শুক্রবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

বিদেশে অর্থ পাচার

দেশের অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে

গত এক দশকেই বাংলাদেশ থেকে চার লাখ কোটি টাকারও বেশি পাচার হয়েছে। যে অর্থ দেশে শিল্পকলকারখানা স্থাপনে ব্যয় করা হলে অন্তত ২৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হতো বলে ধারণা করা হয়। হতদরিদ্র অবস্থা থেকে মুক্তি পেত কয়েক লাখ মানুষ। যেসব উন্নয়নশীল দেশ থেকে নানা কৌশলে অর্থ বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে, বাংলাদেশ তার মধ্যে অন্যতম। দক্ষিণ এশিয়ায় এ ক্ষেত্রে ভারতের পরেই বাংলাদেশের স্থান। বিশ্ব পরিসরে অর্থ পাচার হয়ে যাচ্ছে এমন ১৫০টি উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে ২৬তম অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। শুধু ২০১৩ সালেই বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়েছে ৭৭ হাজার কোটি টাকা। যা জাতীয় বাজেটের ১৫ শতাংশ। আর গত এক দশকে পাচার হয়েছে ৪ লাখ ৩ হাজার ৫৬২ কোটি টাকা। অর্থ পাচার নিয়ে জরিপকারী ওয়াশিংটনভিত্তিক সংস্থা গ্লোবাল ফিন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটির ২০১৩ সালের প্রতিবেদনে এ তথ্য দেওয়া হয়েছে। গত বুধবার প্রকাশিত ওই জরিপের তথ্যমতে, অর্থ পাচারের শীর্ষে রয়েছে চীন। এরপর রাশিয়া, মেক্সিকো। বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ ভারত রয়েছে চতুর্থ অবস্থানে, আর পঞ্চম মালয়েশিয়া। অর্থ পাচারকারী শীর্ষ ২০ দেশের ২০তম অবস্থানে রয়েছে পোল্যান্ডের নাম। আর বাংলাদেশের নাম উঠে এসেছে ২৬তম অবস্থানে। মাত্র এক বছর আগেও ১৫০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৪৭তম। দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোর মধ্যে নেপাল ৮৬তম, শ্রীলঙ্কা ৫৩তম, পাকিস্তান ১০৯তম এবং ভুটানের নাম রয়েছে ১৩২তম অবস্থানে। বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশগুলো এমনিতেই দারিদ্র্যতার শিকার। বিপুল অর্থ পাচার হয়ে যাওয়ায় দারিদ্র্য বিমোচনের সুযোগ ব্যাহত হচ্ছে। অর্থনীতিবিদদের মতে, দেশে বিনিয়োগের পরিবেশ না থাকায় অর্থ পাচার হয়ে যাচ্ছে। পাচারের ক্ষেত্রে আন্ডার ইনভয়েসিং ও ওভার ইনভয়েসিংকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।  বিদেশে  অর্থ পাচারের ঘটনা যে কোনো দেশের জন্য উদ্বেগজনক ঘটনা। যারা এ অপকর্মে জড়িত তাদের সামাল দিতে সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে। নিতে হবে পাচারবিরোধী কার্যকর পদক্ষেপ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর