শুক্রবার, ২৭ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

পরিমলের যাবজ্জীবন

শিক্ষক নামের কলঙ্ক উচিত সাজাই পেয়েছে

ছাত্রী ধর্ষণের দায়ে রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বহিষ্কৃত শিক্ষক পরিমল জয়ধরকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন ঢাকার ৪ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. সালেহউদ্দিন আহমদ বুধবার সারা দেশে চাঞ্চল্য সৃষ্টিকারী এ মামলার রায়ে যাবজ্জীবনের পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিল তবে ভিকটিমের পরিবারের কাউকে এ সময় আদালতে দেখা যায়নি। আদালত রায়ের পর্যবেক্ষণে মামলার তদন্তে চরম দুর্বলতা থাকা এবং সংশ্লিষ্ট তদন্তকারী কর্মকর্তাদের গাফিলতির কথা উল্লেখ করেছেন। আদালতের মতে, তারা সঠিকভাবে তদন্ত করলে ভিকটিমের অভিযোগ সমর্থনে অধিকতর সহায়ক হতো। স্মর্তব্য, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ২০১১ সালের ২৮ মে ধর্ষণ করে শিক্ষক পরিমল জয়ধর। ওই সময় ছাত্রীর নগ্ন ভিডিওচিত্র মোবাইলে ধারণ করা হয়। এর পর ওই ভিডিও প্রকাশের ভয় দেখিয়ে ১৭ জুন তাকে ফের ধর্ষণ করা হয়। বিষয়টি প্রকাশ হওয়ার পর ভিকারুননিসার ছাত্রীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়লে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পরিমলকে বরখাস্ত করে। এর পর ৫ জুলাই ওই ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে বাড্ডা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১) ৩০ ধারায় পরিমল জয়ধর, অধ্যক্ষ হোসনে আরা ও বসুন্ধরা শাখার প্রধান লুৎফর রহমানকে আসামি করে একটি মামলা করেন। ৭ জুলাই পরিমলকে কেরানীগঞ্জে তার এক আত্মীয়ের বাসা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভিকারুননিসা নূন স্কুলের শিক্ষক পরিমলই ছিলেন আলোচিত এ মামলার একমাত্র আসামি। আদালতে দোষ স্বীকার করে স্বেচ্ছায় জবানবন্দিও দিয়েছিলেন তিনি। মামলার শুনানিতে আদালতের কাছে ওই ছাত্রী পরিমলের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যও দেয়। এ মামলায় মোট ৩৭ জনের মধ্যে ২৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত। শিক্ষককে পিতৃতুল্য গুরুজন হিসেবেই ভাবা হয় আমাদের সমাজে।  পরিমলের মতো শিক্ষক নামধারী নরপশুদের এ মহান পেশার কলঙ্ক হিসেবে অভিহিত করা যায়। আমরা লম্পট শিক্ষককে উচিত সাজা দেওয়ার জন্য আদালতকে অভিনন্দন জানাই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর