মঙ্গলবার, ১০ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

দুই শিশু হত্যার দ্রুত বিচার

সব মামলায় এ সদিচ্ছার প্রতিফলন ঘটুক

সিলেটের শিশু সামিউল আলম রাজন এবং খুলনার শিশু রাকিব হত্যা মামলার দ্রুত রায় দেশের বিচার বিভাগের ইতিহাসে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। বিচারকসহ আদালত সংশ্লিষ্ট সবাইকে আমরা অভিনন্দন জানাই দ্রুত বিচার সম্পন্ন করার জন্য। মামলার তদন্তে যারা ছিলেন তাদেরও অভিনন্দন যথাসময়ে তদন্ত সম্পন্ন করে বিচার প্রক্রিয়ায় সহায়তার জন্য। বলা হয় বিলম্বিত বিচার বিচারহীনতার নামান্তর। আমাদের দেশের মানুষ যুগ যুগ ধরে এই বিচারহীনতার শিকার। বিলম্বিত বিচার বিচারপ্রার্থীদের জন্যই প্রকারান্তরে শাস্তি হয়ে দাঁড়ায়। মামলার দীর্ঘসূত্রতা অপরাধীদের বেপরোয়া হয়ে উঠতে সাহসী করে। বিচারপ্রার্থীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। ফলে অপরাধের শিকার হয়েও মানুষ বিচারের জন্য আইন আদালতের শরণাপন্ন হতে অনাগ্রহী হয়। আইন আদালত সম্পর্কে নেতিবাচক মনোভাবও গড়ে ওঠে তাদের মধ্যে। আইন হাতে তুলে নেওয়ার অপপ্রবণতার জন্য যা অনেকাংশে দায়ী। রাজন ও রাকিব হত্যার বিচারে আইন আদালত শুধু দ্রুত বিচারের কাক্সিক্ষত পথে চলার কৃতিত্বই দেখায়নি, ন্যায়বিচারের দৃষ্টান্তও স্থাপন করেছে বর্বরতম উপায়ে দুই শিশুকে হত্যার রায়ে। ৮ জুলাই সিলেটে গরিব সবজি বিক্রেতা রাজনকে চুরির মিথ্যা অভিযোগ এনে কামরুল ও তার সহযোগীরা পৈশাচিক উপায়ে হত্যা করে। তার ওপর যে বর্বর নির্যাতন চালানো হয় তার ভিডিও তুলে ইন্টারনেটে প্রচার করে আÍপ্রসাদও লাভ করে তারা। শেষ পর্যন্ত লাশও গুম করার অপচেষ্টা চালায় মানুষবেশী হায়েনারা। খুলনায় ৩ আগস্ট শিশু রাকিবকে হত্যা করা হয় আরও পৈশাচিক উপায়ে। সোমবার রাজন হত্যার দায়ে সিলেটের দায়রা জজ কামরুলসহ চারজনকে এবং খুলনার দায়রা জজ রাকিব হত্যার দায়ে শরীফসহ দুজনকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন। দুই হত্যা মামলার দ্রুত রায়ে প্রমাণিত হয়েছে সদিচ্ছা থাকলে আমাদের দেশেও দ্রুত বিচার সম্ভব। ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হলে সব মামলার ক্ষেত্রেই এ সদিচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে হবে। এ জন্য তদন্তকারী কর্তৃপক্ষ এবং আদালত সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক হতে হবে। আইন আদালত সম্পর্কে সাধারণ মানুষের আস্থা প্রতিষ্ঠায় যার কোনো বিকল্প নেই।

সর্বশেষ খবর