মঙ্গলবার, ১৭ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

বিতর্কিতদের রাখতে হবে কেন

উপমন্ত্রীর যথেচ্ছতার অবসান কাম্য

যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয় মন্ত্রিত্বের ক্ষেত্রে কতটা সফল তা নিয়ে সংশয় থাকলেও নিজেকে বিতর্কিত করার ক্ষেত্রে যে তার জুড়ি নেই তা ইতিমধ্যে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন। রাত দুপুরে অপ্রকৃতিস্থ অবস্থায় লোকের বাড়িতে গিয়ে তুলকালাম ঘটানো, সচিবালয়ে যুগ্ম সচিবের কক্ষে ভাঙচুর এবং আরেক সিনিয়র কর্মকর্তার কক্ষে তালা লাগানো ইত্যাদি করিৎকর্মার মাধ্যমে তিনি ইতিপূর্বে সংবাদ মাধ্যমের শিরোনাম হয়েছেন- এ তথ্যটি দেশের লাখ লাখ মানুষের জানা। অর্ধশত মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর ভিড়ে সুকর্মের মাধ্যমে একজন উপমন্ত্রীর সংবাদ শিরোনামে ওঠার সুযোগ কম থাকায় তিনি হয়তো বিকল্প হিসেবে দেশবাসীর দৃষ্টি আকর্ষণে যথেচ্ছতার পথ বেছে নিয়েছেন। সচিবালয়ে ভাঙচুর ও তালা লাগানোর ‘গর্বিত কর্মকাণ্ডের’ রেশ না কাটতেই তিনি নিজ জেলা নেত্রকোনার কালিয়ারা গাবরাতলী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানসহ আওয়ামী লীগ নেতাদের পিটিয়েছেন। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলনে নিজের চাচাতো ভাইকে সভাপতি পদে দাঁড় করিয়েছিলেন উপমন্ত্রী। কাউন্সিলরদের ভোটে তার জয়ের সম্ভাবনা না থাকায় তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদ্য বিদায়ী সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন এবং তার সমর্থকদের ওপর চড়াও হন। কিল ঘুষি মেরে অপদস্থ করেন এই প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা ও জনপ্রতিনিধিকে। সবারই জানা প্রজাতন্ত্রের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রীরা যখন শপথ নেন তখন তারা অনুরাগ-বিরাগের বশবর্তী হয়ে কোনো কাজ না করার অঙ্গীকারে আবদ্ধ হন। কিন্তু উপমন্ত্রী জয় সে শপথের প্রতি কতটা অঙ্গীকারাবদ্ধ তা সন্দেহাতীত নয়। প্রশ্ন উঠেছে বিতর্কে জড়িয়ে পড়াকে যিনি অভ্যাসে পরিণত করেছেন তাকে মন্ত্রিসভায় রাখার এত দায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বোধ করছেন কেন? যারা সরকারের সুনামের জন্য বিড়ম্বনা সৃষ্টি করছেন তাদের বল্গাহীনতা কি চলতেই থাকবে? নীতিনির্ধারকদের এ দুর্বলতা আদৌ শুভ কিনা সংশ্লিষ্টদের ভেবে দেখা উচিত। বর্তমান সরকার দেশে আইনের শাসন এবং জবাবদিহিতায় বিশ্বাসী বলে দাবি করেন। কিন্তু এ দাবিকে নিষ্প্রভ করতে যারা সাংঘর্ষিক ভূমিকা পালন করছেন, অকারণে বিতর্কে জড়িয়ে পড়ছেন, তাদের ব্যাপারে নমনীয় হওয়া যে প্রকারান্তরে আত্মঘাতী তা সময়মতো বুঝতে হবে। সংশ্লিষ্টদের যথেচ্ছতার ইতি ঘটাতে এ বিষয়ে সরকার প্রধান উদ্যোগী হবেন এমনটিই প্রত্যাশিত।

সর্বশেষ খবর