মঙ্গলবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

বিশ্ব ঐতিহ্য : মালির মাটির মসজিদ

বিশ্ব ঐতিহ্য : মালির মাটির মসজিদ

ভয়াবহ জঙ্গি হামলার পর পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালি সারা দুনিয়ার আলোচ্য বিষয়ে পরিণত হয়েছে। প্রাচীন সভ্যতার দেশ মালিতে রয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মাটির মসজিদ। অনিন্দ্যসুন্দর এ স্থাপনাটি বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে বিবেচিত। মালির ডিজেনি শহরে ১২০০ থেকে ১৩০০ শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে তৈরি হয়েছিল বড় মসজিদ নামে পরিচিত মাটির মসজিদটি। মালির সুলতান কনবরু ইসলাম গ্রহণ করার পর তার রাজপ্রাসাদ ভেঙে ফেলে সেখানে এ মসজিদটি তৈরি করান। মসজিদের পুব দিকে নিজের বসবাসের জন্য অন্য একটি প্রাসাদ তৈরি করান। তার পরবর্তী উত্তরাধিকারী এ মসজিদের দুটি মিনার নির্মাণ করান এবং পরবর্তীতে মসজিদটির চারপাশের দেয়াল নির্মাণ করা হয়। ১৮২৮ সালে ফরাসি পর্যটক রেনে এ এলাকা সফর করেন। তার সফরের আগ পর্যন্ত এ মসজিদটি সম্পর্কে লিখিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। রেনে তার সফর শেষে লেখেন- ‘ডিজেনি শহরে মাটির তৈরি একটি মসজিদ আছে। এর দুই পাশে দুটি দর্শনীয় মিনার আছে।’ এর পর থেকে মাটির তৈরি এ মসজিদ সম্পর্কে মানুষের মধ্যে আগ্রহ সৃষ্টি হয়। বানি নদীর তীরে অবস্থিত মসজিদটি ২৪৫–২৪৫ ফুট আয়তনবিশিষ্ট ৩ ফুট উঁচু প্লাটফরমের ওপর তৈরি। বর্ষাকালে বানি নদীর প্লাবিত পানি থেকে মসজিদটিকে সুরক্ষা করে এ প্লাটফরম।

মসজিদের দেয়ালগুলো তাল গাছের কাঠ, যা স্থানীয়ভাবে ‘টরল’ নামে পরিচিত, সেগুলো দ্বারা নকশা করা। শুধু নকশা নয়, তাল গাছের কাঠ মসজিদের দেয়ালে এমনভাবে গেঁথে দেওয়া হয়েছে যাতে মাটির দেয়াল সহজে ধসে না যায়। মধ্যযুগে আফ্রিকার এ অঞ্চলে ইসলামী শিক্ষা বিস্তারের প্রধান কেন্দ্র ছিল এ মসজিদটি। হাজার হাজার শিক্ষার্থী তখন কোরআন শিক্ষার জন্য এ মসজিদে আসত। প্রতি বছর স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের উদ্যোগে মসজিদটির সংস্কারকাজ চলে। ২০০৬ সালের ২০ জানুয়ারি মসজিদের ছাদের একটি অংশ এবং ২০০৯ সালের ৫ নভেম্বর এর দক্ষিণ দিকের মিনারের একটি অংশ ধসে পড়লে ‘দি আগা খান ট্রাস্ট কালচার’ নিজস্ব খরচে এর সংস্কার করে দেয়। ১৯৮৮ সালে ইউনেস্কো এ মসজিদটি বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে তালিকাভুক্ত করে।

                শাকিল জাহান

 

সর্বশেষ খবর