সোমবার, ১৬ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

ডিসেম্বরে সাকা ও মুজাহিদের রায় কার্যকর হতে পারে

তুরিন আফরোজ

ডিসেম্বরে সাকা ও মুজাহিদের

রায় কার্যকর হতে পারে

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ বলেছেন, খুব অল্প সময়ের মধ্যেই মামলার রিভিউ আবেদন নিষ্পত্তি হয়। সেক্ষেত্রে আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ও সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর রিভিউ আবেদন নিষ্পত্তি খুব দ্রুত শেষ হবে। মামলা দুটি এখন যে পর্যায়ে আছে তাতে আগামী ডিসেম্বর মাসের প্রথমার্ধের মধ্যেই রায় কার্যকর হতে পারে। গত শনিবার চ্যালেন আইয়ে টকশোতে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। জিল­ুর রহমানের উপস্থাপনায় টকশোতে আরও অংশ নেন বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম। উপস্থাপকের প্রশ্নের জবাবে তুরিন আফরোজ বলেন, সাকা চৌধুরীর পাঁচজন নতুন সাক্ষীর আবেদন খারিজ হয়েছে। ১৮ নভেম্বরের মধ্যে রিভিউ আবেদনের পুরো কার্যক্রম শেষ হতে পারে। অন্যদিকে আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের রিভিউ আবেদন কার্যক্রম ২০ নভেম্বরের মধ্যে শেষ হতে পারে। কারণ তাদের রিভিউ পিটিশন ছাড়া আর কিছু নেই। তিনি বলেন, সাকা চৌধুরীর সাফাই সাক্ষী আদালত গ্রহণ করেননি। না করার কারণ হচ্ছে, বিচারটি নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। বিচারাধীন বিষয় নয়। তিনি সাফাই সাক্ষীর চার বছর সময় পেয়েছেন। অথচ এই সময় নানা ধরনের কালক্ষেপণ করেছেন। প্রথমে সাড়ে তিন হাজার সাক্ষী ছিল। পরে ১৬০০। সেখান থেকে পাঁচজন সাফাই সাক্ষী আনতে বললেন আদালত। কিন্তু তিনি দুজন ছাড়া আর কাউকে আনতে পারেননি। এখন এসে আবার সাফাই সাক্ষীর আবেদন নজিরবিহীন ঘটনা। তুরিন আফরোজ বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে নানা ধরনের রাজনীতি আছে। আন্তর্জাতিক মহলে নানা ধরনের সমালোচনা ছিল। এখন আবার সব দেশই আমাদের বিচার ব্যবস্থার সুনাম করছে। বিরোধী একটি পক্ষও নানা ধরনের প্রশ্ন তোলার চেষ্টা করেছে। আন্তর্জাতিকভাবেও তারা প্রচারণা চালিয়েছে। অনেক সময় বলা হয়, সরকারের পক্ষ থেকে প্রভাব বিস্তার করে বিচার হচ্ছে। কিন্তু আমাদের বিচার বা প্রসিকিউশনের কোনো কার্যক্রমে সরকারের কোনো পক্ষ থেকেই কখনোই কিছু বলা হয়নি। এমনটি আমরা অনুভব করিনি। তিনি আরও বলেন, এই বিচারের ক্ষেত্রে কয়েকটি বিভক্ত রায় পেয়েছি। প্রভাব থাকলে এমনটি হতো না। তবে আন্তর্জাতিক জনমতের ক্ষেত্রে আমাদের সীমাবদ্ধতা আছে। মিশনগুলোর অনেক কাজ করা উচিত ছিল। সরকারের পক্ষ থেকে এখন কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। হাউস অব কমন্সে একটি সেমিনারে সরকার অনেক কিছু বলেছে। তবে পাঁচ বছর আগে করতে পারলে ভালো হতো।

অ্যামনেস্টি যা করেছে সেখানে সরকার কড়া জবাব দিয়েছে। প্রথম শুরু থেকে এটা করলে অ্যামনেস্টি এমন বিবৃতি দিতে পারত না। তুরিন আফরোজ বলেন, বর্তমানে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, অ্যামনেস্টি, দেশের একটি রাজনৈতিক দলের পক্ষে সুবিধাভোগী কিছু লোক, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আত্নীয় ছাড়া কেউ সমালোচনা করছে না। তিনি বলেন, রাজনীতি ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আলাদা। একটি দলের আইনজীবী বলছেন তাদের সবাইকে বিচার করবেন। তারা এই বিচারকে রাজনৈতিক হাতিয়ার করছেন। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই তারা এসব বক্তব্য দিচ্ছেন। তারা বলছেন আমরাও বিচার চাই, তবে। এই তবে গোষ্ঠী খুবই ভয়ঙ্কর। স্বচ্ছতা থাকতে হবে, আন্তর্জাতিক মান থাকতে হবে। আন্তর্জাতিক মান নিয়েই বিচার কার্যক্রম চলছে। রাজনৈতিক পরিবর্তন ঘটলে আমাকে ফাঁসিতে ঝোলানো হবে না তার নিশ্চয়তা কি?  তিনি বলেন, ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা আরও বাড়ানো উচিত। একটি ট্রাইব্যুনাল নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। আমার হাতে এখন আটটি মামলা রয়েছে। এই মামলা দুজনের হাতে দিলে আরও তাড়াতাড়ি হতো না? বর্তমান মামলাগুলো লোকাল লেভেলের অপরাধী। তাদের এভিডেন্স পাওয়া যায় না। সংশ্লিষ্ট লোকজন চলে গেছে, অনেক ক্ষেত্রে গ্রামটিই নেই।  বড় অপরাধীর ক্ষেত্রে যা সহজ ছিল। সংখ্যা বাড়াতে হবে, ট্রাইব্যুনালের লোকবল বাড়াতে হবে। আমি অনেক আশাবাদী। সামনে নিশ্চিত এই বিচার নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাবে।

সর্বশেষ খবর