সরকারের দায়িত্বশীল পদে যারা থাকেন তাদের লক্ষ্য থাকে সুকীর্তির মাধ্যমে মানুষের মনে স্থান পাওয়া। এ জন্য তারা তাদের মেধা ও মননশীলতাকে কাজে লাগান। বিনম্র আচরণের মাধ্যমে ঠাঁই নেন জনমনে। রাজনৈতিক প্রজ্ঞার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়ে নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জনকে করণীয় কর্তব্য বলে বেছে নেন। কিন্তু যারা হঠাৎ রাজনীতিক, কিংবা মেধা ও মননশীলতার চর্চায় অনীহা যাদের- তারা যেভাবেই হোক দেশবাসীর কাছে ক্ষমতা জাহির করাকে কর্তব্য বলে ভেবে বসেন। বলা হয়, মেধার ঘাটতি থাকলে পেশিশক্তির ব্যবহার বাড়ে। একজন উপমন্ত্রী সম্পর্কে এ অভিধা যেন সার্থক রূপ পেয়েছে। ফুটবলের রাজ্যে বাংলাদেশ দুনিয়ার সবচেয়ে পিছিয়ে থাকা দেশেগুলোর একটি, এটি যেমন সত্যি তেমন পাশাপাশি সত্যি হলো এ দেশের মানুষ ফুটবলপাগল। দেশের ফুটবলকে এগিয়ে নেওয়ার স্বার্থেই হয়তো প্রধানমন্ত্রী একজন সাবেক ফুটবলারকে রাজনৈতিক অঙ্গনের লাইম লাইটের নিচে নিয়ে আসেন গত নির্বাচনে সংসদ সদস্য পদে দলীয় মনোনয়ন দিয়ে। নির্বাচনের পর তাকে ক্রীড়া উপমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। গত ২৩ মাসে ক্রীড়া উপমন্ত্রী হিসেবে তিনি আদৌ কোনো ভ‚মিকা রেখেছেন কিনা তা দেশবাসীর অজানা থাকলেও পেশিশক্তির যথেচ্ছ ব্যবহারের দিকটি অজানা নয়। গভীর রাতে অপ্রকৃতিস্থ অবস্থায় অন্যের ফ্ল্যাট বাড়ির প্রহরীদের ওপর হম্বিতম্বি করা, খেলার মাঠে অস্ত্র নিয়ে প্রবেশ, সচিবালয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কক্ষ ভাঙচুর, তালা লাগানো, এলাকার ইউপি চেয়ারম্যানকে মারধর ইত্যাকার কর্মকাণ্ড যেন এই উপমন্ত্রীর মজ্জাগত অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাঁচ ভাই ও এক মামাকে নিয়ে তিনি তার নিজ জেলা নেত্রকোনায় যা ইচ্ছা তাই করার যে যথেচ্ছতা দেখিয়ে চলেছেন তাতে কেউ কেউ তাকে ডনমন্ত্রী বলেও আখ্যায়িত করছেন। এই বাজে ভাবমূর্তি সত্তে¡ও তিনি কীভাবে তার পদে টিকে থাকেন তা অনেকের কাছেই বিস্ময়। একজন উপমন্ত্রীর জন্য সরকারের সুনাম জিম্মি হয়ে পড়বে তা কাম্য হওয়া উচিত নয়। আমরা বিশ্বাস করি কোনো ব্যক্তি বা ডনের কাছে নয় সরকারের দায়বদ্ধতা দেশের ১৬ কোটি মানুষের কাছে। তাদের আস্থা ধরে রাখতেই অর্বাচীনদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী কঠোর হবেন এমনটিই দেখতে চায় দেশের মানুষ।