শনিবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

সোনা চোরাচালান

জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে কঠোর হতে হবে

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বৃহস্পতিবার দুবাই থেকে আসা এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি উড়োজাহাজ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৩৭ কেজি ওজনের সোনা। র‌্যাবের ডগ স্কোয়াড ওই উড়োজাহাজটিতে বিস্ফোরক থাকতে পারে এমন গোপন তথ্যের ভিত্তিতে তল্লাশি চালায়। সে তল্লাশিতে উড়োজাহাজের ৫টি সিট ও দুটি টয়লেট থেকে উদ্ধার হয় ৩৭ কেজি সোনা। বিস্ফোরকের কোনো সন্ধান দূরের কথা আলামতও মেলেনি। হযরত শাহজালালসহ বাংলাদেশের তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সোনা চোরাচালানিদের অভয়ারণ্য হিসেবে ব্যবহূত হয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। বিমানবন্দরের দুর্বল স্ক্যানিং ব্যবস্থা এবং কর্মরত কর্মচারী-কর্মকর্তাদের একাংশের যোগসাজশের কারণে সোনা চোরাচালানিদের জন্য সুবর্ণ সুযোগও সৃষ্টি হয়। সোনা চোরাচালানের জন্য ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হতো বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটকে। সমালোচকরা তির্যক ভাষায় বলতেন, বাংলাদেশে সোনার খনি না থাকলেও তিন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজগুলো সে অভাব পূরণ করছে। অনুমান করা হয় এসব চোরাচালানকৃত সোনার সিংহভাগই চলে যেত প্রতিবেশী ভারতে। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটের ওপর কাস্টমসসহ গোয়েন্দা বিভাগগুলোর কড়া দৃষ্টির কারণে চোরাচালানিরা তাদের কৌশল সম্ভবত কিছুটা পাল্টিয়েছে। এমিরেটসসহ অন্যান্য উড়োজাহাজে বড় মাপের সোনা ধরা পড়া তারই প্রমাণ। সন্ত্রাসী ও জঙ্গি হামলার আশঙ্কা ঠেকাতে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার হলেও তা যে চোরাচালানিদের নিরস্ত করতে পারেনি বৃহস্পতিবারের সোনা ধরা পড়ার ঘটনা তারই প্রমাণ। গোপন সূত্রে উড়োজাহাজটিতে বিস্ফোরক থাকার উড়ো খবর না পেলে সোনার এই বড় চালানটি যে ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যেত তা সহজেই অনুমেয়। জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থেই দেশের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলো যাতে চোরাচালানিদের আখড়ায় পরিণত না হয় সে ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে। এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক তাদের রুখতে নিতে হবে কঠোর পদক্ষেপ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর