বুধবার, ২ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

প্যারিস জলবায়ু সম্মেলন

ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত হোক

ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের জলবায়ু সম্মেলনে যোগদানকারী শিল্পোন্নত দেশ এবং স্বল্পোন্নত ও ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে দৃষ্টিভঙ্গিগত পার্থক্য থাকলেও একদিক থেকে সবার কণ্ঠে শোনা যাচ্ছে ঐক্যতান। পরিবেশ বিপর্যয়ের হাত থেকে সাতশ কোটিরও বেশি মানুষের নিবাস পৃথিবীকে বাঁচাতে কার্বন নিঃসরণ কমানোর বিষয়ে উদ্বোধনী অধিবেশনে সবার কণ্ঠে প্রায় একই বক্তব্যই ফুটে উঠেছে। বিশ্বের পরিবেশ বিপন্ন হয়ে উঠেছে শিল্পোন্নত দেশগুলোর অবিবেচনাপ্রসূত কর্মকাণ্ডের কারণে। তাদের শিল্প কলকারখানাগুলো পরিবেশকে ক্রমেই দূষিত করে তুলছে। এর ফলে বিশ্বের বায়ুমণ্ডলে সৃষ্টি হচ্ছে উষ্ণতা। এ উষ্ণতায় দুই মেরুর বরফ গলছে। বেড়ে যাচ্ছে সাগর পৃষ্ঠের উচ্চতা। ঘূর্ণিঝড়, টর্নেডোর পাশাপাশি সাগর পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় নিচু দেশগুলোর অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়ছে। সাগর পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় যেসব দেশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে বাংলাদেশ তার মধ্যে প্রথম দিকে। বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে ইতিমধ্যে সাগরের নোনা পানি হানা দিতে শুরু করেছে। উপকূলীয় এলাকার কয়েক লাখ মানুষ উদ্বাস্তুতে পরিণত হয়েছে। ফসলের জমি নষ্ট হচ্ছে নোনাপানির আগ্রাসনে। বিশ্বের বৃহত্তম বাদাবন সুন্দরবনের অস্তিত্বও প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠেছে আবহাওয়ায় উষ্ণতা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে সৃষ্ট প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে। বায়ু দূষণের দায় এদেশের মানুষের প্রায় নেই বললেও চলে। কিন্তু এ দেশের নিরপরাধ মানুষ শিল্পোন্নত দেশগুলোর অবিমৃশ্যকারিতার শিকারে পরিণত হয়েছে। প্যারিস সম্মেলনে যোগদানকারী বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের মুখে পৃথিবীর অস্তিত্ব রক্ষায় কার্বন নিঃসরণ কমানোর যে তাগিদ শোনা গেছে তা অবশ্যই আশাজাগানিয়া ঘটনা। আশা করা হচ্ছে সম্মেলন থেকে এ বিষয়ে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা পাওয়া যাবে।  তবে কার্বন নিঃসরণ হ্রাস করাই শুধু নয়, বিশ্বউষ্ণতা বৃদ্ধি পাওয়ায় যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বা হচ্ছে সেসব মানুষের জন্য শিল্পোন্নত দেশগুলোর দায়ও সম্মেলনে নির্ণয় করতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মানুষ যাতে ক্ষতিপূরণ পায় সেটিও সম্মেলনে নিশ্চিত হওয়া উচিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর