রবিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

ফেসবুক প্রতারণা

অপরাধ দমনে আইনের যথাযথ প্রয়োগ কাম্য

ফেসবুক দুনিয়াজুড়েই এক জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। বাংলাদেশও এখন ফেসবুক যুগের অন্যতম অংশীদার। দেশের প্রায় দেড় কোটি মানুষ এই যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহারকারী। ফেসবুকের ব্যবহার মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে যেমন অবারিত করেছে, তেমন বিকশিত করেছে জানার অধিকারকে। তবে আলোর নিচে যেমন থাকে অন্ধকার তেমন ফেসবুকের কল্যাণকর ভ‚মিকার পাশাপাশি এর অপব্যবহার প্রায়শই অকল্যাণও ডেকে আনছে। প্রতারক ও মতলববাজরা ফেসবুকে ভুয়া আইডি খুলে মানুষের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক এমনকি রাষ্ট্রীয় জীবনে বিড়ম্বনা ডেকে আনছে। ধর্মান্ধতা উসকে দেওয়ার ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা হচ্ছে এ জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি। প্রকৃত ব্যবহারকারী তার পরিচিত মহলে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন ভুয়াদের কারণে। সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের অজান্তে ফেসবুকে ভুয়া আইডি খোলার প্রবণতা ভয়ঙ্করভাবে বেড়ে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী, তার পরিবারের সদস্যবৃন্দ, মন্ত্রী, রাজনৈতিক নেতা, শিল্পী-সাহিত্যিক, পত্রিকার সম্পাদক, সাংবাদিক কেউই বাদ যাচ্ছেন না। ভুয়া আইডির মাধ্যমে এমন সব তথ্য ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে যা সংশ্লিষ্টদের বিব্রত হওয়ার জন্য যথেষ্ট। জনমনেও বিশিষ্টজনদের সম্পর্কে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হচ্ছে। ফেসবুকের অপব্যবহার মানুষের ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে যে বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে তা এক প্রতিষ্ঠিত সত্য। এ বিষয়টি মনে রেখেই দেশে সাইবার ক্রাইম বন্ধে আইন প্রণয়নও করা হয়েছে। কিন্তু তা দেখভাল করার জন্য আদৌ কোনো কর্তৃপক্ষ আছে কিনা তা ইতিমধ্যে সন্দেহের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ কমিশন ফেসবুক প্রতারণার অভিযোগ পেয়েও কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারছে না। তারা এ বিষয়ে ফেসবুক ও গুগল কর্তৃপক্ষের পর্যাপ্ত সহযোগিতার অভাবকে দায়ী করছে। তবে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের আশ্বস্ত করা হচ্ছে এ বিষয়ে সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০১৫ এর খসড়ায় বিষয়টি অন্তর্ভুক্তির প্রস্তুতি চলছে। আমরা মনে করি শুধু আইন থাকাই যথেষ্ট নয়।  ফেসবুকের অপব্যবহার রোধে আইনের প্রয়োগও যথাসময়ে হতে হবে। সাইবার ক্রাইমে জড়িতদের চিহ্নিত করা এবং বিচারের মাধ্যমে শাস্তি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রেও যত্নবান হতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর