বৃহস্পতিবার, ৫ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

আয়াতুল কুরসি পাঠে শয়তান কাছে আসতে পারে না

মাওলানা আবদুর রশিদ

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক দিন রসুলুুল্লাহ (সা.) আমাকে রমজানের জাকাতের প্রহরী নিযুক্ত করেন। আমার কাছে এক আগমনকারী এসে সে মাল থেকে কিছু কিছু উঠিয়ে নিয়ে সে তার চাদরে জমা করতে থাকে। আমি তাকে ধরে বললাম, তোমাকে আমি রসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে নিয়ে যাব। সে বলল, আমাকে ছেড়ে দিন। আমি খুবই অভাবী লোক। তখন আমি তাকে ছেড়ে দেই। সকালে রসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে জিজ্ঞাসা করেন, তোমার রাতের বন্দী কী করেছিল? আমি বলি, হে আল্লাহর রসুল! সে তার ভীষণ অভাবের অভিযোগ করায় তার প্রতি আমার দয়া হয়, তাই আমি তাকে ছেড়ে দেই। রসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, সে তোমাকে মিথ্যা বলেছে। সে আবার আসবে। আমি রসুলুল্লাহ (সা.)-এর কথায় বুঝেছি যে, সে সত্যি আবার আসবে। আমি পাহারা দিতে থাকি। সে এসে খাদ্য উঠাতে থাকে। আমি আবার তাকে ধরে বললাম, তোমাকে আমি রসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে নিয়ে যাব। সে আবার সে কথাই বলল, আমাকে ছেড়ে দিন, আমি খুবই অভাবী। তার প্রতি আমার দয়া হলো। কাজেই তাকে ছেড়ে দিলাম। সকালে আমাকে রসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, হে আবু হুরায়রা! তোমার রাতের বন্দীটি কী করেছে? আমি বললাম, হে আল্লাহর রসুল! সে অভাবের অভিযোগ করায় আমি তাকে দয়া করে ছেড়ে দিয়েছি। রসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, সে তোমাকে মিথ্যা বলেছে। সে আবার আসবে। আমি আবার তৃতীয় রাতে পাহারা দেই। এরপর সে এসে খাদ্য উঠাতে থাকে। আমি তাকে বললাম : এটাই তৃতীয়বার এবং এবারই শেষ। তুমি বার বার বলছ যে, আর আসবে না, অথচ আবার এসেছ। সুতরাং তোমাকে আমি রসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে নিয়ে যাব। তখন সে বলল, আমাকে ছেড়ে দিন। আমি আপনাকে এমন কতগুলো কথা শিখিয়ে দিচ্ছি যার মাধ্যমে আল্লাহ আপনার উপকার সাধন করবেন। আমি বললাম সেগুলো কী? সে বলল : ‘যখন আপনি বিছানায় শয়ন করবেন তখন আয়াতুল কুরসি শেষ পর্যন্ত পাঠ করবেন। এতে মহান আল্লাহ আপনার রক্ষক হবেন এবং সকাল পর্যন্ত আপনার সামনে কোনো শয়তান আসতে পারবে না।’ তারা ভালো জিনিসের খুবই লোভী। এরপর (আবু হুরায়রা থেকে এ কথাগুলো শোনার পর) নবী করিম (সা.) বলেন : সে চরম মিথ্যাবাদী হলেও এটা সত্যি বলছে। হে আবু হুরায়রা! তুমি তিন রাত কার সঙ্গে কথা বলেছ তা কি জান? আমি বললাম, না। তিনি (সা.) বললেন : সে শয়তান।

[সূত্র : সহিহ বুখারি, ফাতহুল বারী হা./২৩১১]

                লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর