সোমবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

অপদখলের শিকার মেঘনা

দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

স্বাধিকার আন্দোলনের স্লোগান ছিল তোমার আমার ঠিকানা পদ্মা মেঘন যমুনা। বাংলাদেশের আত্মা বলে অভিহিত করা হয় যে তিন নদীকে মেঘনা তার মধ্যে অন্যতম। মেঘনার আরেকটি পরিচিতি অহংকার করার মতো। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি দুনিয়ার সবচেয়ে স্বচ্ছ পানির নদী। বাঙালি জাতির আত্মপরিচয়ের অনুষঙ্গ এ নদী এখন অস্তিত্ব হারানোর হুমকির মুখে। রাজধানী লাগোয়া সোনারগাঁওয়ে নদী দখলের অপখেলায় মেতেছে প্রভাবশালীরা। বাংলাদেশ প্রতিদিনে ‘দখলে বিলীন হচ্ছে মেঘনা’ শীর্ষক যে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে তাতে যে কোনো দেশপ্রেমী উদ্বিগ্ন হতে বাধ্য। এতে বলা হয়েছে, মেঘনা সেতু থেকে মাত্র ২০০ মিটার দূরে নদীর আড়াই বিঘা খাস জমি দখল করে গড়ে উঠেছে শিল্পপ্রতিষ্ঠান। মেঘনা সেতু সংলগ্ন দুই পাড়ে একইভাবে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে বিভিন্ন স্থাপনা, যার মধ্যে ভারী শিল্পপ্রতিষ্ঠানও রয়েছে। সেতুর দুই পাশের নিচের জায়গাগুলো এখন বালু ও পাথর ব্যবসায়ীদের দখলে। মাঝে মাঝে অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হলেও তাকে আইওয়াশ বলে অভিহিত করাই হবে যথার্থ। সকালে অভিযান চললে বিকালেই আবার জেঁকে বসে দখলকারীরা। মেঘনা ঘাট এলাকায় ক্ষমতাসীন দলের এক প্রভাবশালী নেতা সরকারি জমি দখল করে নির্মাণ করেছেন শিল্পপ্রতিষ্ঠান। ১০০ কোটি টাকা মূল্যের এ জমি উদ্ধারের কোনো উদ্যোগ নেই। মেঘনার দুই পাশে অপদখলকারীদের দৌরাত্ম্য এ নদীর অস্তিত্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। নদীতীরে শিল্প কল কারখানা স্থাপন নদীদূষণের আশঙ্কা সৃষ্টি করছে। দখলদাররা সবাই প্রভাবশালী হওয়ায় প্রশাসন যেন অসহায়। তারা বালু ও পাথর ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেও তা অপদখলকারীদের মনে ভয় ঢুকাতে পারছে না। যে মেঘনা নদী বাংলাদেশের আত্মপরিচয়ের অনুষঙ্গ হিসেবে বিবেচিত তার অস্তিত্ববিনাশী কর্মকাণ্ড দুঃখজনক। এটি জাতীয় লজ্জার বিষয় বলে বিবেচিত হওয়া উচিত। আমরা আশা করব প্রশাসন দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেবে। মেঘনাকে অপদখলমুক্ত করতে সম্ভাব্য সব পদক্ষেপই নেওয়া হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর