শুক্রবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

অবৈধ বিলবোর্ডে আত্মপ্রচার

সরকারি দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে

সিটি করপোরেশনের অবৈধ বিলবোর্ড উচ্ছেদ অভিযানকে বুড়ো আঙুল দেখানোর চেষ্টা করছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা। বিজয়ের মাস ঘিরে রাজধানীতে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে হাজার হাজার বিলবোর্ড। বাঙালি জাতির মহান মুক্তিযুদ্ধের গৌরবান্বিত বিজয়কে অভিনন্দিত করার নামে বিলবোর্ডগুলোতে কার্যত আত্নপ্রচারের সুযোগ নেওয়া হচ্ছে। মন্ত্রী-এমপিসহ সরকারি দলের নেতা তথা বড় ভাইদের খুশি করার কসরতও চলছে সমানভাবে। অবৈধ বিলবোর্ড টাঙানো হয়েছে কোনো কোনো কাউন্সিলরের নামেও। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন মেয়রের নির্দেশে যখন চলছে অবৈধ বিলবোর্ড উচ্ছেদ অভিযান তখন কাউন্সিলরদের কেউ কেউ নিজেরাই অবৈধ বিলবোর্ড বসিয়ে সে অভিযানকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। গত মাসে যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীকে সামনে রেখে অসংখ্য বিলবোর্ড বসানো হয় নগরীতে। এলাকার চাঁদাবাজরা নিজেদের আত্নপ্রচারের কৌশল হিসেবে বিলবোর্ডে নিজেদের উপস্থাপনের চেষ্টা চালান এমন অভিযোগ ওপেন সিক্রেট। অতি সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীকে বিশ্বের ১৩তম চিন্তাবিদ আখ্যায়িত করে চলছে বিলবোর্ড স্থাপনের মচ্ছব। ভুল বানান আর বাক্যের মাধ্যমে আত্মপ্রচারকারীরা নিজেদের প্রকৃত পরিচয়ও জানিয়ে দিচ্ছেন নগরবাসীকে। বিলবোর্ডের মাধ্যমে অসংলগ্নভাবে সরকার ও সরকারি নেতানেত্রীদের প্রশংসা প্রচার জনমনে বাজে ধারণার সৃষ্টি করছে। সরকারি দল এবং অঙ্গ সংগঠনগুলো মেধাহীন পেশীজীবীদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে কিনা এমন প্রশ্নও জনমনে উঁকি দিচ্ছে। সম্প্রতি সরকারের একজন প্রভাবশালী মন্ত্রী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিজ দলের নেতা-কর্মীদের আত্মপ্রচারের তীব্র সমালোচনা করেছেন। বিজয়ের মাসে আত্নপ্রচারকারীরা লাগামহীন চাঁদাবাজিতে লিপ্ত হচ্ছে এমন অভিযোগও ওপেন সিক্রেট। সরকারি দলের নামে ব্যাঙের ছাতার মতো সংগঠন গজিয়ে তোলার ঘটনা যেমন জনমনে বিরূপ ধারণার সৃষ্টি করছে তেমন তাদের চাঁদাবাজি এবং আত্মপ্রচার জনমনে সরকার এবং সরকারি দল সম্পর্কে ভুল বার্তা পৌঁছে দিচ্ছে।  আমরা আশা করব নিজেদের সুনামের স্বার্থে সরকারি দল চাঁদাবাজ ও প্রচারবাজ চক্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে।

সর্বশেষ খবর