বৃহস্পতিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

জাপানি নাগরিক হত্যা তদন্ত

অযথা তীর ছোড়া নয় চাই লক্ষ্য ভেদ

জাপানি নাগরিক হোশি কোনিও হত্যাকাণ্ডের তদন্ত নতুন দিকে মোড় নিয়েছে। যত দোষ নন্দ ঘোষ তত্ত্বের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়ে এ ঘটনার পর সন্দেহের তীর সরকারের প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের দিকে ছোড়া হয়। কিন্তু পুলিশের হাতে আটক মাসুদ রানা নামের এক জেএমবি কমান্ডারের স্বীকারোক্তি ফাঁকা মাঠে তলোয়ার ঘোরানোর হয়রানি থেকে পুলিশকে মুক্তি দিয়েছে। নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবির পীরগাছা কাউনিয়া ইউনিটের কমান্ডার হিসেবে কথিত মাসুদ রানা গত সোমবার দেওয়া স্বীকারোক্তিতে জাপানি নাগরিক হোশি কোনিও এবং মাজারের খাদেম রহমত আলীকে জবাই করে হত্যা এবং বাহাই সম্প্রদায়ের এক নেতার হত্যা অপচেষ্টার সঙ্গে জড়িত থাকার স্বীকারোক্তি দেন। রংপুরের পীরগাছা উপজেলার কল্যাণী ইউনিয়নের পশুয়া টাঙ্গাইলপাড়া থেকে ৩ ডিসেম্বর মাসুদ রানাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। রানার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী তার বাড়ির পুকুর থেকে প্লাস্টিকের বস্তায় হাতবোমা তৈরির ৫৪টি লোহার কৌটা ও তিনটি ধারালো বড় ছোরা উদ্ধার করা হয়। জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শফিউল আলমের আদালতে দুটি হত্যাকাণ্ড ও একটি হত্যা প্রচেষ্টায় জড়িত থাকার স্বীকারোক্তি দিয়ে জবানবন্দি দেন মাসুদ রানা। জবানবন্দি অনুযায়ী ৩ অক্টোবর সকালে কাউনিয়া উপজেলার আলুটারি গ্রামে জাপানি নাগরিক হোশি কোনিওকে লক্ষ্য করে তিনটি গুলি করেন মাসুদ রানা। কাউনিয়ায় মাজার শরিফের খাদেম রহমত আলীকে কুপিয়ে ও গলাকেটে হত্যার ঘটনায়ও জড়িত ছিলেন তিনি। ৮ নভেম্বর রংপুরের আর কে রোডে নিজ বাড়ির সামনে বাহাই সম্প্রদায়ের নেতা ও রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিচালকের ব্যক্তিগত সহকারী রুহুল আমিনকে গুলি করে মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যায় তিন দুর্বৃত্ত। মাসুদ রানা এ ঘটনায়ও জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। পর পর দুই বিদেশির হত্যাকাণ্ড বাংলাদেশ সম্পর্কে বহির্বিশ্বে নেতিবাচক ধারণার সৃষ্টি করে। বেশ কিছু পশ্চিমা দেশ তাদের নাগরিকদের বাংলাদেশ সফরে সতর্কাবস্থা জারি করে। সন্দেহের বাতাবরণ দেশের রাজনীতির অসুস্থ পরিবেশকে আরও অসুস্থ করে তোলে। হোশি কোনিও হত্যার তদন্তের মোড় সে বিভ্রান্তি থেকে জাতিকে আপাতত মুক্তি দিয়েছে।

সর্বশেষ খবর