সোমবার, ৯ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

আবাসন খাতের মন্দাদশা

দেশের অর্থনীতির জন্য অশনি সংকেত

বাসস্থান মানুষের মৌলিক অধিকারের পর্যায়ে পড়ে এবং এদিক থেকে আবাসন খাতের গুরুত্ব অপরিসীম। কর্মসংস্থানের সৃষ্টিতেও এ খাতের ভূমিকা তাৎপর্যের দাবিদার। দেশের অর্থনীতি এ মুহূর্তে দৃশ্যত চাঙ্গা হলেও আবাসন খাতে বিরাজ করছে হতাশার কালো ছায়া। ক্রেতার অভাবে এ খাতের উদ্যোক্তারা এখন অস্তিত্বের লড়াইয়ে হিমশিম খাচ্ছেন। আবাসন খাতের বিপর্যয় এ খাতের সহযোগী বা লিঙ্কেজ ২৬৯টি শিল্পের জন্য বিসংবাদ ডেকে এনেছে। আবাসন ও এর সহযোগী শিল্পসমূহের পৌনে দুই লাখ কোটি টাকার বিনিয়োগও হুমকির মুখে পড়েছে। এর মধ্যে প্রবাসী বিনিয়োগের পরিমাণ ২১ হাজার কোটি টাকা। আবাসন প্রতিষ্ঠানগুলো গত ২০ বছরে এক লাখ ৬৪ হাজার ফ্ল্যাট হস্তান্তর করার সাফল্য দেখিয়েছে। কিন্তু এ মুহূর্তে এ খাতের হাজার হাজার ফ্ল্যাট পড়ে আছে ক্রেতার অভাবে। আবাসন খাতের সংকটের মূলে রয়েছে বাড়ি বা ফ্ল্যাট ক্রেতাদের অর্থায়নের উৎসগুলোতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অবিমৃশ্যকারিতা। মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তদের আবাসন চাহিদা পূরণের জন্য ঋণের জোগান দিতে ২০০৭ সালের ১৮ জুলাই একটি পুনঃ অর্থায়ন তহবিল চালু করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এ তহবিলের আওতায় যাদের মাসিক আয় ৫০ হাজার টাকার কম তাদের ফ্ল্যাট কেনার জন্য বাণিজ্যিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ঋণ বিতরণ করা হতো। আবাসন খাতকে ‘অনুৎপাদনশীল’ হিসেবে চিহ্নিত করে ২০১০ সালের ২৬ এপ্রিল তহবিলটি বন্ধ করা হয়। সরকারি প্রতিষ্ঠান হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন বাড়ি নির্মাণে ঢাকা ও চট্টগ্রামে ১২ শতাংশ এবং এর বাইরে ১০ শতাংশ সুদে ঋণ দিলেও আর্থিক সংকটের কারণে সংস্থাটি এখন খুব বেশি ঋণ দিতে পারছে না। আবাসন খাতের উদ্যোক্তাদের মতে, প্লট বা ফ্ল্যাট ক্রয়ের ক্ষেত্রে ঋণ দিলে ঝুঁকি থাকে না বললেই চলে। ব্যাংকে অলস টাকা পড়ে থাকা সত্তে¡ও ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে অনুদারতা দুঃখজনক। উদ্যোক্তাদের মতে, স্বল্প আয়ের লোকদের জন্য সিঙ্গেল ডিজিট হারে ঋণ দিলে আবাসন খাত ঘুরে দাঁড়াবে।  দুনিয়ার অনেক দেশে অর্থনৈতিক মন্দা থাবা বিস্তার করেছে আবাসন খাতের মন্দার পথ ধরে। এ অশনি সংকেত এড়াতে আবাসন খাতের মন্দাবস্থা কাটাতে উদ্যোগী হতে হবে।

সর্বশেষ খবর