শনিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

সংসদীয় কমিটির ক্ষোভ

বিমানের অব্যবস্থাপনা অবসানে অবদান রাখুক

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস এবং অব্যবস্থাপনা সমার্থক শব্দ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে সেই শুরু থেকেই। দুনিয়ার প্রায় সব দেশের জাতীয় বিমান সংস্থা লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে এগিয়ে যাওয়ার কৃতিত্ব দেখালেও বিমানের অবস্থা রূপকথার ভূতের মতো। পেছন পানে হাঁটা তার মজ্জাগত অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং এ অভ্যাস থেকে সে কিছুতেই বেরিয়ে আসতে পারছে না। বিমানের অব্যবস্থাপনা ও অনিয়ম সংসদীয় কমিটিরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। বৃহস্পতিবার যাত্রী ও মালামাল পরিবহন বৃদ্ধি আশানুরূপ না হওয়া সত্ত্বেও লোকসানি রুটে ফ্লাইট পরিচালনাসহ বিমান পরিচালনায় অদক্ষতা, মালামাল ক্রয় ও ইঞ্জিন মেরামতে অনিয়মের ঘটনায় সংসদীয় কমিটি ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সরকারি হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিমানের দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত পরিকল্পনা, বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক পরিকল্পনা এবং বিমানের কোনো রিজার্ভ ফান্ড না থাকায়ও অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়। কমিটি বাংলাদেশ বিমানকে অবিলম্বে পৃথকভাবে এসব পরিকল্পনা প্রণয়নসহ রিজার্ভ ফান্ড গঠনের সুপারিশ করেছে। বাংলাদেশ বিমানের রি-ফুয়েলিং বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণেরও সুপারিশ করা হয়েছে। বৈঠকে বলা হয়, ঢাকা-ব্যাংকক-সিঙ্গাপুর-ঢাকা রুট চালু থাকলেও পর‌্যাপ্ত যাত্রী না থাকা সত্ত্বেও অলাভজনকভাবে ঢাকা-সিঙ্গাপুর-ঢাকা রুট চালু রাখায় সরকারের রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে। বৈঠকে ডিসি-১০-৩০ বিমান সম্পর্কে তিন মাসের মধ্যে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রদান এবং এটিপি বিমান ক্রয়ের সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস জাতীয় পতাকাবাহী বিমান সংস্থা। ১৬ কোটি মানুষের প্রতিনিধিত্বকারী এ সংস্থাটি জাতীয় গর্বের প্রতীক হিসেবে গড়ে ওঠার বদলে জাতির ঘাড়ে লাগাতার লোকসান চাপিয়ে দেওয়ার প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। আমরা এ কলামে বারবার বলেছি যে, দেশের ৮০ লাখ নাগরিক বিদেশে কর্মরত সে দেশের জাতীয় বিমান সংস্থা লোকসানি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে তা মেনে নেওয়া যায় না।  অনিয়ম ও দুর্নীতি রোধ করা গেলে রাষ্ট্রীয় এ প্রতিষ্ঠানটি নিজের পায়ে দাঁড়ানোর শক্তি খুঁজে পাবে। সেটি নিশ্চিত করতে সরকারকে সম্ভাব্য সব চেষ্টাই চালাতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর