রবিবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

শিষ্টাচার ও বিনয়ের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ছিলেন রসুল (সা.)

মাওলানা মুহম্মাদ আবদুল খালেক

সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন শিষ্টাচার ও বিনয়ের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তার জীবনাচারের দিকে দৃষ্টিপাত করলে শিষ্টাচারিতা, নম্রতা, ভদ্রতার যে পরিচয় মেলে তা আদর্শস্থানীয়। তিনি ছিলেন, সত্য সুন্দর ও কল্যাণের মূর্তপ্রতীক। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন অত্যন্ত নম্র, ভদ্র এবং বিনয়ী। তিনি ছিলেন এমন একজন শুদ্ধাচারী মানব যিনি কারও প্রতি কখনো কুবাক্য ব্যবহার করেননি। কখনো দুর্ব্যবহার করেননি। পরিচিত অপরিচিত সবার সঙ্গে হƒদ্যতাপূর্ণ আচরণ করতেন। কারও সঙ্গে দেখা হলে সর্বপ্রথম তিনি তাকে সালাম দিতেন। এমন বিনয়ী ছিলেন যে, কারও কথা শেষ না হওয়া পর্যন্ত কথা বলতেন না। রসুলুল্লাহ এতই বিনয়াবনত ছিলেন যে, সাহাবিগণ তাকে দাঁড়িয়ে সম্মান দিলে তিনি তাদের নিরুৎসাহিত করতেন। পবিত্র কোরআনে তাঁর নম্রতা সম্পর্কে ঘোষিত হয়েছে, এ আল্লাহরই রহমত যে, আপনি তাদের (উম্মতের) প্রতি বিনয়ী, নম্র, নতুবা আপনি যদি কর্কশভাষী ও পাষাণ হতেন, তাহলে এসব লোক আপনার চারপাশ থেকে সরে পড়ত। মহানবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন দয়া ও মহানুভবতার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। তিনি ছিলেন অত্যন্ত উদারচেতা। অসহ্য নির‌্যাতন নিপীড়নের সম্মুখীন হওয়া সত্তে¡ও তিনি কাউকে কখনো অভিশাপ দেননি। মানুষের মঙ্গল কামনাকে অলঙ্ঘনীয় কর্তব্য বলে মনে করতেন এই মহামানব। কেউ দোষ করলে তা ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখতেন। ইসলাম প্রচারের প্রাক্কালে কুরাইশদের হাতে তাকে নির‌্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। অবিশ্বাসী ও বিপদগামীদের অত্যাচার, উৎপীড়ন-নিপীড়ন সত্তে¡ও তিনি অভিশাপ দেওয়ার বদলে আল্লাহর কাছে তাদের ক্ষমার জন্য ফরিয়াদ করেছেন। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেন, ‘আমি মানুষকে অভিশাপ দেওয়ার জন্য আসিনি, আমি এসেছি ক্ষমা এবং দয়া করার জন্যই।’ মক্কা বিজয়ের পর কুরাইশগণ ভীত হয়ে পড়েছিল। তারা মুসলমানদের ভয়ে কে কোথায় পালাবে তা ভেবে ব্যাকুল হয়ে যায়। কিন্তু রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দৃপ্ত কণ্ঠে ঘোষণা করেন, আজ তোমাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা করুন এবং তিনি শ্রেষ্ঠতম দয়ালু।

                লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর