বৃহস্পতিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

সাকা ও মুজাহিদের চূড়ান্ত রায়

ন্যায়বিচারের দৃষ্টান্ত হিসেবে বিবেচিত হবে

দেশের সর্বোচ্চ আদালত মুক্তিযুদ্ধের সময় গণহত্যা ও বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী এবং জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসির আদেশ বহাল রেখেছেন। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের চার সদস্যের এই চূড়ান্ত আদেশ নানা কারণে তাৎপর্যের দাবিদার। সাকা চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষাবলম্বনকারীদের জন্য সাক্ষাৎ যমদূত হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন। তার নেতৃত্বে চট্টগ্রামে একাধিক গণহত্যার অভিযোগ রয়েছে। নৃশংস নির্যাতনের শিকার হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষাবলম্বনকারী অসংখ্য মানুষ। এ রায়ের মাধ্যমে সাকা চৌধুরীর হাতে যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের পরিবার দীর্ঘ চার দশক পরে হলেও সান্ত্বনা খুঁজে পাবেন। একইভাবে যারা পৈশাচিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তাদের জন্যও এটি ন্যায়বিচার পাওয়ার স্বস্তি বলে বিবেচিত হবে। একইভাবে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের নেতৃত্বদানকারী সংগঠন আল বদর বাহিনীর শীর্ষ কমান্ডার মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখার ঘটনাকে বহুল প্রত্যাশিত বলে মনে করা যেতে পারে। মুক্তিযুদ্ধে বুদ্ধিজীবী হত্যার মাধ্যমে বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার পরিকল্পনা নিয়েছিল পাকিস্তানি দখলদাররা। পাকিস্তানি হানাদারদের এ জঘন্য পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আল বদর বাহিনীর ভূমিকা দেশের প্রতিটি মানুষের জানা। মুজাহিদের এ চূড়ান্ত রায় শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্যদের চার দশকের হাহাকার কিছুটা হলেও প্রশমিত করবে। সাকা চৌধুরী দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির একজন শীর্ষ নেতা। একজন সাবেক মন্ত্রী এবং বেশ কয়েকবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য। মুজাহিদও একটি রাজনৈতিক দলের অন্যতম শীর্ষ নেতা এবং একজন সাবেক মন্ত্রী। তবে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে তাদের বর্তমান অবস্থান নয়, মুক্তিযুদ্ধকালীন অপরাধের বিষয়টিই আদালতের বিবেচনায় এসেছে। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায়

এ রায় দৃষ্টান্ত হিসেবে বিবেচিত হবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

সর্বশেষ খবর