বেছে বেছে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে হামলার টার্গেট হিসেবে বেছে নিয়েছে জঙ্গিবাদী সন্ত্রাসীরা। মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা ও পীরের দরগাহ কোনো স্থাপনাই তাদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না। ইসলামে মসজিদের মর্যাদা আল্লাহর ঘর হিসেবে। সেখানেও বোমাবাজি করার ধৃষ্টতা দেখাচ্ছে জঙ্গি নামের বকধার্মিকরা। শুধু বাংলাদেশ নয়, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ইরাক, নাইজেরিয়াসহ বিভিন্ন দেশে মসজিদে বোমা হামলা জঙ্গিবাদীদের রুটিন ওয়ার্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত দেড় মাসে বাংলাদেশে অন্তত ১১টি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি ঘটনার সঙ্গে জঙ্গি সংগঠন জেএমবির সংশ্লিষ্টতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেলেও অন্যগুলো সম্পর্কে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এখনো অন্ধকারে। দুনিয়ার সব ধর্মই শান্তির কথা বলে। ভিন্ন ধর্মের প্রতি সহিষ্ণু মনোভাব প্রদর্শনের শিক্ষা দিয়েছে পৃথিবীর প্রতিটি ধর্মমত। ফলে ধর্মীয় স্থাপনায় যারা হামলা চালায় তাদের পরিচয় একটাই, তারা সন্ত্রাসী। কোনো ধর্মের সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ত করা প্রকারান্তরে সন্ত্রাসীদের অসৎ উদ্দেশ্যকে সফল করার শামিল। জঙ্গিবাদ বা ধর্মীয় সন্ত্রাসবাদ এ মুহূর্তে একটি বিশ্বজনীন সমস্যা। দুনিয়ার কোনো জাতিই এই আপদের হাত থেকে মুক্ত নয়। বাংলাদেশ বরং জঙ্গিবাদের থাবা নিয়ন্ত্রণে দৃষ্টিগ্রাহ্য সাফল্য অর্জন করেছে। এ আপদকে প্রতিহত করতে প্রতিটি ধর্মের শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। আমরা এ কলামে বার বার বলেছি, শান্তির ধর্ম ইসলামের নামে জঙ্গিবাদীরা অপতত্পরতা চালালেও এ ধর্মের সঙ্গে তাদের দূরতম সম্পর্কও নেই। যারা মসজিদে হামলা চালিয়ে নিরপরাধ মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয় তারা ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেও গুরুতর অপরাধ বা কবিরা গুনাহে জড়িত। এ অপশক্তিকে রুখতে দেশের আলেম-ওলামাদের এগিয়ে আসতে হবে। সন্ত্রাস ও অকারণ রক্তপাতের সঙ্গে যারা জড়িত পারলৌকিক জীবনে আল্লাহর পক্ষ থেকে তাদের কী কঠোর সাজার সম্মুখীন হতে হবে সে বিষয়টি স্পষ্ট করতে হবে। কোরআন হাদিসের অপব্যাখ্যা করে যারা স্বল্পশিক্ষিত ধর্মভীরু যুবকদের সন্ত্রাসবাদে জড়িত করছে তারা যে বকধার্মিক তা প্রমাণেও সন্ত্রাস সম্পর্কে কোরআন হাদিসের শিক্ষাগুলো ব্যাপকভাবে প্রচারের ব্যবস্থা করা উচিত।