বুধবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

হাইকোর্টের পাঁচ নির্দেশনা

সড়ক দুর্ঘটনার রাশ টেনে ধরুক

সড়ক দুর্ঘটনা এড়াতে পাঁচ দফা নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে হাইকোর্টের তরফ থেকে। গত সোমবার বিচারপতি জিনাত আরা ও বিচারপতি এ কে এম সহিদুল হকের বেঞ্চ ঢাকা থেকে জেলা পর্যায়ে যাতায়াতের সড়ক-মহাসড়কে কার্যকর ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সড়ক পাশের অনুমোদনহীন সব স্থাপনা অপসারণের নির্দেশনা দেন। একই সঙ্গে মহাসড়কে স্থাপনা তৈরির অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা-২০০৮-এর ৮ বিধিতে সরকারকে দেওয়া ক্ষমতা বাতিলের পদক্ষেপ নিতে বলেছেন আদালত। গাড়িচালকদের ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি পাস নির্ধারণ করে এই সিদ্ধান্ত পাঁচ বছর পর কার্যকর করার পদক্ষেপ নিতে হবে। মহাসড়কে রোড ডিভাইডার তৈরি ও পথচারী চলাচলে প্রয়োজনীয় স্থানে আন্ডারপাস ও স্কুল সিলেবাসে ট্রাফিক নিয়ম অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশনাও দিয়েছেন আদালত। নির্দেশনা অনুযায়ী সরকারকে মোটরযান আইনে বিভিন্ন অপরাধের সাজা ও জরিমানা বৃদ্ধি করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। একই সঙ্গে দুর্ঘটনা রোধে আদালতের নির্দেশে গঠিত কমিটির সুপারিশগুলো কার্যকর করতে হবে। স্মর্তব্য, গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ থেকে ফেরার পথে সংসদ সদস্য মোকতাদির চৌধুরীর গাড়িবহর দুর্ঘটনায় পড়লে ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ১১ জন মারা যান। এ ঘটনা জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হওয়ার পর তা যুক্ত করে বেসরকারি সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ জনস্বার্থে রিট আবেদন করে। প্রাথমিক শুনানির পর ওই বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি আদালত রুল দেন। রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত সোমবার আদালত নির্দেশনাসহ রায় দেন। হাইকোর্টের পাঁচ দফা নির্দেশনা যথাযথভাবে কার্যকর হলে সড়ক দুর্ঘটনার রাশ অনেকাংশেই টেনে ধরা সম্ভব হবে। দেশের মহাসড়কগুলোতে দুর্ঘটনার প্রধান কারণ ট্রাফিক আইন মেনে না চলা। চালকদের প্রশিক্ষণের অভাবও দুর্ঘটনায় মদদ জোগায়। পথচারীদের পারাপারের সময় দুর্ঘটনা প্রায়শই জেঁকে বসে। সড়ক-মহাসড়ক দখল করে বাজার বা দোকানপাট স্থাপনও দুর্ঘটনার জন্য দায়ী। আদালতের নির্দেশনায় দুর্ঘটনার কারণগুলো কীভাবে এড়ানো যায় সে বিষয়টি প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। সড়ক দুর্ঘটনাকে হালকাভাবে দেখা এবং এর দায় অস্বীকারের অপসংস্কৃতি রোধে নির্দেশনাগুলো কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

সর্বশেষ খবর