও কিছু বই প্রকাশ করে শুদ্ধস্বর। পুলিশ দুটি ঘটনাস্থল তদন্ত করে বলেছে, অভিজিৎ হত্যার সঙ্গে এ দুটি ঘটনার মিল রয়েছে। আজিজ সুপার মার্কেটের প্রতিটি প্রবেশপথে সিসিটিভি থাকা সত্তে¡ও দুর্বৃত্তরা কীভাবে ঠাণ্ডা মাথায় হত্যা করে অফিসে তালা লাগিয়ে পালিয়ে যায় তা বিস্ময়ের ব্যাপার। প্রকাশ্য দিবালোকে রাজধানীর দুটি ব্যস্ত এলাকায় দুজন প্রকাশক ও দুজন লেখককে যেভাবে উগ্রবাদীরা হতাহত করেছে তা জনজীবনের নিরাপত্তা সংকটকে আরও ঘনীভ‚ত করে তুলবে। একের পর এক লেখক ব্লগার খুন হওয়ার পরও ঘাতকদের চিহ্নিত এবং গ্রেফতার করার ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যর্থতা দুর্ভাগ্যজনক।  এ ব্যর্থতা আরও বেশি অপকর্ম সংঘটনে দুর্বৃত্তদের উৎসাহিত করছে বললেও অত্যুক্তি হবে না। দুজন বিদেশি নাগরিক হত্যা, একজন তরিকতপন্থি পীরের হত্যাকাণ্ড, আশুরার দিন তাজিয়া মিছিলে গ্রেনেড হামলার পর একই দিনে একই সময়ে দুজন প্রকাশকের ওপর পরিকল্পিত হামলার ঘটনা দেশের জনগণের নিরাপত্তাহীন অবস্থাকেই স্পষ্ট করেছে।  আমরা দুটি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাই। দুর্বৃত্তদের খুঁজে বের করে বিচারের সম্মুখীন করা হবে আমরা তেমনটিই দেখতে চাই। নিহত দীপনের পরিবার এবং আহতদের প্রতি আমাদের সহানুভ‚তি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর