দিনাজপুরের কাহারোলে কান্তজিউ রাসমেলার যাত্রা প্যান্ডেলে ককটেল বিস্ফোরণে ছয়জন আহত হয়েছে। ঐতিহাসিক কান্তজিউ মন্দিরের সামনে রাসমেলা উপলক্ষে যাত্রাগানের আয়োজন করা হয়। শুক্রবার মধ্য রাতে হঠাত্ যাত্রামঞ্চের কাছে বিকট শব্দে ককটেল বিস্ফোরিত হলে অনুষ্ঠান পণ্ড হয়ে যায়। দেড় মাস আগে দিনাজপুর শহরে ইতালীয় এক ধর্মযাজককে হত্যার চেষ্টা এবং মাত্র পাঁচ দিন আগে রানীরবন্দর এলাকায় এক হিন্দু হোমিও চিকিত্সককে গুলি করে হত্যা চেষ্টার পর কান্তজিউ মন্দিরের যাত্রাপালায় ককটেল বিস্ফোরণ জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। শান্তির জনপদ হিসেবে দিনাজপুরের যে সুনাম রয়েছে তাতে ব্যত্যয় ঘটিয়েছে এসব সন্ত্রাসী ঘটনা। কান্তজিউ মন্দির প্রাঙ্গণে রাসমেলা বসছে বহু বছর ধরে। জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষ মেলায় অংশ নেয়। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উদাহরণ হিসেবেও যা বিবেচিত হয়। ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় সে ঐতিহ্যে আঘাত হানা হলো। ককটেল বিস্ফোরণের পর আহতদের দ্রুত দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহতদের সবার পায়ের বিভিন্ন স্থানে স্প্লিন্টারের আঘাত রয়েছে। ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থল ঘিরে ফেলে। এ হামলার সঙ্গে কারা জড়িত সে ব্যাপারে তাত্ক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। কান্তজিউ মন্দির দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ পুরাকীর্তি। হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির হিসেবে পুরাকীর্তিটির আলাদা তাত্পর্য রয়েছে। মন্দির প্রাঙ্গণে আয়োজিত যাত্রা প্যান্ডেলে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে যারা মানুষের উত্সবে বাদ সেধেছে তাদের পরিচয় একটাই তারা দুষ্কৃতকারী। আমরা আশা করব ককটেল হামলায় যারা জড়িত তাদের খুঁজে বের করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সব চেষ্টাই চালাবে। মন্দির ও রাসমেলার নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণেও নেওয়া হবে সব ধরনের ব্যবস্থা। দিনাজপুরে দেড় মাসের মধ্যে তিনটি সন্ত্রাসী ঘটনা নিঃসন্দেহে উদ্বেগের। নিজেদের সুনামের স্বার্থেই এলাকাবাসী সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের হোতাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। আমরা এমনটিই দেখতে চাই।