মঙ্গলবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

ফুটবলের উন্নতি কোন পথে

কলসিন্দুরের মেয়েদের কাছ থেকে শিক্ষা নিন

বাংলাদেশের মেয়েরা হিমালয় জয় করেছে। অনূর্ধ্ব-১৪ জাতীয় মহিলা ফুটবল দলের আঞ্চলিক শিরোপা জয়কে এভাবেই মূল্যায়ন করা হয়েছে বিভিন্ন প্রচারমাধ্যমে। আঞ্চলিক টুর্নামেন্টের সব খেলায় বাংলাদেশের মেয়েরা দাপট দেখিয়ে নিজেদের ফাইনালে উত্তীর্ণ করতে সক্ষম হয়। প্রথম ম্যাচে তারা ১৬-০ গোলে হারায় ভুটানকে, পরের ম্যাচে শক্তিশালী ভারতের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করে সেমিফাইনালে টুর্নামেন্টের ফেবারিট দল ইরানকে ২-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালে উত্তীর্ণ হয়।  অন্যদিকে ভারতকে ১-০ গোলে হারিয়ে শিরোপার লড়াইয়ে বাংলাদেশের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আবির্ভূত হয় নেপাল। আট মাস আগে এ বছরের ২৫ এপ্রিল কাঠমান্ডুতে দুই দলের ফাইনাল হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দুই পক্ষ যখন খেলার জন্য মাঠে নামবে ঠিক সেই মুহূর্তে ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হানে হিমালয়কন্যা নেপালে। ফলে খেলা পরিত্যক্ত হয়। শেষ পর্যন্ত গত রবিবার দুই দলের শিরোপা লড়াইয়ের তারিখ নির্ধারণ হয়। বাংলাদেশের মেয়েরা দাপটের সঙ্গে খেলে হারিয়ে দেয় স্বাগতিক নেপাল দলকে। ১-০ গোলে জিতলেও খেলায় বাংলাদেশের প্রাধান্য ছিল সুস্পষ্ট। ফুটবলের র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশ পেছনের দেশগুলোর একটি। তার পরও বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৪ মহিলা দলের জয় তাত্পর্যের দাবিদার। ফুটবলে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে হলে কোন পথে চলতে হবে সে পথের সন্ধান দিয়েছে অনূর্ধ্ব-১৪ দলের সাফল্য। নামে জাতীয় দল হলেও অনূর্ধ্ব-১৪ দলের ১০ জনই প্রত্যন্ত এক গ্রামের। গারো পাহাড়ের পাদদেশের কলসিন্দুরের মেয়েরাই দেখিয়ে দিয়েছে ঠিক পথে এগোলে কতটা সাফল্য অর্জন করা যায়। কলসিন্দুরের মেয়েদের এক স্কুলের দলটি নিবিড় প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্রকারান্তরে যেভাবে জাতীয় দল হয়ে ওঠার কৃতিত্ব দেখিয়েছে তা থেকে দেশের ক্রীড়া সংগঠকরা শিক্ষা নিতে পারেন। ফুটবলের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে চাইলে ফুটবলকে গ্রাম-গ্রামান্তরেও ছড়িয়ে দিতে হবে। গড়ে তুলতে হবে স্কুল ও গ্রাম-মহল্লা ভিত্তিক দল। এসব দল থেকে উঠে আসা প্রতিভাবানদের নিয়ে গঠন করতে হবে জাতীয়ভিত্তিক দল। এগিয়ে যাওয়ার সঠিক পথ বেছে নিলে শুধু আঞ্চলিক ক্ষেত্রে নয়, আরও বড় পর‌্যায়েও সাফল্য দেখাতে সক্ষম হবে বাংলাদেশের ফুটবল। এ ব্যাপারে কলসিন্দুরের মেয়েরা অনুকরণীয় বলে বিবেচিত হতে পারে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর