রবিবার, ২২ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

মালিতে জঙ্গি হামলা

বিশ্ব সমাজকে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে

পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালির এক অভিজাত হোটেলে জঙ্গি হামলায় অন্তত ২৭ জন নিহত হয়েছে। প্যারিসে জঙ্গি হামলায় ১২৯ জন নিহত হওয়ার ঘটনার জের না কাটতেই মালিতে জঙ্গি হামলার এ ঘটনা ঘটল। আল-কায়েদার সঙ্গে জড়িত একটি আফ্রিকান জঙ্গি গোষ্ঠী এ হামলার দায় শিকার করেছে। মুসলিমপ্রধান মালি একটি সাবেক ফরাসি উপনিবেশ। সে দেশে ফরাসি সৈন্যও রয়েছে। অন্যদিকে যে অভিজাত হোটেলে জঙ্গিরা হামলা চালিয়েছে সেটি আমেরিকানদের মালিকানাধীন। গত শুক্রবার স্থানীয় সময় ৭টায় কয়েকজন বন্দুকধারী হোটেলে ঢোকে। নিরাপত্তারক্ষীরা তাদের বাধা দিতেই তারা গুলি ছোড়া শুরু করে। তারপর জঙ্গিরা হোটেলের ১৭০ জন বোর্ডার এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীকে জিম্মি করে। মালিতে অবস্থানরত জাতিসংঘ শান্তি বাহিনী ও ফরাসি বাহিনী জঙ্গিদের কবল থেকে জিম্মিদের উদ্ধারে মালির নিরাপত্তা বাহিনীকে সহায়তা করে। এ সময় অন্তত ২৭ জন নিহত হয়। আফ্রিকার যেসব এলাকায় জঙ্গিদের তৎপরতা রয়েছে তার মধ্যে মালি অন্যতম। গত আগস্টে এ দেশটিতে জঙ্গিদের হাতে জাতিসংঘের দুজন কর্মীসহ ১৩ জন নিহত হয়। প্রাচীন সভ্যতার দেশ মালিতে ইসলাম প্রচার হয় একাদশ শতাব্দীর দিকে। দ্বাদশ শতাব্দীর দিকে মালির রাজা কনবরু ইসলাম গ্রহণের পর তৎকালীন রাজধানী ডিজেনিতে তার রাজপ্রাসাদ ভেঙে যে মাটির মসজিদ তৈরি করেন তা বিশ্বের অন্যতম দর্শনীয় স্থান হিসেবে বিবেচিত। শিক্ষা-দীক্ষায় এবং সাংস্কৃতিক চেতনায় যে মালিকে আফ্রিকার অন্যতম অগ্রবর্তী দেশ হিসেবে ভাবা হতো, গোত্রগত বিরোধ ও জঙ্গিবাদী তৎপরতায় তা আজ সন্ত্রাস উপদ্রুত দেশ হিসেবে পরিচিত। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বও প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে উগ্র ধর্মীয় চেতনার ধারক-বাহক বিভিন্ন জঙ্গি গ্রুপের কর্মকাণ্ডে। ফ্রান্সের পর মালিতে জঙ্গি হামলা অশান্তির প্রতিভূ বলে বিবেচিত জঙ্গি গ্রুপগুলোর বিরুদ্ধে বিশ্বসমাজের প্রতিরোধ গড়ে তোলার তাগিদ সৃষ্টি করেছে।  জঙ্গিবাদীরা তাদের মতলব হাসিলের জন্য ধর্মকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করার যে চেষ্টা চালাচ্ছে তা প্রতিহত করতে মালিসহ দুনিয়ার সব দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষকেই এগিয়ে আসতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর