সোমবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই

জনসচেতনতা গড়ে তুলতে হবে

দেশের বিভিন্ন ধর্মীয় স্থাপনায় একের পর এক জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটছে। উদারপন্থি দেশ হিসেবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিতে কালিমা লেপনের চেষ্টা চালাচ্ছে উগ্রপন্থার অনুসারীরা। শুক্রবার রাজশাহীর বাগমারায় কাদিয়ানি সম্প্রদায়ের মসজিদে তারা আত্মঘাতী হামলা চালিয়েছে। এ হামলায় নিহত হয়েছে বোমাবাজ এক যুবক। শিশুসহ আহত হয়েছে বেশ কয়েকজন। এ নিয়ে গত চার মাসে ভিন্নমতাবলম্বী ধর্মীয় গোষ্ঠী ও প্রতিষ্ঠানের ওপর ১৯টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। আক্রান্ত হয়েছে হিন্দুদের মন্দির, শিয়া এবং কাদিয়ানি সম্প্রদায়ের মসজিদ, তাজিয়া মিছিল, খ্রিস্টান ধর্মযাজক, বাহাই সম্প্রদায়ের লোকেরা। বাগমারার ঘটনার দায় স্বীকার করেছে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আইএস। একের পর এক জঙ্গি হামলা বাংলাদেশের জননিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে। বহির্বিশ্বে বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি করছে। জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় বাংলাদেশে সাফল্য প্রশ্নবিদ্ধ করারও চেষ্টা চলছে এসব হামলার মাধ্যমে। ঐতিহ্যগতভাবে বাংলাদেশের মানুষ উদার মানসিকতার অধিকারী। ধর্ম বা রাজনীতি কোনো ক্ষেত্রেই চরমপন্থা এদেশের মানুষের সমর্থন পায়নি। ইসলামে চরমপন্থাকে নিরুত্সাহিত করা হয়েছে ও সন্ত্রাস এবং মানুষ হত্যাকে কবিরা গুনাহ হিসেবে অভিহিত করে এ প্রবণতা থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দুনিয়াজুড়ে জঙ্গিবাদের যে উত্থান ঘটেছে তার ছিটেফোঁটা বাংলাদেশকেও কলঙ্কিত করছে। আন্তর্জাতিক অপশক্তি বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ বিস্তারে অর্থ জুগিয়ে চলছে এমনটিও সন্দেহ করা হয়। উগ্রবাদের সঙ্গে ইসলামের যেহেতু দূরতম সম্পর্ক নেই, সেহেতু জঙ্গিবাদ নামের অশুভ দৈত্যকে পরাস্ত করতে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। ইসলামের নামে যারা জঙ্গিবাদের অপচর্চা করছে তারা যে শান্তির ধর্ম ইসলামের কেউ নয়, এ বিষয়ে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে জনসচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। দেশের আলেম সমাজ বিশেষত মসজিদের ইমাম এবং খতিবদের এ কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করতে হবে। পাশাপাশি জঙ্গি অর্থায়ন বন্ধ এবং নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা জোরদারেও উদ্যোগ নিতে হবে।

সর্বশেষ খবর