মঙ্গলবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

প্যারিস হামলা ও মুসলমানদের আত্মসমালোচনার প্রয়োজনীয়তা

ইফতিখার রশীদ

১৩ নভেম্বর প্যারিসের কয়েকটি স্থানে সন্ত্রাসীদের বোমা হামলা ও গুলিবর্ষণে নিহত হয়েছেন অন্তত ১২৯ জন। সন্ত্রাসীদের এ হামলা গোটা বিশ্বকে স্তম্ভিত ও ক্ষুব্ধ  করেছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে এটাই প্যারিসে সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী হামলা।

এ হামলা আমাদের শোকাহত করেছে, মনে করিয়ে দিয়েছে ৯/১১, বালি ৭/৭ এবং মুম্বাই হামলার কথা। প্যারিসে হামলার আগের দিনই লেবাননের বৈরুতে আরেকটি আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণে নিহত হয়েছেন ৪১ জন। প্যারিস ও বৈরুত- দুই স্থানেই হামলার দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেট ফর ইরাক অ্যান্ড লেভান্ত (আইএসআইএল)। এসব ইসলামী মৌলবাদী সন্ত্রাসী হামলায় যে রক্তপাত হয়েছে, মানুষের যে নিদারুণ কষ্ট ও দুর্ভোগ হয়েছে, তা নিঃসন্দেহে মানবতার বিপন্ন অবস্থার স্বাক্ষর রেখে গেছে। ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য থাকল আমাদের আন্তরিক সমবেদনা।

বিপন্ন প্যারিসের সঙ্গে সংহতির সঙ্গে সঙ্গে এখন মুসলিমদের আত্মানুসন্ধানের সময় হয়েছে। এই শোচনীয় পরিস্থিতির কারণ এবং ইসলামী মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদের সুদূরপ্রসারী ফলাফল কী হতে পারে তা ভেবে দেখা একান্ত প্রয়োজন। যখনই ইসলামের এসব স্বঘোষিত ‘অভিভাবক’ কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটায়, যারা মুসলিম নাম ধারণ করেন তাদের অন্যান্য সম্প্রদায়ের কাছ থেকে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার শিকার হতে হয়।

এ ঘটনার পরে যখনই আমরা কোনো দেশে ভিসার জন্য আবেদন করব, বিদেশে চাকরি খোঁজার চেষ্টা করব কিংবা বিমানবন্দরে সিকিউরিটি চেকপোস্টে দাঁড়াব, আমাদের সন্দেহের চোখে দেখা হবে (এবং সম্ভবত যৌক্তিক কারণেই)। বিমানবন্দরে এ ধরনের অতিরিক্ত এবং ‘যথেচ্ছ’ অনুসন্ধান খুব প্রীতিকর কিছু নয়, কিন্তু এ জন্য নিজেদের ছাড়া আর কারও ওপরে দোষ চাপানোর সুযোগ মুসলিমদের নেই।

ধর্মীয় উন্মাদনা, মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদের যে কোনো সমালোচনার বিরুদ্ধে ‘ইসলামোফোবিয়া’ এক ধরনের অজুহাত হিসেবে ইসলামী জঙ্গিবাদীরা প্রতিষ্ঠিত করে ফেলেছে। তার পাশাপাশি বাস্তবতা হলো, সারা পৃথিবীতেই মুসলমানদের সম্পর্কে বিরূপ ধারণা ও নেতিবাচক মনোভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে এটা অবশ্যই সত্য। ‘বেনিফিট অব ডাউট’-এর সুবিধা আমরা দীর্ঘদিন ধরেই পেয়েছি, কিন্তু সব মুসলিম ও ইসলাম ধর্মকে ইসলামী জঙ্গিবাদের সঙ্গে এক পাল্লায় মাপা মানুষের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে বলেই আমার কাছে প্রতীয়মান হয়।

সত্যিই কি আমরা এ অধঃপতনের জন্য অন্যান্য সম্প্রদায়কে দায়ী করতে পারি? আমরা- আমি সার্বিকভাবে মুসলমানদের কথা বলছি- এ শোচনীয় পরিণতি বয়ে এনেছি; ইসলামী জঙ্গি, যারা আমাদের কাছ থেকে ইসলামকে ছিনতাই করেছে, তাদের বিরুদ্ধে সমাজের সব স্তরে সাহসের সঙ্গে দাঁড়াতে না পারার কারণেই আজ আমরা এ পরিস্থিতির শিকার।

সত্যি বলতে কী, পশ্চিমা বিশ্ব এ পরিস্থিতিতেও অনেক সহনশীল ও সংযমী ভূমিকা রেখেছে বলেই আমি মনে করি। গত বছর সিডনির লিন্ড ক্যাফেতে সংঘটিত জিম্মি সংকটের পর মুসলিমরা প্রতিশোধের আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছিল এবং ইসলামী পোশাকে গণপরিবহন ও রাস্তাঘাটে চলাচল হয়ে উঠেছিল ভীতিকর। অস্ট্রেলিয়ানরা তখন প্রশংসনীয়ভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে মুসলমানদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে কথা বলেছে, হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করেছে এবং তাদের সমর্থন ও সাহস দিয়েছে একসঙ্গে গণপরিবহনে চলার জন্য।

সাম্প্রদায়িক সেতুবন্ধ তৈরির জন্য এটি অসাধারণ উদ্যোগ ছিল, সন্দেহ নেই। কিন্তু নিজেদের দিকে না তাকিয়ে, নিজেদের ভিতরে ক্রমে পরিপুষ্ট হতে থাকা ইসলামী জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কিছু না করে অন্যান্য সম্প্রদায়ের সহানুভূতির ওপরে আর কতদিন নির্ভর করব আমরা? প্রতিটি সন্ত্রাসী হামলার পরে নিশ্চিতভাবেই মুসলিমরা কোনো না কোনো অদ্ভুত ষড়যন্ত্রতত্ত্ব হাজির করে এবং কেবল ইসলামী জঙ্গিদের বাদ দিয়ে সবার উদ্দেশে দোষারোপ করে। এ তর্ককে আমরা বহুদূর টেনে নিয়ে যাই এবং ইসলামী জঙ্গি-সন্ত্রাসীরা যখন বোমা মেরে নিরীহ মানুষ হত্যা করে তখন ‘জঙ্গিরা সত্যিকারের মুসলিম নয়’ বলে দায় এড়িয়ে যাই। কিন্তু অনুরূপ ব্যক্তি কিংবা গোষ্ঠী ঠিকই যখন বিভ্রান্তিকর, বিদ্বেষমূলক এবং বিভেদ সৃষ্টিকারী কুসংস্কারের মাধ্যমে সব দেশেই মুসলমানদের মাঝে মৌলবাদ ছড়ানোর চেষ্টা করে, তখন সে ক্ষেত্রে আমাদের নীরবতা অন্তত দুঃখজনক এবং বিপজ্জনক।

পশ্চিমা দেশগুলোতে যা কিছু ‘পশ্চিমা’ তার সবই ইসলামী জঙ্গিরা প্রত্যাখ্যান করতে চায়। কিন্তু অবাক ব্যাপার হলো এসব দেশে থেকে সেখানকার সব সুযোগ-সুবিধা নিতে তারা কখনো পিছপা হয় না। এরা আমাদের তাদের তথাকথিত ‘হালাল’ সুপারঅ্যানুয়েশন স্কিমের জন্য নিবন্ধন করতে বলে যেটা নাকি পশ্চিমা ‘অনৈতিকতা’ থেকে মুক্ত। কিন্তু একই সরকারের কাছ থেকে আর্থিক সাহায্য, চিকিৎসাসেবা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নেওয়ার বেলায় তারা কখনই নারাজ নয়। গণতন্ত্রকে তারা ঘৃণা করে, কিন্তু গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার সুযোগ নিয়ে মৌলবাদী প্রচারণা চালাতে তাদের দ্বিধা নেই। ইসলামী জঙ্গিদের এতসব মিথ্যাচার ও ভণ্ডামি সত্ত্বেও তারা সব সময়ই পার পেয়ে গেছে সমাজে এবং সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পেরেছে তাদের অসহিষ্ণু এবং মৌলবাদী আচরণের বিরুদ্ধে আমাদের শক্তিশালী অবস্থান নিতে ব্যর্থতার কারণে।

মসজিদ, হালাকা (আলোচনা সভা) এবং ইন্টারনেটভিত্তিক ফোরামগুলো ব্যবহার করে এসব অপপ্রচারণার মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করার আমরা কি বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে পেরেছি? তাদের বক্তব্যের বিভ্রান্তিগুলো ধরিয়ে দিতে পেরেছি? তাদের মিথ্যাচারের বিপরীতে সত্য তুলে ধরেছি? ইসলামী জঙ্গিরা যখন তাদের বিভ্রান্তিমূলক মৌলবাদী তত্ত্বের মাধ্যমে আমাদের সমাজের মধ্যেই সৌদি আরব-স্টাইল জীবনযাপন, শাসন প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা চালায়, তখন আমরা নিশ্চিন্তে চুপ করে থাকি। এরপর এসব জঙ্গির সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পরে যেন সহসাই আকস্মিকভাবে আমাদের বোধোদয় হয়।

প্রায় সময় এমনও দেখা যায় তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে বানোয়াট ছবি প্রচার করে মুসলমানদের দুঃখ-দুর্দশার একটি অতিরঞ্জিত চিত্র উপস্থাপন করার অপচেষ্টা করে জঙ্গি কার্যক্রমকে বৈধতা দেওয়ার জন্য। বাস্তবতা হলো, পৃথিবীর প্রত্যেক মানুষেরই কিছু না কিছু হতাশার জায়গা আছে, কিন্তু ইসলামী জঙ্গিদের মৌলবাদী কুসংস্কারের কারণে অসহিষ্ণুতা এবং গণতন্ত্রকে প্রত্যাখ্যান করার মানসিকতার জন্য অনেক মুসলমান বার বার এ ধরনের সন্ত্রাসী কাজের দিকে ঝুঁকছে।

অন্যের ওপর দোষ চাপানো খুব সহজ, কিন্তু আজ মুসলিমদের নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থেই ইসলামী মৌলবাদের বিরুদ্ধে আমাদের আরও অনেক বেশি সোচ্চার হতে হবে। লেবানন ও অন্যান্য স্থানে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার ক্ষেত্রে দেখা গেছে এসব ঘটনায় মুসলিমরা শুধু ক্ষতিগ্রস্তই হয় না, তবে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইতেও তারাই অগ্রগামী। বিপুলসংখ্যক শান্তিপ্রিয় মুসলিম কোনোভাবেই গুটিকয় রক্তপিপাসু ইসলামী সন্ত্রাসীর কাছে জিম্মি হয়ে থাকতে পারে না।

আমার দৃঢ় বিশ্বাস জঙ্গিদের প্রতি অধিকাংশ মুসলিমেরই সমর্থন বা সহানুভূতি নেই। তবে আমাদের দায় এড়িয়ে যাওয়ার সংস্কৃতি থেকে বের হতে হবে, কারণ জঙ্গিরা আমাদের নাম ব্যবহার করেই সন্ত্রাস চালিয়ে যাচ্ছে। এতদিন ধরে আমাদের প্রতি সহানুভূতি থাকলেও এখন সাধারণ মুসলিম আর ইসলামী জঙ্গিদের এক করে দেখার জন্য অন্যান্য সম্প্রদায়কে আমরা দোষারোপ করতে পারি না। এ কথা সত্য যে, জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের কাজের দায়ভার নিঃসন্দেহে সাধারণ মুসলিমরা বহন করবে না। কিন্তু এও সত্য যে, ইসলামী মৌলবাদের বিরুদ্ধে কার্যকর প্রতিরোধ গড়ে তুলতে আমরা ব্যর্থ হয়েছি পশ্চিমা দেশ কিংবা মুসলিম দেশ উভয় ক্ষেত্রে। আমাদের নিজেদের ভিতরে যে মৌলবাদের সমস্যা আছে আমাদের তা স্বীকার করতে হবে এবং জঙ্গিদের বিভ্রান্তিমূলক অপব্যাখ্যা ও কুসংস্কারের উপযুক্ত জবাব দিতে হবে।

এখনো পর্যন্ত মৌলবাদীদের অপব্যাখ্যার বিপরীতে আমাদের ভূমিকা দুর্বল ও অপর্যাপ্ত। অসাম্প্রদায়িক মুসলিমরা অনেক ক্ষেত্রেই হয় উদাসীন ও বিভক্ত, নয় তো মৌলবাদের সঙ্গে লড়াই করার ব্যাপারে অপ্রস্তুত। মুসলমানদের এ অবস্থা দুর্ভাগ্যজনক, কারণ হিজাব থেকে শুরু করে রাষ্ট্র পরিচালনা পর্যন্ত সব ব্যাপারেই বিকল্প চিন্তাভাবনার অসংখ্য পূর্ববর্তী নজির এবং প্রথা ইসলামের ইতিহাসে আছে। কাজেই উদার এবং অসাম্প্রদায়িক ব্যাখ্যার মাধ্যমে জঙ্গিবাদ ও মৌলবাদকে প্রতিহত করা সম্ভব।

এখানে প্রধান লড়াইটা হলো ‘ইসলামের আত্মা (soul)’ নিয়ে। কাজেই নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করে, জঙ্গিদের সাংগঠনিক ভিত্তি ভাঙার পাশাপাশি মৌলবাদী দর্শন বর্জন করে এবং তাদের অপব্যাখ্যা খণ্ডন করে শেষ পর্যন্ত এ লড়াইয়ে আমরা জয়ী হতে পারব। অপব্যাখ্যা খণ্ডনের বিষয়টি অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে আজকের প্রেক্ষাপটে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। কারণ বর্তমান সময়ে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর কাজের ধরনে ‘টপ-টু-বটম’ কাঠামোর পরিবর্তে ‘বটম-টু-টপ’ কাঠামোই বেশি চোখে পড়ে। আইএসআইএল বা আল-কায়েদার মতো গোষ্ঠীগুলো থেকে সাংগঠনিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়েও আদর্শিকভাবে একই পথের অনুসারী বিভিন্ন ছোট ছোট জঙ্গি গ্রুপের ওপরে ভিত্তি করে এখন সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। এসব বিশ্বজঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে সাংগঠনিকভাবে যুক্ত না হলেও মৌলবাদী ধ্যান-ধারণায় প্রভাবিত সমমনাদের নিয়ে নিজ উদ্যোগেই তারা এসব গ্রুপ তৈরি করে থাকে। আদর্শগতভাবে তাদের চিন্তা-ভাবনা অভিন্ন। জঙ্গিবাদের এ নতুন রূপের প্রেক্ষাপটে প্রয়োজন দেশে ও বিদেশে, সামরিক ও আদর্শিক লড়াই উভয় দিক দিয়েই।

পৃথিবীর কোনো দেশই এ পরিস্থিতিতে নিরাপদ নয়। যেসব মৌলবাদী জঙ্গি ইসলামকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করে নির্বিচারে মানুষ হত্যাকে বৈধতা দেয়, তাদের হাত থেকে ইসলামকে পুনরুদ্ধার করাই এখন মুসলমানদের সামনে প্রধান চ্যালেঞ্জ। ইসলাম (একটি মহান ধর্ম যেখানে উদার ব্যাখ্যার সুযোগ ও ঐতিহ্য রয়েছে) এবং ইসলামিজম (মানুষ হত্যা ও সন্ত্রাসের বিভ্রান্তিকর রাজনৈতিক দর্শন)- এ দুটি বিষয়কে পৃৃথক করা এখন অত্যন্ত জরুরি।

বিভিন্ন নামের কিন্তু একই আদর্শের জঙ্গি সংগঠনগুলোর সন্ত্রাসী কার্যকলাপের দায়ভার বার বার মুসলিমদের ওপরই এসে পড়বে, যদি আমরা আমাদের নীরবতা ভেঙে সোচ্চার হয়ে উঠতে না পারি। মুসলমানদের আত্মসমালোচনার প্রয়োজন রয়েছে কেন আজ ইসলামকে জঙ্গিবাদের সঙ্গে এক করে দেখা হছে সমগ্র পৃথিবীতে। সন্ত্রাসবাদের পরে ‘জঙ্গিরা মুসলিম নয়’ বললেই আমাদের দায়িত্ব শেষ হয়ে গেল তা নয়, বরং আদর্শগত দিক দিয়ে দেশে-বিদেশে অতি জরুরিভাবে এসব মৌলবাদী গোষ্ঠীকে গোড়া থেকেই মোকাবিলা করতে হবে। তা না করা পর্যন্ত তথাকথিত ‘ইসলামোফোবিয়া’র বিরুদ্ধে অভিযোগ করার অধিকার আমাদের নেই।

 

লেখক :  রাজনৈতিক এবং নিরাপত্তা বিশ্লেষক

পরিচালক :

Institute of Conflict, Law and Development Studies, Bangladesh- eZÆgvb Endeavour Scholar, Monash University, Australia

সর্বশেষ খবর