বৃহস্পতিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

অন্ধ হলে কি প্রলয় বন্ধ থাকে

প্রভাষ আমিন

অন্ধ হলে কি প্রলয় বন্ধ থাকে

পত্রিকায় সেদিন একটা নিউজ দেখে চমকে উঠলাম। ‘ফেসবুকে সরকারবিরোধী অপপ্রচার চালানোর অভিযোগে তিনজন গ্রেফতার’। নিউজটা পড়ে আমি ঠিক বুঝতে পারলাম না, এ তিনজনের অপরাধটা কী, সরকারবিরোধী অপপ্রচার চালানো, সরকারের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ফেসবুক ব্যবহার নাকি বিকল্প পথে ফেসবুক ব্যবহার? প্রথম কথা হলো- সরকার বাংলাদেশে ফেসবুক বন্ধ করেছে, নিষিদ্ধ করেনি। দ্বিতীয়ত প্রক্সি সার্ভার দিয়ে বিকল্প পথে ফেসবুক ব্যবহারও নিশ্চয়ই বেআইনি বা অপরাধ নয়। প্রযুক্তি দক্ষতা দিয়ে কেউ যদি ফেসবুক ব্যবহার করতে পারে তাতে সরকারের আপত্তি কোথায়। তরুণ প্রজম্মকে প্রযুক্তিতে দক্ষ করে তোলার কৃতিত্ব তো এ সরকারেরই। বাকি থাকল সরকারবিরোধী প্রচারণা। কবে থেকে বাংলাদেশে সরকারবিরোধী প্রচারণা বেআইনি বা নিষিদ্ধ হলো? বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। এখানে সরকারের যে কোনো কাজের সমালোচনা করার অধিকার যে কোনো নাগরিকের আছে। প্লিজ রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারণা আর সরকারবিরোধী প্রচারণাকে গুলিয়ে ফেলবেন না। বহুদিন ধরেই সরকার আর রাষ্ট্রকে গুলিয়ে ফেলার এ ভুলটা আমরা করছি। রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যে কোনো প্রচারণা বেআইনি। আর অপপ্রচার সবসময়ই খারাপ; সেটা সরকারের বিরুদ্ধে হোক, বিরোধী দলের বিপক্ষে হোক বা ব্যক্তির বিরুদ্ধে হোক। একটি রাষ্ট্রে বহু দল থাকবে, বহু মত থাকবে, বহু পথ থাকবে, সরকারি দল থাকবে, বিরোধী দল থাকবে, তাদের মধ্যে ভিন্নমত থাকবে। সরকারি দল বিরোধী দলের সমালোচনা করবে। বিরোধী দল সরকারের ভুলত্রুটি, অন্যায় আচরণের সমালোচনা করবে এটাই স্বাভাবিক, এটাই প্রত্যাশিত। চ্যানেল ওয়ান, দিগন্ত টিভি, ইসলামিক টিভি, আমার দেশ বন্ধ; একুশে টেলিভিশন কৌশলে দখলসহ নানা অপচেষ্টার পরও বর্তমানে বাংলাদেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে আমি পুরোপুরি অসন্তুষ্ট নই। বাংলাদেশের টিভি চ্যানেলগুলোতে টকশোগুলোর অধিকাংশই সরাসরি সম্প্রচারিত হয়। সেসব টকশোতে সরকারের বিরুদ্ধেও অনেক কথা বলা হয়। আমি নিজেও মাঝে মাঝে একটি টকশো উপস্থাপনা করি। সেসব টকশোতে অতিথি কারা আসবেন, তা আমরাই ঠিক করি। অতিথিরা কী বলবেন, সেটাও তাদের ইচ্ছা। কোনো ধরনের পূর্ব নির্ধারিত অতিথি বা বিষয় থাকে না। আমি মাঝে মাঝে অন্য টেলিভিশনের টকশোতে অতিথি হয়ে যাই। সেখানে আমি আমার ইচ্ছামতো কথা বলতে পারি। আমি নিয়মিত লেখালেখি করি। তাতে প্রায়শই সরকারের অনেক কাজের তীব্র সমালোচনাও থাকে। এখন পর্যন্ত লিখতে বা বলতে আমার কোনো অসুবিধা হয়নি। এ সরকারের আমলেই তথ্যমন্ত্রীর মুখের ওপর বলে দেওয়া যায়, সম্প্রচার নীতিমালা আমরা মানি না। অন্য কোনো আমলে এটা ভাবাও যেত না।

কিন্তু ফেসবুক বন্ধের ধরন দেখে মনে হচ্ছে ভিন্নমত শুনতে সরকারের সমস্যা হচ্ছে। সরকারের কি সহিষ্ণুতা কমে যাচ্ছে? আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের অজুহাতে বন্ধ করা হলেও আসলে ফেসবুক হয়ে উঠেছিল মানুষের মত প্রকাশের খোলা জানালা। সেই জানালাই বন্ধ করতে চাইছে সরকার। এটা ঠিক গণমাধ্যম আর সামাজিক মাধ্যম এক নয়। বিধিবদ্ধ গণমাধ্যমকে দায়িত্বশীল হতে হয়। গণমাধ্যমে প্রকাশিত বা প্রচারিত প্রতিটি বাক্যের জন্য সম্পাদককে দর্শক বা পাঠকের কাছে, নিদেনপক্ষে নিজের বিবেকের কাছে জবাবদিহি করতে হয়। কিন্তু ফেসবুকে দায়িত্বশীলতার ধারণাটিই নেই। এখানে একেকজন ব্যক্তিই যেন একেকটি প্রতিষ্ঠান। সবাই এখানে সম্পাদক। যার যা খুশি তাই লিখতে পারেন। রীতিমতো চরম স্বেচ্ছাচারিতা চলে ফেসবুকে। স্বাভাবিকভাবেই সরকারের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভ বেশি। সেই ক্ষোভ মানুষ মনের খুশিমতো ফেসবুকে প্রকাশ করে। যখন সংসদ অকার্যকর, সংসদে বিরোধী দল গৃহপালিত, রাজপথের বিরোধী দল অথর্ব, মূলধারার গণমাধ্যম স্বনিয়ন্ত্রিত; তখন মানুষ ফেসবুকের মতো সামাজিক মাধ্যমকে বেছে নিয়েছিল তাদের মত প্রকাশের, ক্ষোভ প্রকাশের প্লাটফর্ম হিসেবে। আমার কাছে ফেসবুক গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। কিন্তু সমস্যা হলো ফেসবুকের এ মত প্রকাশের খোলা জানালা দিয়ে ফুলের সৌরভ যেমন আসে; তেমনি আসে অশ্লীলতা, চরিত্রহনন, অপপ্রচার, গুজব ছড়ানো, কুৎসিত আক্রমণের দুর্গন্ধও। দেখে মনে হচ্ছে ফেসবুকের ওপর সরকারের নজরদারি নেই, নিয়ন্ত্রণ নেই, নিয়ন্ত্রণ করার সক্ষমতাও নেই। তাই বন্ধ করে দেওয়াকেই তারা সমাধান ভেবেছেন। বাংলাদেশে ফেসবুক ব্যবহার করে এক কোটি ৭০ লাখ মানুষ। প্রবাসীদের ধরলে এ সংখ্যা দুই কোটি ছাড়িয়ে যাবে। দুই কোটি মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করা আসলে সম্ভবও নয়। গণমাধ্যমে মানুষ যা বলতে পারে না, সামাজিক মাধ্যমে মানুষ অনায়াসে তা বলে ফেলে। ফেসবুকে যাদের চেনা যায়, তাদের তবু কিছু চক্ষুলজ্জা থাকে। কিন্তু বাংলাদেশে ফেসবুকের লাখ লাখ ফেক আইডি আছে। এসব বায়বীয় মানুষের কোনো চক্ষুলজ্জার বালাই নেই। তারা ভিন্নমতের মানুষকে অশ্লীল ভাষায় আক্রমণ, তার অশ্লীলতম ক্যারিকেচার করা হয়। বিশেষ করে নারীরা সাইবার জগতে খুব অসহায়। তারা বারবার আক্রমণের শিকার হন। এ ধরনের আক্রমণে তারা কী করবেন, কোথায় যাবেন? আমি নিজে একাধিকবার এ ধরনের অশ্লীল সাইবার আক্রমণের শিকার হয়েছি। তখন বুঝেছি, এ ধরনের আক্রমণ মুখ বুজে সয়ে যাওয়া ছাড়া আসলে আর কিছু করার নেই।

বাংলাদেশকে ডিজিটাল করার কৃতিত্ব অবশ্যই বর্তমান সরকারের। রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা ফাঁস হয়ে যাওয়ার ভয়ে বিএনপি সরকারের আমলে বাংলাদেশ বিনা পয়সায় পাওয়া সাবমেরিন ক্যাবলের সংযোগ নেয়নি। তাতে বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে গেছে। পরে অনেক টাকা দিয়ে সেই সংযোগ নিতে হয়েছে। বিএনপি আমলে বাংলাদেশে মোবাইল কোম্পানি ছিল একটি। মোবাইল ছিল বড় লোকের বিলাসিতা। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশকে যুক্ত করেছে তথ্যপ্রযুক্তির বিশ্বের সঙ্গে। মোবাইল এখন মানুষের নিত্যপ্রয়োজন। কম্পিউটারের দাম কমিয়ে, মোবাইলের দাম কমিয়ে, ইন্টারনেট সহজলভ্য করে সরকার মানুষের ঘরে ঘরে কম্পিউটার, হাতে হাতে ইন্টারনেট পৌঁছে দিয়েছে। কিন্তু প্রযুক্তি বিস্তারের সময় এর ক্ষতিকর দিক মোকাবিলার কথাটি খেয়াল রাখা হয়নি। তাই এখন নিজেদের সৃষ্ট দানবেই কুপোকাত সরকার। তাই ফেসবুক বন্ধ নয়, সরকারকে এখন ভাবতে হবে কীভাবে এ বিশাল জগৎ মনিটর করা হবে তা নিয়ে। ফেসবুক দিয়ে শুধু গুজব ছড়ায় না, আবার ফেসবুক না থাকলেই যে গুজব ছড়ানো বন্ধ হয়ে যাবে, তাও ঠিক নয়। সাঈদীকে চাঁদে দেখার গুজব ছড়ানো হয়েছিল মসজিদের মাইক থেকে। আশির দশকে একবার গুজবের কারণে দেশ থেকে প্রায় নির্মূল হয়ে গিয়েছিল ঢোল কলমি গাছ। তখন তো ফেসবুক ছিল না, মোবাইলও ছিল না। ফেসবুক যে শুধু নেতিবাচক প্রচারণা, অশ্লীল আক্রমণের অস্ত্র তাই নয়; ফেসবুক এখন প্রতিদিনের বাস্তবতা।

বিশাল ই-কমার্স ব্যবসা হয় ফেসবুকের মাধ্যমে। বিভিন্ন সামাজিক উদ্যোগ বিকশিত হয় ফেসবুকের মাধ্যমে। রক্ত সংগ্রহ, শীতের কাপড় সংগ্রহ, দুস্থ কারও জন্য অর্থ সংগ্রহও করা হয় ফেসবুকের মাধ্যমেই। ছুরি দিয়ে ছিনতাইও হয়, অপারেশনও হয়। এখন ছিনতাই হয় বলেই ছুরি নিষিদ্ধ করে দিলে তো হবে না। প্রযুক্তিকে প্রযুক্তি দিয়েই মোকাবিলার কৌশল বের করতে হবে। সরকারের নিষেধাজ্ঞার পরও মন্ত্রী-এমপিদের অনেকে ফেসবুক ব্যবহার করছেন। সরকারি দলের সংসদ সদস্য জাহিদ আহসান রাসেল ফেসবুক ব্যবহার করার কথা স্বীকার করে ডেইলি স্টারকে বলেছেন, ‘এটা আমার অভ্যাস’। আসলেই, শুধু জাহিদ আহসান রাসেল নয়, ফেসবুক এখন অনেকেরই অভ্যাস। মত প্রকাশের স্বাধীনতা বাংলাদেশের সংবিধানেই নিশ্চিত করা আছে। তবে তা শর্ত সাপেক্ষে। বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষকে সেই শর্ত মেনে চলতে হবে। অশ্লীলতা ছড়ানো, রাষ্ট্র-সরকার বা ব্যক্তির বিরুদ্ধে অপপ্রচার, কাউকে হেয় করা, কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা, উসকানি দেওয়া সবসময়ই অপরাধ; সেটা ফেসবুকে হোক, ধর্মীয় উপাসনাগারের মাইকে হোক, গণমাধ্যমে হোক, সামাজিক মাধ্যমে হোক।

লেবু বেশি চিপলে তিতা হয়ে যায়। ফেসবুক বন্ধ করা নিয়ে সরকারই বাড়াবাড়ি করে ফেলেছে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ফেসবুক বন্ধ রাখার প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করে খোলা চিঠি লিখেছেন। যারা বিকল্প পথে ফেসবুক ব্যবহার করছেন তাদের আইডি হ্যাক হওয়ার ভয় দেখিয়েছেন। নজরদারিতে রাখা হয়েছে বলে হুমকি দিয়েছেন। সরকার শুধু হুমকি দিয়েই ক্ষান্ত হয়নি, শুরুতে যেমন বলা হয়েছে, তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গুজব ছড়ানো বন্ধ করতে ফেসবুক বন্ধ রাখা হয়েছে। কিন্তু মত প্রকাশের স্বাধীনতা না থাকলেই বরং গুজব বেশি ছড়ায়। সেদিন আমার এক পরিচিত লোক বাসা থেকে বেরোনোর আগে মোবাইলে বিকল্প পথে ফেসবুক ব্যবহারের জন্য ব্যবহার করা ভিপিএন আনইনস্টল করছিলেন। কেন জানতে চাইতেই বললেন, রাস্তায় নাকি পুলিশ লোকজনকে ধরে তার মোবাইলে ভিপিএন আছে কিনা চেক করছে। তাই তিনি ভিপিএন আনইনস্টল করছেন। আবার বাসায় গিয়ে ইনস্টল করে নেবেন। এটা যে নিছকই গুজব, তাতে আমার কোনো সন্দেহ নেই। প্রথম কথা হলো ভিপিএন দিয়ে কেউ ফেসবুক ব্যবহার করছে কিনা, সেটা চেক করে ধরার মতো প্রযুক্তি সক্ষমতা অন্তত আমাদের পুলিশের নেই। তাছাড়া সরকার ফেসবুক বন্ধ করেছে, নিষিদ্ধ তো করেনি। তাই মোবাইলে ভিপিএন থাকাটা বেআইনি নয়। কারও মোবাইলে ভিপিএন থাকলেও পুলিশের তা চেক করার কোনো আইনগত অধিকার নেই। এ গুজব শুনে এক ধরনের আতঙ্ক গ্রাস করেছে আমায়। ছেলেবেলায় আমরা দুটি সামরিক শাসন দেখেছি, জিয়াউর রহমান আর এরশাদের। সামরিক শাসকরা ক্ষমতা নিয়েই মানুষকে ভয় দেখাতে নানা কৌশল ব্যবহার করে। জিয়া-এরশাদের আমলের শুরুতে ছেলেদের বড় চুল থাকলে কেটে দেওয়া, মেয়েদের পেট খোলা থাকলে তাতে আলকাতরা লাগিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি। ছেলেবেলায় শোনা সেই গুজবের মতোই এ গুজবও আমাকে আতঙ্কিত করেছে।

ফেসবুক নিয়ে সরকার খুব সিরিয়াস। মনে হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, দেশের উন্নয়ন, সবকিছু নির্ভর করছে ফেসবুকের ওপর। অবস্থা এমন যে ভবিষ্যতে যদি পরীক্ষায় প্রশ্ন আসে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ফেসবুক বন্ধ রাখার উপকারিতা ব্যাখ্যা কর, অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। সরকারের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে ফেসবুকের দুই প্রতিনিধি এসেছিলেন। তাদের সঙ্গে বৈঠকে মন্ত্রিসভার তিন সদস্যসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। আমরা আশা করেছিলাম, এ বৈঠকের পরই সরকার ফেসবুক খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানাবেন। কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ফেসবুক খোলা হবে কি হবে না, সে সিদ্ধান্ত শিগগিরই। এখন মনে হচ্ছে ফেসবুকের ওপর সরকারের নিষেধাজ্ঞা শেষ পর্যন্ত বিএনপির অবরোধের পরিণতি পাবে। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের বর্ষপূর্তিতে ৯৩ দিন নিজে গুলশানের অফিসে আর সারা দেশকে আতঙ্কে অবরুদ্ধ রেখে বেগম খালেদা জিয়া কোনো ঘোষণা ছাড়াই বাসায় ফিরে গিয়েছিলেন। আনুষ্ঠানিকভাবে অবরোধ প্রত্যাহারের সুযোগও পাননি। সরকার গত ১৮ নভেম্বর থেকে ফেসবুক বন্ধ রেখেছে। কিন্তু সেদিন থেকেই কিছু লোক প্রক্সি সার্ভার ব্যবহার করে বিকল্প পথে ফেসবুক ব্যবহার করছে। আমি একদিন পর থেকে ব্যবহার করছি। প্রতিদিনই বিকল্প পথে ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ছে। সরকার অনেক হুমকি দিয়েও মানুষকে আটকাতে পারছে না। এমন একটা সময় আসবে, কেউই আর সরকারের নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা করবে না। ফেসবুক খুলে দেওয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়ার সুযোগই হয়তো পাবেন না প্রিয় অভিনেত্রী, প্রিয় নেত্রী, প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।

পেটভরা ভাত থাকলেও মানুষ সন্তুষ্ট হয় না। মানুষ মত প্রকাশের স্বাধীনতা চায়। ফেসবুক বন্ধ করার পর ফেসবুকেই একটি গল্প পড়েছি। সেটা দিয়েই শেষ করছি আজকের লেখা। বার্লিন দেয়াল পতনের আগে পূর্ব জার্মানি থেকে একটি কুকুর কোনোরকমে পালিয়ে পশ্চিম জার্মানি চলে গেল। স্বগোত্রীয়রা তাকে বরণ করে ভালো ভালো খাবার, হাড়, মাংস দিল। পূর্ব জার্মানির কুকুরটি বলল, ভালো খাবার ওপাড়েও আছে। আমি খাবারের অভাবে আসিনি। আমি এসেছি একটু প্রাণ খুলে ঘেউ ঘেউ করতে। ঘেউ ঘেউ ঘেউ।

            লেখক : সাংবাদিক।

              [email protected]

সর্বশেষ খবর