সোমবার, ১৬ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

জঙ্গিবাদ দমন : ফ্রান্সে জজ মিয়া নাই

আমীর খসরু

জঙ্গিবাদ দমন : ফ্রান্সে জজ মিয়া নাই

সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর পশ্চিমা দেশগুলো এবং এর সমর্থকদের পক্ষ থেকে এমন ধারণা পোষণ করা হয়েছিল যে, বিশ্বে তাদের আর কোনো শত্র“ নেই। প্রতিপক্ষ বধ করার উল্লাসে তারা ছিল বিভোর। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন এবং পূর্ব ইউরোপের দেশগুলো থেকে ওইসব দেশের মনমতো গড়া শাসন ব্যবস্থা অর্থাৎ সমাজতন্ত্রের নামে কর্তৃত্ববাদী শাসন বিদায় নিয়ে বিশ্ব ব্যবস্থা এককেন্দ্রিক হয়ে পড়েছে এমন ধারণাও পোষণ করা হয়।  সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং এর বলয়ভুক্ত দেশগুলো বিদ্যমান থাকার সময় বিশ্ব ব্যবস্থা ছিল দুই মেরুতে বিভক্ত। কিন্তু বিশ্ব ব্যবস্থা হয়ে পড়ে এককেন্দ্রিক। তখন অনেক অতিউৎসাহী এমন প্রচার-প্রচারণা শুরু করে যে, পৃথিবীতে এখন উদার গণতন্ত্রের তরঙ্গ বইয়ে দিতে হবে। এরই একপর্যায়ে ১৯৯২ সালে ফ্রান্সিস ফুকাইয়ামা দ্য অ্যান্ড অফ হিস্টরি অ্যান্ড দ্য লাস্ট ম্যান নামে ৪১৮ পাতার একটি পুস্তক প্রকাশ করেন। এতে তিনি এমন একটা বয়ান দিলেন যে, উদার গণতন্ত্রই হচ্ছে মানব জাতির সবচেয়ে মহান ও টেকসই আদর্শ। এর পক্ষে চতুর ও কৌশলী প্রচার-প্রচারণাও চালানো হয়। তবে ওই পুস্তক প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে প্রভাবশালী টাইম ম্যাগাজিন ওই পুস্তকটির ওপর আলোচনা করতে গিয়ে ফ্রান্সিস ফুকাইয়ামার  তথাকথিত তত্তে¡র সমালোচনায় লিখেছিল, ‘বিগিনিং অফ নুইসেন্স’। টাইম ম্যাগাজিনের মন্তব্যটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এ কারণে যে, উদার গণতন্ত্র একটি শাসন ব্যবস্থা ও রাষ্ট্র পরিচালনার উপায় ও পদ্ধতি মাত্র। এটি কোনোক্রমেই আদর্শ নয়। শাসন ব্যবস্থাকে রাজনৈতিক মতাদর্শ হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার বিপদটি হচ্ছে এতে এক ধরনের ভারসাম্যহীনতার সৃষ্টি হয়। আর এ ভারসাম্যহীনতার কারণটি হচ্ছে অন্য কোনো আদর্শের অনুপস্থিতি। পুরো বিশ্ব ব্যবস্থা এককেন্দ্রিক হয়ে পড়ার কারণে যে ভারসাম্যহীনতার সৃষ্টি হয়, তার ফলে সৃৃষ্টি হয় একটি আদর্শিক শূন্যতার। এই আদর্শিক শূন্যতা পূরণের চেষ্টা হচ্ছে একেবারেই নেতিবাচক এবং ভয়ঙ্কর কিছু ব্যবস্থাবলীর উদ্ভবের মধ্যদিয়ে।

যে ভাবনা-চিন্তা ছিল পশ্চিমা দুনিয়ার তা স্বল্পকালেই তিরোহিত হয়। আগে হওয়া সোভিয়েত বনাম যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধটি পুনরায় শুরু হয় ২০০১ সালে, ৯/১১-এর মর্মান্তিক ও বেদনাময় ঘটনার পরে। এই দফায় ভিন্ন মাত্রায় এটি শুরু হয়েছে। আগে যারা পশ্চিমাদের হয়ে সোভিয়েতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল তারা এবার ঠিক উল্টো কাজটিই করে। তাদের জন্য সমাজতন্ত্রের স্থানে আরও বড় বিপদ পশ্চিমাদের সামনে আবিভর্‚ত হয়। আর সেটি হচ্ছে ধর্মীয় উগ্রবাদের উত্থান। আর এটি প্রকাশ ঘটে নানা মাত্রায় এবং নানা ধরনে। ওই যে শুরু তা এখনো চলছে। আফগানিস্তানের পরে ইরাক, এরপরে লিবিয়া এবং সিরিয়ায় যুদ্ধ চলছে। আফগান যুদ্ধের মধ্যেই উত্থান ঘটে ওসামা বিন লাদেন নামে এক চরিত্রের, যে চরিত্র বিনাশী কর্মকাণ্ডকে আদর্শিক লড়াই হিসেবে আখ্যায়িত করে এর বিস্তার ঘটিয়েছে। আর এর প্রকাশ ঘটতে থাকে আল-কায়েদাসহ নানা জঙ্গিগোষ্ঠীর উত্থানে। হালে যা আরও ভয়াবহ আকারে বিস্তার লাভ করেছে ইসলামিক স্টেট বা আইএস নামে।

এখানে বলা প্রয়োজন, এই যে ছায়ার সঙ্গে যুদ্ধ তাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। আর সামগ্রিক যুদ্ধ এক ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে মানব সভ্যতার জন্য। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে এই প্রতিজ্ঞা করা হয়েছিল যে, আর যুদ্ধ নয়। কিন্তু তাও মানা হয়নি। কারণ যুদ্ধ অনেকের জন্য ব্যয়বহুল এক অতি লাভজনক ব্যবসা। ২০০৯ সালে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ যোশেফ স্টিগলিজ ও লিন্ডা বাইস্লস-এর বিখ্যাত গ্রন্থ দ্য থ্রি ট্রিলিয়ন ডলার ওয়ার :  দ্য ট্রু কস্ট অফ দ্য ইরাক কনফ্লিক্ট-এ হিসাব দিয়েছেন যে, ওই সময় পর্যন্তই শুধুমাত্র ইরাক যুদ্ধে খরচ হয়েছে কম করে হলেও তিন ট্রিলিয়ন ডলার। তাদের হিসেবে মাত্র এক ট্রিলিয়ন অর্থ খরচ করলে ৮০ লাখ বাড়ি বানানো যায়, ১ কোটি ৫০ লাখ শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া যায় প্রতি বছর, ১২ কোটি ছেলেমেয়ের শিক্ষা দেওয়া যায় ও ৫৩ কোটি শিশুর স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া যায় প্রতি বছরে এবং ৪ কোটি ৩০ লাখ ছাত্রছাত্রীকে চার বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার খরচ চালানোর বৃত্তি দেওয়া সম্ভব। তাহলে এ পর্যন্ত যুদ্ধ খাতে যে ব্যয় হয়েছে তাতে কত বাড়ি বানানো যেত, কত স্কুল প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হতো আর কত শিশুই বা শিক্ষা, স্বাস্থ্য সুবিধা লাভ করতে পারত। যোশেফ স্টিগলিজ এবং লিন্ডা বাইস্লস-এর হিসাবে, ইরাক যুদ্ধে ব্যয়িত অর্থের ছিটেফোঁটা খরচ করলেও ২০১৫ সালের মধ্যে যারা শিক্ষাবিহীন তাদের শিক্ষার আলো দেখানো সম্ভব ছিল। তারা এমন তথ্যও দিয়েছেন যে, যুদ্ধের প্রচার-প্রচারণায়ই বছরে খরচ হয় ৮০০ কোটি ডলারের মতো। এটি ওই সময়ের হিসাব। কিন্তু আগেই বলা হয়েছে, যুদ্ধ হচ্ছে এক লাভজনক ব্যবসার নাম। এই ব্যবসা এক পক্ষের নয়, যারা জড়িত তাদের সবার জন্য, জঙ্গিদের জন্যও। কাজেই বিষয়টি স্পষ্ট যে, এসব যুদ্ধ মানব জাতির কল্যাণের বিপরীতে একটি ব্যয়বহুল অবস্থার সৃষ্টি করেছে। আর এটি হয়েছে বিশ্বব্যাপী ভারসাম্যহীনতার কারণে সৃষ্ট নেতিবাচক ধর্মীয় জঙ্গিবাদের উত্থানের কারণে। কারণ ইতিহাস কখনোই ভারসাম্যহীনতার পক্ষে নয়।

শুধু যুদ্ধে ব্যয়ের হিসাবটিই যে প্রধান তা-ই নয়। যেসব দেশের ওপর হামলা হয়েছে তার তেল-সম্পদসহ সামগ্রিক ব্যবস্থার ওপরে যে চরম দুর্দশা নেমে এসেছে তাতেও সব যুদ্ধ শেষ হয়ে যায়নি। এমনকি মানুষ যে বাস্তুচ্যুত হচ্ছে বা হয়েছে তাতেও ক্ষ্যান্ত দেয়নি। বরং জম্ন নিয়েছে আল-কায়েদা, আইএসের মতো ভয়ঙ্কর সংগঠনের। পরিস্থিতি দিনে দিনে ভয়ঙ্কর হচ্ছে। কারণ চেহারাবিহীন, ছায়াবিহীন, অদৃশ্য সন্ত্রাস ও উগ্রপন্থা অনেক বেশি ভয়াবহ।

এ কথা মনে রাখতে হবে যে, বর্তমান বিশ্ব ব্যবস্থায় আল-কায়েদা বা আইএস কোনোক্রমেই কোনো আদর্শ নয়। বরং এটি হচ্ছে একটি নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার নাম। তারা এখন যুদ্ধ করছে, দখল করছে, মানুষের জীবনহরণ করছে এবং অর্থ লেনদেনের সামগ্রিক ব্যবস্থার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে। যুদ্ধের লাভজনক একটি পক্ষও তারা। যুদ্ধকে তারা আদর্শ বলে প্রচার করতে চাইছে। কিন্তু যুদ্ধ বা ছায়াবিহীন আক্রমণ কোনো আদর্শ হতে পারে না। তারা তাদের নেতিবাচক আদর্শকে ছড়িয়ে দিতে চাচ্ছে বিশ্বব্যাপী। ‘চরমপন্থা এবং জঙ্গিবাদ’ এখন এককেন্দ্রিক বিশ্ব ব্যবস্থার বিপরীতে দাঁড়িয়ে আরেকটি নতুন অবস্থার সৃষ্টি করেছে, যা সমগ্র বিশ্বকে করে তুলেছে আতঙ্কগ্রস্ত এবং বিপদাপন্ন। নতুন যে ব্যবস্থার সৃষ্টি হয়েছে তার নাম হচ্ছে আতঙ্ক এবং জীবনবিনাশী কর্মকাণ্ড। আর এর সবচেয়ে বড় শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। আর এ থেকে মুক্ত নয় পশ্চিম থেকে পূর্ব, উত্তর থেকে দক্ষিণ কেউই। একযোগে সব মানুষ, সব দেশের এমন আতঙ্কের পরিবেশ বিশ্ব কখনোই আগে দেখেনি। এমনকি দুটো বিশ্বযুদ্ধের সময়েও নয়।

কিন্তু যুদ্ধ বা আক্রমণ কোনো সমাধান নয়। এই স্বতঃসিদ্ধ বাক্যটি এখন অকার্যকর। যুদ্ধ আরও যুদ্ধের জম্ন দেয়, সংঘাত সৃষ্টি করে সংঘাতের। এটাই হচ্ছে সাধারণ মানুষের নিয়তি। প্যারিসের ঘটনা তারই প্রমাণ।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর সময়ে প্যারিসে এমন বর্বরতম হামলার ঘটনা এই প্রথম। তবে এর মধ্যে গুণগত পার্থক্য আছে। কারণ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে হামলা ছিল রাষ্ট্রীয় বাহিনীর। আর এবারের হামলা হচ্ছে ওই চেহারাবিহীন, ছায়াহীন, অদৃশ্য সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ফলে। আইএস এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। ফ্রান্স সরকারও ধরে নিয়েছে এটি আইএসের কর্মকাণ্ড। এখানে বলা প্রয়োজন যে, এর ফলে যুদ্ধাক্রান্ত দেশগুলো থেকে যাওয়া সাধারণ মানুষ যারা শরণার্থী হয়েছে, তারাই ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে নিদারুণ আশ্রয় সংকটের মধ্যে পড়বেন।

বাংলাদেশেও গেল কিছু দিন ধরে জঙ্গি তৎপরতা লক্ষণীয়। আগের বছরগুলোতে এই তৎপরতা স্থানীয় পর্যায়ের বলে ধরে নেওয়া যায়। তবে ২০১৫-তে এসে আমরা প্রথম আল-কায়েদা ভারতীয় শাখা এবং এর কিছু দিন পরে আইএসের উপস্থিতির কথা জানতে পারছি। তবে বাংলাদেশ সরকার আইএস ও আল-কায়েদা ভারতীয় শাখার উপস্থিতি নেই বলে জানিয়ে দিয়েছে। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী বারবার বলছেন, এই প্রচারণা আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ। ফ্রান্সের সঙ্গে আমাদের বিশাল অর্থনৈতিক দূরত্ব রয়েছে। তবে ফ্রান্স সরকারের সঙ্গে আমাদের সরকারের বেশ কিছু পার্থক্যও রয়েছে। ফ্রান্স সরকার এই হামলার সঙ্গে সঙ্গেই ওই দেশের ক্ষমতাসীনদের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দলকে কোনো তদন্তের আগেই তারা জড়িত ছিল এমন কথা বলেনি। এমন মহাবিপর্যয়ের মধ্যেও তারা এটিকে রাজনৈতিক স্বার্থে কখনোই ব্যবহার করবে না, এমন চিন্তাও তাদের মাথায় নেই। ফরাসি দেশে কোনো জজ মিয়াও নেই। সেখানে বিরোধী নেতা-নেত্রীর ওপরে গ্রেনেড হামলাও হয় না আবার তাদের সভা-সমাবেশ করতে বাধা দেওয়া, গ্রেফতার করা কিংবা অফিসবন্দী করে রাখার কোনো নজিরও নেই। হামলাসহ কোনো প্রশ্নেই দেশকে রাজনৈতিক বিভাজনে বিভক্ত করার মতো কোনো কর্মকাণ্ড, এমনকি বক্তব্য পর্যন্ত দেওয়া হয় না। জঙ্গি হামলায় এত মানুষের হতাহতের ঘটনার পরও এর কোনোটাই দেখা যায়নি। তারা তাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সব সময়ই স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেয়। সবচেয়ে বড় কথা, যে সময় যা বেশি প্রয়োজন অর্থাৎ রাজনৈতিক ঐক্য এবং জনগণসহ পক্ষাপক্ষ নির্বিশেষে পরিস্থিতি মোকাবিলার প্রত্যয় ও উদ্যোগ, তা তারা নিয়েছেন। কিন্তু আমাদের দেশে ওই সংস্কৃতিটি নেই। ওই দেশে ‘না বলার রাজনৈতিক সংস্কৃতি’ বা ‘পলিটিক্স অফ ডিনায়েল’ও নেই। কারণ ফ্রান্সে পুরো মাত্রায় গণতন্ত্র বিদ্যমান রয়েছে। সরকারও যেমন গণতন্ত্র চর্চা করে, সাধারণ মানুষকেও গণতন্ত্র চর্চায় কোনোভাবেই বাধাবিঘœ সৃষ্টি করতে দেওয়া হয় না।

ফ্রান্সের মতো উন্নত দেশ যেখানে কোন মাত্রায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা বিদ্যমান তা সহজেই অনুমান করা যায়। সে দেশটিতেই যখন এমন ঘটনা আইএস ঘটাতে পারে, তখন আমাদের দেশের নিরাপত্তাসহ সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তা করা জরুরি। আর এর জন্য প্রয়োজন সামগ্রিকভাবে দলমত সব পক্ষের ঐক্য। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হচ্ছে, আমাদের দেশে তা নিদারুণভাবে অনুপস্থিত। আর এই অনুপস্থিতি ক্ষমতাসীনদেরই সৃষ্ট এবং তা করা হয়েছে ক্ষমতার স্বার্থেই। এই অনুপস্থিতি পূরণের প্রধানতম দায়িত্ব সরকারের। উন্নত দেশের কথা বাদই দেওয়া যাক, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও জাতীয় বিপর্যয় ও দুর্যোগের সময়ে ক্ষমতাসীনদের উদ্যোগে শুধুমাত্র প্রধান বিরোধী দলকেই নয়, অপরাপর দলকে নিয়ে শলাপরামর্শ করা হয়Ñ কীভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করা যাবে তার জন্য। জঙ্গিবাদের বিপদটি আমাদের সামনে হাজির হয়েছে, তা সমাধানে এ কারণেই সংলাপের কথা বলা হচ্ছে। সংলাপের পক্ষে জোরালো যুক্তি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সিনিয়র গবেষক এবং বাংলাদেশ বিষয়ক বিশেষজ্ঞ লিসা কার্টিজ প্রভাবশালী ফরেন পলিসি ম্যাগাজিনে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে লিখিত একটি নিবন্ধে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও তা চায়। দেশের মানুষের মনোভাবও তাই। বিএনপি ইতিমধ্যে এমন প্রস্তাব দিয়েছে। তবে তাদের এ প্রস্তাবের মধ্যে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে কি নেই তা স্পষ্ট নয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী এসব প্রস্তাব সরাসরি নাকচ করে দিয়েছেন। এই না বলার সংস্কৃতি থেকে বের হতে না পারলে জঙ্গিবাদ দমন বা প্রতিরোধ সম্ভব নয় এটা নিশ্চিত।  কারণ রাজনৈতিক মতপার্থক্য বিদ্যমান থাকা ও গণতন্ত্রহীনতার পরিবেশকেই জঙ্গি শক্তিগুলো নিজেদের জন্য অতিমাত্রায় সহায়ক পরিস্থিতি হিসেবে বিবেচনা করে।

কাজেই এ কথাটি সহজেই বলা যায়, না বলার রাজনৈতিক সংস্কৃতি থেকে বের হতে না পারলে জঙ্গিবাদ সহায়ক পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে এবং বিপদটি আরও বাড়বে।

                লেখক : সম্পাদক, আমাদের বুধবারডটকম

সর্বশেষ খবর