শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ১২ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

অথঃ অভিজাত হাসপাতাল

সরকারের নজরদারি বাড়াতে হবে

চিকিৎসা একটি মানবিক পেশা। দুনিয়ার সব সভ্য দেশে এ মহান পেশাকে সে দৃষ্টিতেই দেখা হয়। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, আমাদের দেশের চিকিৎসকদের এক বড় অংশ যেমন তাদের পেশাকে যেভাবেই হোক টাকা আয়ের উপায় হিসেবে দেখেন, তেমন উন্নত চিকিৎসাসেবার নামে যেসব অভিজাত হাসপাতাল গড়ে উঠেছে সেখানে চলে চিকিৎসাসেবার নামে জমজমাট বাণিজ্য। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চিকিৎসাসেবা না থাকলেও তথাকথিত অভিজাত হাসপাতালগুলোতে আছে আরাম-আয়েশের নানা উপকরণ। ঝকঝকে তকতকে মেঝে, প্রতিটি ফ্লোর নানা সাজসরঞ্জামে সাজানো-গোছানো, দামি কার্পেট, রংবেরঙের লাইটিং। রীতিমতো পাঁচ তারকা হোটেলের আদলেই সাজানো থাকে অভিজাত হাসপাতাল আর ক্লিনিকগুলো। সেখানে শুধু রোগী ধরা আর ছাড়ার মধ্য দিয়েই কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার হরেক ফন্দিফিকির প্রস্তুত থাকে। বিশেষ করে টেস্ট ও বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের নামে বিশাল বিল তৈরি করা হয়। তথাকথিত অভিজাত হাসপাতাল-ক্লিনিকগুলোর বিরুদ্ধেও রয়েছে ভুল চিকিৎসা আর পদে পদে রোগী হয়রানির অভিযোগ। কোনো কোনো ক্ষেত্রে রোগীদের জিম্মি করে ‘মুক্তিপণ’ স্টাইলেও টাকা আদায় করা হয়। একবার রোগী ঢুকলে তার টাকা-পয়সা চুষে না নেওয়া পর্যন্ত যেন ছাড়াছাড়ি নেই। সম্প্রতি দেশের সাবেক একজন প্রধানমন্ত্রী ও উপ-রাষ্ট্রপতির ছেলেকে এমনই এক অভিজাত হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত অবস্থায় ভর্তি করা হয়। প্রতি মুহূর্তেই যখন তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটছিল, তখন পরিবারের সদস্যরা তাকে বিদেশে নেওয়ার উদ্যোগ নেন। কিন্তু হাসপাতালে আটকে রাখার মানসিকতায় ওই রোগীকে ছাড় দিতে ৯ ঘণ্টারও বেশি সময় লাগানো হয়। ফলে বিদেশে নেওয়ার পথেই করুণ মৃত্যু ঘটে তার। অভিযোগ রয়েছে, অনেক অভিজাত হাসপাতালে সাধারণ জ্বর কিংবা পেটে ব্যথা নিয়ে কোনো রোগী ভর্তি হলেও তাকে হরেক রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শের নামে পকেট কাটা হয়। প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে অপারেশন এবং লাইফ সাপোর্টে বাঁচানোর নামে হাতিয়ে নেওয়া হয় কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা। রোগীদের আটকে রাখা কিংবা লাশ জিম্মি করার ঘটনাও কম নয়।  অভিজাত হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোর দিকে সরকারের যথাযথ নজরদারি না থাকায় তারা যা ইচ্ছা তাই করার স্বাধীনতা ভোগ করছে। জনস্বার্থে এই অমানবিক স্বেচ্ছাচারের অবসান হওয়া উচিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর