বৃহস্পতিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা
ইতিহাস

মুবারকের রাজত্ব

মুবারক রাজত্ব শুরু করে জনপ্রিয়তা অর্জন করার দিকে মনোযোগ দিলেন। তার পিতা যেসব আইন-কানুন প্রবর্তন করেছিলেন, তিনি সেগুলো নাকচ করে দিলেন। ১৩১৭ খ্রিস্টাব্দে তিনি নিজেই স্বাধীনতাকামী দেবিগিরির রাজা হরপালের বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রা করে তাকে পরাস্ত করেন। এর পর তিনি সম্পূর্ণরূপে আমোদ-প্রমোদ ও বিলাসে গা ঢেলে দিলেন এবং খসরু খান নামে একজন নিম্নশ্রেণির হিন্দু ধর্মান্তর গ্রহণকারীর হাতে রাজ্যের শাসনভাব অর্পণ করলেন। দাক্ষিণাত্যের শাসনকর্তা খসরু খান দিলি­র মসনদ অধিকার করতে চেয়েছিল। ১৩২০ খ্রিস্টাব্দে সুলতানকে হত্যা করে তিনি দিলি­র সিংহাসন লাভ করেন। কিন্তু সুলতান খসরু খান শিগগিরই তার ক্ষমতার অপব্যবহার করতে লাগলেন। তার কার্যের দ্বারা বিক্ষুব্ধ অভিজাত সম্প্রদায় শাসনকার্য হতে ক্রমে দূরে সরে পড়ল। অভিজাতদের মধ্যে খ্যাতিসম্পন্ন এবং পাঞ্জাবের শাসনকর্তা গাজী মালিক এক বিরাট সেন্যবাহিনী নিয়ে দিলি­ আক্রমণ করলেন। ১৩২০ খ্রিস্টাব্দে তিনি খসরু খানকে পরাজিত করে তার শিরশ্ছেদ করলেন। খলজী বংশের কোনো ব্যক্তিকে সিংহাসনে বসানোর জন্য তিনি অভিজাত সম্প্রদায়কে অনুরোধ করলেন। কিন্তু সে বংশের কেউ জীবিত না থাকায় অভিজাত সম্প্রদায় গাজী মালিককেই সিংহাসনে বসালেন। গাজী মালিকের সিংহাসন লাভের সঙ্গে সঙ্গে খলজী বংশের পতন হয়। এ বংশ সম্পর্কে ড. ত্রিপাঠি বলেন, ‘রাজ্যাধিকারের ব্যাপারে খলজীরা দুটি অবদান রেখে গিয়েছেন। তারা দেখালেন যে, রাজ্যাধিকার কোনো ক্ষমতাসীন দলের একচেটিয়া অধিকার নয় যাদের ক্ষমতা এবং সামর্থ্য আছে তারাই মালিক হতে পারেন। খলজীরা আরও প্রমাণ করলেন যে, কোনো বিশেষ ধর্মীয় সমর্থন ছাড়াও রাজক্ষমতা অটুট থাকতে পারে এবং মোল্লা সম্প্রদায়ের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে রাজার দৃষ্টিভঙ্গি সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র। এটিই ছিল আলাউদ্দীনের সর্বশ্রেষ্ঠ অবদান।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর